আজ খবর ডেস্ক : বোম্বে হাইকোর্টের পর এবার শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন নিয়ে নজিরবিহীন রায় দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত তরফে বলা হল, শিশুদের সঙ্গে ওরাল সেক্স অর্থাৎ শিশুর মুখে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ কোনও গুরুতর অপরাধ নয়। শুধু তাই নয়,উচ্চ আদালতে কমিয়ে দেওয়া হল অভিযুক্তের সাজার মেয়াদও।সোনু কুশওয়াহা নামের এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ২০ টাকার বিনিময়ে এক শিশুর সঙ্গে ওরাল সেক্স করার অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের তরফ থেকে সেই ব্যাক্তির ১০ বছরের সাজা ঘোষণা করা হয়। এরপরই নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের দারস্থ হন অভিযুক্ত ব্যাক্তি। এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারক অনিল কুমার ঝায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়।

শুনানির দরুন বিচারপতি জানান, ” দোষী ব্যক্তি শিশুর মুখে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করিয়ে ছিলেন, বিষয়টি পকসো আইন মোতাবেক ধারা ৫-৬ অথবা ৯ (এম)-এর আওতাধীন নয়। তাই শিশুর মুখে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করানো গুরুতর অপরাধ নয়। এই অপরাধ পকসো আইনের ধারা ৪ এর মধ্যে পড়ছে। সাজাও হবে সেইভাবেই। ” নিম্ন আদালতের রায় অনুযায়ী ওই ব্যাক্তির যে ১০ বছরের সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল, তাও কমিয়ে ৭ বছর করে দেওয়া হয়। সঙ্গেই সোনুর বিরুদ্ধে ৫ হাজার টাকার জরিমানা ধার্য করা হয়।এলাহাবাদ হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের এই সিদ্ধান্তে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।

এই বিষয় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইটারে লেখেন “ওরাল সেক্স পকসো আইন অনুযায়ী ‘গুরুতর যৌন নিপীড়নের’ আওতায় পড়ে না, বোম্বে হাইকোর্টের অবাক করা পকসো অপরাধের জন্য ত্বকের স্পর্শ প্রয়োজনীয় বলার পরে, ফের এমন রায় দিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্ট । হাইকোর্ট জাগো ! পকসো-এর অর্থ হল শিশুদের জঘন্য অপরাধ থেকে রক্ষা করা। এটিকে শিথিল হতে দেবেন না।”

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, ২০১৬ সালের ২২শে মার্চ ঘটনাটি ঘটে। শিশুর বাবার অভিযোগ অনুযায়ী, ঝাঁসিতে তাদের বাড়িতে অভিযুক্ত ব্যক্তি আসেন ও শিশুটিকে নিকবর্তী এক মন্দিরে নিয়ে যান। তারপর ২০ টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে ওরাল সেক্সে বাধ্য করেন ওই ব্যাক্তি। এরপর চার্জশিটে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে ৩৭৭, ৫০৬ ও পকসো আইনের ৩-৪ ধারায় অভিযুক্ত করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এমন বিতর্কিত রায় দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এর আগে বোম্বে হাইকোর্টের পকসো আইনের ভুল ব্যাখ্যা নিয়ে সরব হয়ে দেখা গিয়েছিল সুপ্রিমকোর্টকে। এবার এই রায় নিয়ে কি ভূমিকা নেয় শীর্ষ আদালত, এখন সেটাই দেখার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *