আজ খবর ডেস্ক- কিছু বছর আগে কেদারনাথে তাল ফেটে যে দৃশ্য তৈরি হয়েছিল, সেই স্মৃতি ফিরে এলো উত্তরবঙ্গে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে তিস্তা নদীর জল। ইতিমধ্যেই নদী এবং পথ মিলেমিশে একাকার, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে সিকিমের সঙ্গে।

পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিম পৃথকভাবে ক্ষতির এবং সংকটের মুখ দেখতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। নদীর জল ইতিমধ্যেই তিস্তা সেতু ছুঁইছুঁই। গাজলডোবায় উপচে পড়েছে স্লুইস গেট। ফলে জল ঢুকতে শুরু করেছে বিভিন্ন এলাকায়। এ ভাবে জল নাগাড়ে জল বাড়তে থাকায় চিন্তায় মাথায় হাত প্রশাসনের।

অতি বৃষ্টির কারণে জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এবং একাধিক এলাকায় ইতিমধ্যেই জলের তলায়। তাদের মধ্যে রয়েছে, সারদাপল্লি, সুকান্তনগর, মৌয়ামারি, চাঁপাডাঙা, নন্দনপুর, বোয়ালমারি, পাতকাটা প্রভৃতি এলাকা প্লাবিত।

একটানা বৃষ্টির জন্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তিস্তা নদীর জল বেড়েছে অনেক মাত্রায়। তিস্তাবাজার থেকে ২৯ মাইলের দিকে জাতীয় সড়কের প্রায় সমান জলস্তর উঠে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকা ইতিমধ্যেই জলের তলায়। এলাকাবাসীদের সতর্ক করতে পুলিশ রাত থেকেই মাইকিং শুরু করেছে। ওই সব এলাকা থেকে বাসিন্দাদের ত্রাণশিবিরেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসনের তরফে।

মঙ্গলবার রাত থেকেই জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করছেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু ও পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। গোটা পরিস্থিতির উপরেই নজর রাখা হচ্ছে তাঁদের তরফে। উদ্ধারকাজে নেমেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বালির বস্তা ফেলে নদীবাঁধ রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য সিকিম, যথেষ্ট বিপদসংকুল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। ১০ নং জাতীয় সড়ক প্লাবিত হয়ে জলের তলায়। রংপো সীমা থেকে প্রায় ৬০ কিমি দূরত্বে অবস্থিত ২৯ মাইলের কাছে ধস নেমে বিপর্যস্ত এলাকা। অন্যদিকে পানি হাউস এর কাছে ধস নেমে বন্ধ হয়েছে রাস্তা, স্বাভাবিকভাবেই গাড়ি চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত রাস্তার ওপর থেকে সম্পূর্ণ পরিমাণে ধ্বংসাবশেষ সরানো সম্ভব হয়নি। বিকমত নামের এক দক্ষিণ সিকিম এলাকায় ধস নেমে বন্ধ করে দিয়েছে রাস্তা, পাশাপাশি গাড়ির উপর পাথর পরে গিয়ে গাড়িটিকে চূর্ণবিচূর্ণ করেছে।

তিস্তা সেতুতে ইতিমধ্যেই গাড়ি চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। অতিরিক্ত জলোচ্ছ্বাস এবং বিপদসীমার ওপরে জল উঠে এসে ব্যাপকভাবে ক্ষতি করতে পারে ওই সেতুর বলেই আশঙ্কা। আপাতত দুই রাজ্যের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং চরম মাত্রায় বৃষ্টির কারণে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কাজে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা যায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *