আজ খবর ডেস্ক:
ওজন কমান! পুজো আসছে… পুজো মানেই উৎসব। এই আবহে রজকাল একঘেয়ে চেহারায় বদল আনতে কে না চায়? চকচকে ত্বক, ফুরফুরে চুল, পছন্দের পোশাকের সঙ্গে মানানসই ফিগার কিন্তু মাস্ট। আর আজকের দিনে
স্লিম-ট্রিম হতে চাই আমরা সবাই। ব্যস্ততার ফাঁকে তার জন্য হাজারো কসরৎ!
জানেন তো দেহের ওজন কমা বাড়ায় দেহের মেটাবলিজম বড় ভূমিকা রাখে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে শুধু খাবারের পরিমাণের দিকে নজর না দিয়ে এই বিষয়টির ওপরেও নজর দিতে হবে। নচেৎ মিলতে পারে বিরূপ প্রভাব। ওজন কমাতে মেটাবলিজম (Metabolism)-এর অবদান রয়েছে। অর্থাৎ মেটাবলিজমই শরীরের ক্যালোরি পুড়িয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। শরীরের কতটা ক্যালোরি (Calorie) পুড়ছে, তা মেটাবলিজমের হারের উপর নির্ভর করে। এছাড়া রক্তচাপ, কোলস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতেও বড়ো ভূমিকা নেয় মেটাবলিজম। এই মেটাবলিজম যত বাড়বে, শরীর তত বেশি ক্যালোরি ঝরাবে। জানেন কি, আপনার রোজকার অভ্যেস মেটাবলিজমের হার কমিয়ে দিতে পারে?
এক ঝলকে দেখে নিন সেই উপায়গুলো….
১)নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে।
অনেকেরই ভুল ধারণা যে, কম খেলেই তাড়াতাড়ি ওজন কমানো যায়। কিন্তু আসল বিষয়টা জানলে অনেকেই অবাক হবেন যে, প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে কম খাওয়াদাওয়া করলে শরীরে কম মাত্রায় ক্যালোরি পৌঁছায়। তাতে মেটাবলিজমও কমে যেতে থাকে। যদিও ওজন কমানোর জন্য যে পরিমাণ ক্যালোরি ঝরানো যাবে, তার থেকে কম ক্যালোরির খাওয়ার খেতে হয়। কিন্তু তার চেয়ে কম খেলেই হতে পারে বিপদ! কারণ তাতে শরীরে খাদ্যের অভাব দেখা দিতে পারে। তার থেকেই শরীরের ক্যালোরি ঝরানোর মাত্রাও কমে যাবে।
২) দীর্ঘক্ষণএক জায়গায় বসে বসে কাজ করবেন না।
করোনাকালে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের দৌলতে দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ করতে হচ্ছে প্রায় সকলকেই। আগে প্রাত্যহিক দৌড়ঝাপও শরীরের ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করত। কিন্তু এখন ঘর থেকে বেরোনোও অনেকটাই বন্ধ ! তাতে শরীরের উপর বাড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। এই ধরণের কাজ কে নন-এক্সারসাইজ অ্যাক্টিভিটি থার্মোজেনেসিস (NEAT) বলা হয়।
২. প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অথবা ওজন কমাতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া আবশ্যক। কারণ প্রোটিন এমন একটা উপাদান, যা অনেকটা সময় পেট ভর্তি রাখে এবং ক্যালোরি ঝরানোর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাতে খাবার হজম হওয়ার সময় মেটাবলিজমও বেড়ে যায়। যাকে খাবারের থার্মিক এফেক্ট (TEF) বলা হয়। আর প্রোটিনের থার্মিক এফেক্ট ফ্যাট অথবা কার্বোহাইড্রেটের তুলনায় অনেকটা বেশি হওয়াতে শুধুমাত্রা প্রোটিন খেলেই মেটাবলিজম অন্তত ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম দরকার :
শরীর সুস্থ রাখতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। কম ঘুম বা একেবারেই না ঘুমোনো কমিয়ে দিতে পারে দেহের মেটাবোলিজমের হার। তাতেই বাড়তে পারে ওজন।
৪. রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট থাকুক ডায়েটে।
রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট জটিল কার্বোহাইড্রেটের থেকে একেবারেই আলাদা। এটা খুব সহজেই হজম হয়ে যায়। সেইসঙ্গে রক্তে শর্করার পরিমাণও বাড়িয়ে দেয়। তাই অনেক সময় প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট খেলে মেটাবলিজম কমে যায়।
৫. কড়া ডায়েট দরকার নেই।
নিয়মিত শরীরচর্চা করার সময় অনেকই বহুবিধ ডায়েট চার্ট মেনে চলেন। তাতে বাদ পড়ে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বহু উপাদান। তাতেও ঘটতে পারে বিপরীত প্রতিক্রিয়া। অর্থাৎ ডায়েট করে ওজন কমাতে গিয়ে মেটাবলিজম কমে বেড়ে যেতে পারে ওজন।
তাই সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন। আনন্দে কাটুক আপনার পুজো।