করোনা আবহে এই মুহূর্তে রাজ্য জুড়ে লকডাউন জারি না করা থাকলেও, একাধিক করোনাবিধি জারি করা হয়েছে গোটা রাজ্যে। এই বিধির আওতায় রয়েছে রাজ্যের রেস্তোরাঁ ও পানশালা গুলিও। করোনা আবহে দীর্ঘদিন সমস্ত কিছু বন্ধ থাকার ধীরে ধীরে পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে একে একে খোলা হয় রাজ্যের রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলি। তবে সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, করোনাবিধি মেনে রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে সমস্ত রেস্তোরাঁ ও পানশালা।
কিন্তু এবার সেই রেস্তোরাঁ ও পানশালা খোলা রাখা নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অহেতুক জুলুমের অভিযোগ তুললো রাজ্যের রেস্তোরাঁ ও পানশালা সংগঠন।তাঁদের দাবি , করোনা বিধির নাম করে জুলুম চালাচ্ছে পুলিশ। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত রেস্তোরাঁ খোলা রাখার নিয়ম থাকলেও, পুলিশ রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলিকে জোর করে ১০ টার মধ্যে বন্ধ করে দিচ্ছে। ফলে গ্রাহকরা আসতে পারছেন না। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলিকে।তাই এবার পুলিশি দৌরাত্ম্য রুখতে রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হলো রাজ্যের পানশালা ও রেস্তোরাঁ সংগঠন।
গতকাল সাংবাদিক বৈঠকে ‘বঙ্গীয় হোটেল রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড এক্সসাইস লাইসেনসি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্যরা বলেন, রাজ্যকে ৭২ ঘন্টার সময় দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যদি এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে রাস্তায় নেমে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের পানশালা ও রেস্তোরাঁ সংগঠন।
পাশাপাশি পানশালা বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।সংগঠনের বক্তব্য, পুলিশের এই স্বেচ্ছাচারী আচরণের জন্য, ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকা রাজ্যের প্রায় ৫০ লক্ষ ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়ছে। পানশালা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকেও জানানো হয়, পুলিশের এই কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণের জন্য তাদের বিক্রি কমেছে গড়ে ৫০ হাজার টাকা। হিসেব দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রত্যেক পানশালায় গড়ে ৫০ জন কর্মী কাজ করেন, কর্মীদের বেতন হয় গড়ে ৪ হাজার টাকা। মূলত টিপসের ওপরেই চলে ব্যবসা। গত দু’বছরে কর্মীদের বোনাসও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। পানশালার মালিকদের কথায়, ব্যবসা কমলেও কর্মীদের বেতন দেওয়া তো বন্ধ হচ্ছেনা। তাই ৮৫০ জন পানশালার মালিক একযোগে এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন বলে জানানো হয়।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য বসু বলেন, আমাদের দাবি মানা না হলে, মদ বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হবে। দ্রুত ব্যবসায়ীদের দাবি মানতে হবে বলেও জানান তিনি। পুলিশি আচরণ রোখার পাশাপাশি সংগঠনের তরফ থেকে আরও কয়েকটি দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সরকারি তরফ থেকে যেন পানশালা-রেস্তোরাঁ খুলে রাখার সময়সীমা বাড়িয়ে রাত ১২টা অবধি করা হয়। এছাড়া মদ কেনার জন্য আবগারি দপ্তরের পক্ষ থেকে চাপ কমানোর আর্জিও জানান তাঁরা। দাবি করা হয়েছে যেন মদের দাম কমানো হয়। আর তার সাথে পানশালা ও রেস্তোরাঁয় গান বাজনার ক্ষেত্রে নিৰ্দিষ্ট নিয়ম লাগু করার কথাও বলা হয়েছে।