আজ খবর ডেস্ক- বাংলার সেই ঐতিহ্য নেই, নেই গুরুত্ব। তা না হলে বাঙালি দুর্গাপূজার সময় হিন্দি গানের স্রোতে ভাসতে পারে! পাড়ার জলসায় সানন্দে হিন্দি গান গাওয়ার অনুরোধ জানাতে পারে? বাংলার ইতিহাস এবং ঐতিহ্য সবটুকুই হারিয়ে বাঙালির গর্ব বোধ আজ বাংলা শূন্য। এমনটাই কার্যত মনে করছে কলকাতার সংগঠন বাংলা পক্ষ।

বিপুলসংখ্যক সমর্থকের হাত ধরে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে দূর্গা পূজা চলাকালীন বাংলা গান চালিয়ে বাংলা সমাজকে বাংলার স্বীকৃতি ও অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাল এই সংগঠন। বাংলায় আগ্রাসন মনোভাব চলছে পাশাপাশি মানুষ স্বীকৃতি দিচ্ছে বাইরের ভাষাকে। হিন্দি বা যাবতীয় অন্যান্য ভাষাকে দূরে ঠেলে নিজের মাতৃভাষা বাংলাকে কাছে টেনে নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে এই সংস্থা।

এই প্রচেষ্টার পাশাপাশি বাঁকুড়ার প্রত্যেকটি পুজো মণ্ডপে বাংলা গান বাজানোর আর্জি জানিয়ে নিজেদের কর্মকাণ্ডে একধাপ এগিয়ে এল বাংলা পক্ষ। বাঁকুড়া জেলার সংগঠনের তরফ থেকে এই প্রচেষ্টা চালান তাঁরা। পাশাপাশি তাঁরা মনে করেন বাংলা গানের যে ঐতিহ্য সেই ঐতিহ্য হয়তো অন্য কোনও ভাষায় নেই। এছাড়াও তিনি বলেন হিন্দি আগ্রাসনের ভাষা এবং কৃত্রিমভাবে তৈরি হয়েছে।

বাংলা পক্ষের পরিষদের সদস্য, কৌশিক মাইতি জানান, বাংলার কাজ, বাংলার জাতি, বাংলা সংস্কৃতি বাংলার পুঁজি ও বাংলার ব্যবসা এ সব কিছুকেই প্রাধান্য দিতে মরিয়া বাংলা পক্ষ। পাশাপাশি কৌশিক মাইতি সরব হয়েছেন যে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাকে ছাটাই করে হিন্দির আবির্ভাব ঘটানো হয় সেই দিকেই। তাঁর বক্তব্য বাংলা সিনেমায় প্রাইম টাইমে বাংলা ছায়াছবি দেখানো হয় না, এফএম- এ বাংলা গান বাজে না আগের মত, তাই বাংলা ভাষার অধিকারকে দৃঢ় কন্ঠে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, মানুষকে হিন্দি গান শুনতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না বরং হিন্দি গানের প্রলোভনে এই বাংলাকে যে ভুলতে বসেছে বাঙালি, সেই দিকেই চোখে আঙুল দিয়ে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।

গুরুত্ব দিতে হবে বাংলা ব্যান্ডকে, পাশাপাশি একক শিল্পীর গান। যে কোনও প্রকারে বাংলাকে ভুললে চলবে না এগিয়ে আনতে বাংলা সংস্কৃতি এবং বাংলা ভাষা।

পাশাপাশি তিনি হিন্দি সংস্কৃতিকে তোপ দেগে বলেন, বাংলা সত্যজিৎ রায়, হৃত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, ঋতুপর্ণ ঘোষের মাটি। সেই মাটিতে দাঁড়িয়ে দুর্গা পুজোতে হিন্দি মনোভাব পরিচয় পাচ্ছে। কৃত্রিম পুকুর বানিয়ে অন্যান্য রাজ্যে দুর্গা ঠাকুর ভাসান দেওয়া হয় এই অপমান কে দূরে সরিয়ে বাংলা সংস্কৃতিকে কাছে নিয়ে আসতে হবে। বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলা সংস্কৃতিকে তার যোগ্য ও ন্যায্য সম্মান পাইয়ে দেওয়ার কাজে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে বাংলা পক্ষ। এবং এবছর দুর্গাপুজোতে তাঁদের এই মনোভাব আরও ব্যাপক আঁকার পাক সেই লক্ষ্যে নেমেছেন তাঁরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *