আজ খবর ডেস্ক : বাতাসের হিমেল হাওয়া ইতিমধ্যেই জানান দিতে শুরু করেছে , শীত আসছে। প্রাক শীত পর্বে তাপমাত্রা নামতে থাকার সঙ্গে সঙ্গেই ত্বকে টান ধরতে শুরু করে প্রত্যেকেরই। আর শীত আসতেই আর্দ্রতা হারাতে শুরু করে আমাদের ত্বক। এই সময় ত্বকের আর্দ্রতা কমে যাওয়াতে রুক্ষতা বাড়তে থাকে বহু গুণ। ফলত বেশিরভাগ মানুষেরই ত্বক ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। আর যাদের স্কিন ফ্লেমিং ও এগজিমার মতো সমস্যা রয়েছে, তাদের সেই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তবে জাঁকিয়ে শীত পড়া আগে এখন থেকেই যদি ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়, তবে শীতে ত্বক ফাটা বা ত্বক জনিত সমস্যা থেকে অনেকাংশে রেহাই মেলা সম্ভব। কিন্তু কি ভাবে? আসুন জেনে নেওয়া যাক!
ত্বকের শুষ্কতা কমাতে ত্বক আর্দ্র রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। আর তার জন্য ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার বিকল্প কিছু নেই। তবে যাদের ত্বক এমনিই বেশি শুষ্ক, তাদের অবশ্যই অয়েল বেসড ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। তাতে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করা যায়।এছাড়া ময়েশ্চারাইজার কেনার আগে অবশ্যই দেখে নিন তাতে কি কি উপাদান রয়েছে। কারণ অ্যাভোকাডো অয়েল, মিনারেল অয়েল, প্রিম রোজ অয়েল, আমন্ড অয়েল, শিয়া অয়েল জাতীয় কোনো তেল মেশানো ময়েশ্চারাইজার শীতে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য সব থেকে বেশি উপযোগী।এছাড়া শীতে ত্বকের যত্ন নিতে যে কাজগুলি করতে পারেন ,তা হল –
১. সানস্ক্রিমের ব্যাবহার – সূর্যের রশ্মি ত্বকের অনেক ক্ষতি করে। তাই গরম হোক বা শীত ঋতু বুঝে সব সময়ই উপযুক্ত সানস্ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। তাই বাইরে বেরোনোর অন্তত পক্ষে আধা ঘণ্টা আগে মুখে, হাতে ও শরীরের খোলা স্থানে সানস্ক্রিম ব্যবহার করুন।
২. হাতের যত্ন নিন – আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই মুখের ত্বকের যত্ন নিলেও আলাদা করে হাতের ত্বকের যত্ন নেন না অনেকেই। অথচ একথা জানা দরকার যে, মুখের চেয়েও হাতের ত্বক শীতকালে বেশি শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই এরজন্য হাতে অবশ্যই ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।
৩. মোজা ও গ্লাভসের ব্যাবহার – শীতে মোজা, গ্লাভস কম বেশি সবাই ব্যাবহার করে থাকি। তবে সেক্ষেত্রে যেটা মাথায় রাখতে হবে যে, কোনো কারণে যদি মোজা বা গ্লাভস ভিজে যায়, তবে সেটি আর ব্যবহার করবেন না। কারণ ভেজা মোজা বা গ্লাভস পড়ার কারণে ত্বকে চুলকানি, ফাটা, ফোলা, এমনকি এগজিমার মতো সমস্যারও সৃষ্টি হতে পারে।
৪. পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া – শীতকালে তেষ্টা কম পায়। যেকারণে জলও কম খাওয়া হয়। কিন্তু ত্বকের জন্য তো বটেই, তবে সম্পূর্ণ শরীরকে সুস্থ রাখতেও সঠিক মাত্রায় জল খাওয়া দরকার। শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিলে, ত্বকসহ শরীরের অন্যান্য অংশেও তার বিশেষ প্রভাব পড়ে।
৫. পা ফাটার সমস্যা রোধ – শীতে অনেকেরই পা ফাটার, পায়ের চামড়া ওঠার সমস্যা দেখা দেয়। তাই শীতে পা ভালো রাখতে মোজা পরুন। এছাড়া পেট্রোলিয়াম জেলি কিংবা গ্লিসারিন দিয়ে পা ম্যাসাজ করলেও এই সমস্যা এড়ানো যায়। মোজা পড়ার আগে ভালো ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে হালকা ম্যাসাজ করে মোজা পরুন।
৬. গরম জলে স্নান – শীত পড়তে না পড়তেই অনেক মানুষ গরম জলে স্নান করা শুরু করে দেন। তবে খুব বেশি গরম জলে স্নান করলে ত্বক পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া শীতে দীর্ঘক্ষণ সোয়েটার পড়ে থাকার পর আবার গরম জলে স্নান করলে শরীর গরম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যথা সম্ভব গরম জলে স্নান না করাটাই ভালো।
৭. চিকিৎসকের পরামর্শ – অনেকের ত্বকের শুষ্কতা এতটাই বেড়ে যায় যে ত্বক ফেটে রক্ত বেরোতে শুরু করে। সেক্ষেত্রে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন। কারণ অনেক সময় চর্ম বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো ময়েশ্চারাইজার বা অয়েনমেন্ট লাগালেও এই সমস্যা নিরাময় হয়।