আজ খবর ডেস্ক- দলের অন্দরে ক্ষোভ তৈরির জায়গা ঘনীভূত হচ্ছিল তা টের পায়নি প্রদেশ কংগ্রেস। সব রাজনৈতিক দলগুলি ইতিমধ্যেই তাদের পুরসভার নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে ফেলেছে আগেই। এবার প্রকাশিত কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা থেকে নাম বাদ গেল নাগমা ইয়াসমিনের। ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের জন্যে টিকিট পেয়েছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি নমিনেশন পত্র ছিড়ে ফেলে জ্বালিয়ে দেন। পাশাপাশি, তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বদের উদ্যেশ্যে। নাগমা আইএনটিইউসি- র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। এই ঘটনায় তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, ভিতরে ভিতরে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির বোঝাপড়া রয়েছে।

এই ঘটনার বিষয়ে নাগমা ইয়াসমিনেকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি @আজ খবরকে জানান, তিনি একাই লড়বেন দলের বিরুদ্ধে। দলের তরফ থেকে কোনও সাহায্য তিনি পাচ্ছেন না। পাশাপাশি তাঁর দাবি, ৫৯ বা ৬২ নম্বর কেন্দ্র থেকে তাঁকে টিকিট না দেওয়া হলে অন্যত্র কোনও কেন্দ্র থেকে তিনি লড়তে রাজি নন। পাশাপাশি তিনি এও অভিযোগ করেন দল তাদের নীতি আদর্শ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে। এই নিয়ে তিনি আর কংগ্রেসে থাকতে চাইছেন না এই ঘটনার জন্য। এই ঘটনার পরে তাঁর অভিযোগ তিনি কংগ্রেস দলের কাউকেই পাশে পাননি ফলে একাই আগুন জ্বালিয়ে তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন।

কংগ্রেস নেতাদের একাংশের বক্তব্য, এই ধরনের ঘটনার জন্য রাজনৈতিক কার্যালয়ে পুলিশ এসে ঘটনা সামাল দেওয়াতে নির্বাচনের আগেই দলের যথেষ্ট ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, যে সকল মহিলারা কোনও দিন মাঠে নেমে রাজনীতি করেনি তাঁরা কিভাবে টিকিট পেয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, নাগমা ইয়াসমিনের মতন কর্মীরা যারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং কার্যত মাঠে ময়দানে নেমে দলের কাজ করেছেন তাঁদের কি ভাবে দলের থেকে প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বেশ কিছুক্ষণ পরে নাগমা ইয়াসমি @আজ খবরকে জানান, মধ্য কলকাতার কংগ্রেস সভাপতি সুমন পাল তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন বেহালার কাছাকাছি কোনও কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের জন্য টিকিট দেওয়া হবে তাঁকে। যদিও অন্য কোনও কেন্দ্র থেকে লড়তে রাজি নন, সেই বিষয়ে পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি।

নির্বাচনের যেখানে আর একমাসও দেরি নেই সেখানে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের অন্দরে এ ধরনের আচরণ যথেষ্ট চিন্তায় ফেলে দেবে দলকে বলে মনে করছেন অনেকে। অন্যদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে গিয়ে দেখা করেননি সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে। পাশাপাশি, বিরোধী দলের সর্বভারতীয় বৈঠকেও নাম নেওয়া হয়নি তৃণমূলের বলে অভিযোগ দলের। এই মর্মে দাঁড়িয়ে কলকাতায় নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি বেশ জোরালো বলা যেতে পারে। এদিনের বিধানভবনের ঘটনায় সুমন পালের পাশাপাশি অধীর চৌধুরীর দিকেও আঙুল তুলেছেন তিনি। কংগ্রেসের এ ধরনের আচরণের জন্য আইএনটিইউসি-র পর্যন্ত অপমান হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর দাবি, এমন ধরনের রাজনীতি করার থেকে ঘরে বসে থাকা অনেক ভাল।

নাগমা ইয়াসমিনের পরিবর্তে ফাতিমাকে টিকিট পাইয়ে দেওয়ার ঘটনায় তিনি বলেন, এসব সেটিং আছে, রাত সাড়ে বারোটায় তিনি কি করছিলেন লিস্ট বের করে? এধরনের বিভিন্ন প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বদের দিকে। নির্বাচনের মুখে কার্যত অস্বস্তির মুখে কংগ্রেস তা পরিষ্কার। ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পুরোনো জায়গা ফিরে পেতে নাগমাকে নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেবে প্রদেশ কংগ্রেস সেই দিকে তাকিয়ে গোটা রাজনৈতিক দল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *