আজ খবর ডেস্ক- ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিকেল এডুকেশনের বদলি নীতি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। বদলি নীতির মধ্যে বেশকিছু বদল নিতে চলেছে রাজ্য। তার মধ্যে কি কি প্রয়োজন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করা হয়েছে রাজ্যের তরফে। নির্দেশিকা জারির ১৫ দিনের মধ্যে ওই কমিটিকে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে স্বাস্থ্য দপ্তরকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১৭ নভেম্বর সেই কমিটির নির্দেশিকা জারি করেন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। স্বাস্থ্য শিবিরের তরফে খবর, ওই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পাশাপাশি, সদস্য হয়েছেন রাজ্যের কোভিডের নোডাল অফিসার তথা এসএসকেএমের গ্যাসট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক গোপালকৃষ্ণ ঢালি এবং ইনস্টিটিউট অব হেল্থ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ারের অধিকর্তা ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। ওই কমিটির প্রস্তাব প্রথম স্বাস্থ্য দপ্তরে জমা পড়বে। বিচার-বিবেচনার পর সেখান থেকে সেই নথি পাঠানো হবে নবান্নে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হওয়ার পরেই চিকিৎসক বদলিতে নতুন নীতি কার্যকর হবে বলে জানা গিয়েছে।

বদলি নীতির চাপে পড়ে অনেক চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করা হয়। এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করার জন্য নতুন নীতি কার্যকর করতে চলেছে রাজ্য সরকার। কার্যত নড়েচড়ে বসেছে বলে দাবি। বদলিতে বৈষম্যের অভিযোগ ফের প্রকাশ্যে আসে সহকারী শিক্ষক-চিকিৎসক অবন্তিকা ভট্টাচার্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর। লাগাতার আট বছর মেদিনীপুরে কাজ করার পরে অটিজমে আক্রান্ত মেয়ের জন্য বাড়ির কাছাকাছি বদলি চেয়ে আবেদন করলেও ডায়মন্ড হারবারে বদলি করা হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসের ওই চিকিৎসককে। অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক মানস গুমটা বদলি নীতির উদ্যোগকে স্বাগত জানান। কিন্তু তা রূপায়ণ হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে তাঁর মনে। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, হেল্থ সার্ভিস বা স্বাস্থ্য প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বদলি নীতি থাকলেও তা কতটা মানা হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। সৌজন্যে নাম না করেই স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

বদলি নীতিতে স্বজনপোষণের কারণে বেশ কিছু চিকিৎসক তাঁদের পছন্দের জায়গায় থেকে যাচ্ছেন নির্দেশিকা আসার পরেও বলে দাবি। দেখা যাচ্ছে, ডিটেলমেন্ট অর্ডার পাস করিয়ে কিছু অসুবিধা দেখিয়ে তাঁরা থেকে যাচ্ছেন নিজের পছন্দের জায়গায়। অথচ খাতায়-কলমে দেখা যাচ্ছে, তাঁর বদলি হয়ে গিয়েছে অন্যত্র এমনকি তাঁর বেতন আসছে সেই নতুন ঠিকানায়।

স্বাস্থ্য শিবির সূত্রে খবর, ১৯৯৬ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসকে জোন-১, ২, ৩, ৪— রূপে বিভক্ত করা ছিল। ১- কলকাতা, ২- বর্ধমান, ৩- বাঁকুড়া ও ৪- নম্বর জোনে উত্তরবঙ্গের মেডিক্যাল কলেজগুলি ছিল। নিয়ম ছিল, সমগ্র কর্মজীবনে অন্তত ৮-১০ বছর অন্য জেলায় কাটাতে হবে। এরপর নিজের জেলায় কাজ করার সুযোগ মিলবে। আগে মেডিক্যাল কলেজ ছিল সাতটি। এখন বেড়ে হয়েছে একুশটি। তাই নতুন নীতিতে জোনের পরিবর্তন, বদলির পরে দু’মাসের বেশি ‘ডিটেলমেন্ট অর্ডার’ কার্যকর না-হওয়ার মতো বিষয় সামনে আসতে পারে বলে খবর।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *