এবার রাখি পালন ঘিরে দলের তোপের মুখে শুভেন্দু অধিকারী। গত ৩ আগষ্ট রাখি পূর্ণিমার দিন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে রাখি উৎসব পালন করেন শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, নিমতৌড়ি, চন্ডিপুর, ময়না, হলদিয়া, কাঁথি, বড়মা এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বুকে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি ঝুলিয়ে মানুষের হাতে রাখি পরিয়ে দেন শুভেন্দু অনুগামীরা। পরে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মিষ্টি এবং স্যানিটাইজার।
তৃণমূল কংগ্রেসের অলিখিত নিয়ম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও ছবি বা প্ল্যাকার্ড নিয়ে কোনরকম প্রচার চালানো যাবে না। তাই এবার বিতরকের কেন্দ্রবিন্দুতে “শুভেন্দু রাখি”।
ক
একুশে জুলাই এর পরপরইতৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক স্তরে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। দলের তরফে তুলে দেওয়া হয়েছে জেলা পর্যবেক্ষক পদ। তারপরেই দলের সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে অনুপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত কিশোরের উপস্থিতিতে এই বৈঠকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেও শুভেন্দুর না থাকা নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তি তৈরি হয় তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে।
এদিকে সাংগঠনিক রদবদল এর পরেই “আমরা শুভেন্দুর অনুগামী” এই শিরোনামে নিজেদের ক্ষোভ ব্যক্ত করতে থাকেন পূর্ব মেদিনীপুরের যুব তৃণমূল কর্মীরা। শুভেন্দু অনুগামীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ও ক্ষোভের ঝড় ওঠে। তাদের দাদাকে কলকাতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে এমন অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে ওই গ্রুপ। সময় মত জবাব দেবে মেদিনীপুর এমন স্লোগান ওঠে শুভেন্দু অনুগামীদের মধ্যে।
এর মধ্যেই এই রাখি বিতর্ক। সূত্রের খবর, শুভেন্দু অধিকারীর ছবি বুকে ঝুলিয়ে কারা কারা রাখি বিতরণ করেছেন তাদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে দলের উচ্চ নেতৃত্তের পক্ষ থেকে। এটাকে সরাসরি দল বিরোধী কাজ বলে মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেসের একটা অংশ। নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র এবার কি নতুন কিছু ভাবছেন? বিক্ষুব্ধ অনুগামীদের নিয়ে অন্যরকম চিন্তাভাবনা কি রয়েছে তাঁর মাথায়? দক্ষিণবঙ্গের একটা বড় অংশের তৃণমূল যুব কর্মীদের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারীর জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। এই শুভ্যেন্দুর বিরুদ্ধে সরাসরি কোন পদক্ষেপ নেওয়ার আগে যথেষ্ট ভাবনা চিন্তা করতে হবে এমনটাই মনে করছেন রাজ্যের শাসকদলের বেশ কিছু সিনিয়র নেতা। আর যাকে ঘিরে এত বিতর্ক, এত আলোচনা, সেই শুভেন্দু অধিকারী কোন মন্তব্যে নারাজ।