আজ খবর ডেস্ক- উৎসব মানেই খাওয়া দাওয়া।গোটা বছর ধরে ডায়েট করলেও উৎসবের কটা দিন রোজ দিনের বাধাধরা ডায়েট থেকে সরে দ্বিধাহীন ভাবে অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রবণতা বেড়ে যায় সকলের। আর উৎসবের দিন গুলিতে খাওয়ার পাশে মিষ্টি তো চাইই চাই ! ‘চিট ডায়েট ‘ এ কিছুটা অস্বাস্থ্যকর জাঙ্ক ফুড, মিষ্টি খাওয়া গেলেও, তা লাগামছাড়া হলে বিফলে যেতে পারে বিগত ডায়েটের কসরত। যা অনেক সময় আজীবন পেটের সমস্যাও ধরিয়ে দিতে পারে। তবে কি উৎসবের দিন গুলোতেও ভালো – মন্দ খাবেন না?
এই বিষয় ফোর্টিস হাসপাতাল, মুলুন্ড এর সিনিয়র নিউট্রিশন থেরাপিস্ট মিনাল শাহ কি বলছেন জেনে নিন। তাঁর কথায় , ‘ ভাল-মন্দ খাওয়ারের জন্য আমরা সকলেই উৎসবের দিন গুলোর অপেক্ষা করে থাকি। তবে সেই দিনগুলোতে ও স্বাস্থ্যের সাথে কোন রকম আপোষ না করে আপনি এমন কিছু খাবার খেতে পারেন যাতে স্বাস্থ্য ও স্বাদকরক উভয়কেই খুশি রাখা সম্ভব।’
কি কি মিষ্টি খেতে পারেন ?
১) দুধ জাতীয় মিষ্টি বেছে নিন। যেমন শ্রীখন্ড, সন্দেশ, মিষিত দোই, খীর ইত্যাদি। দুধ হল প্রথম-শ্রেণীর প্রোটিন। তাই এই জাতীয় মিষ্টিগুলি যেমন সহজেই বাড়িতে তৈরি ফেলা যায়, তেমনই শরীরের পক্ষেও কম ক্ষতিকর।
২) দারুচিনি, জায়ফল, শুকনো ফল যেমন খেজুর, কিশমিশ এবং তাজা ফলের মতো প্রাকৃতিক উপাদান গুলিকে চিনির পরিবর্তে ব্যাবহার করা যেতে পারে। শেষ পাতে মন মত ডেজার্ট বানাতে চিনির পরিবর্তে গুড় এবং মধুও ব্যাবহার করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই পরিমিত ভাবে।
৩) কিছু জনপ্রিয় ডেজার্ট এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর মিষ্টিগুলি বেছে নিতে পারেন। যেমন –
কাজু কাটলির বদলে বাদাম কাটলি খেতে পারেন। তাতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে।
রাভা লাডুর চেয়ে বেসন লাডু (প্রোটিন) বা চিনাবাদাম লাডু (MUFA) এবং নারকেল লাডুর থেকে মহীশূর পাক (প্রোটিন) বেছে নিতে পারেন।
রাভা শিরার চেয়ে গাজরের হালুয়া বা দুধের হালুয়া (অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট/ভিটামিন) বা মুগ ডাল শিরা (প্রোটিন) অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
নিয়মিত চালের ক্ষীরের চেয়ে পায়সাম বেছে নিন।
৪) চিরাচরিত মিষ্টির বদলে ভিন্ন স্বাদের মিষ্টি চেখে দেখতে পারেন। যেমন – তিলের লাডু, ওটস খেজুরের লাডু, আখরোটের লাডু, মেথির খির, দুধের খির , আপেল শিরা, ফলের খির, পেঁপের হালুয়া, বিটরুটের হালুয়া, গাজরের কালাকন্দ, ওটস প্যানকেকস ক্র্যানবেরি সিরাপ বা ব্লুবেরি সিরাপ বা ব্লুবেরি সিরাপ, বার্কোলেট সিরাপ,আপেল পাই, কুমড়ো পাই, ফলের দই, বীজ চিক্কি (কুমড়ো/সূর্যমুখী/ফ্ল্যাক্সসিড)।
৫) মিষ্টির খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই পরিমাণের কথা মাথায় রাখতে হবে। জিলিপি, মালপুয়া, গুলাব জামুন, গুলপাপদি, শেরা ইত্যাদির তুলনমূলকভাবে বেশি ফ্যাট যুক্ত মিষ্টি। তবে যদি আপনার খুব পছন্দের হয় , তবে অল্প পরিমাণে খান। তাতে কম ক্যালোরি গ্রহণ করবেন।
৬) এছাড়াও, যে মৌলিক বিষয়গুলি মনে রাখতে হবে তা হল – প্রতিটি খাবারে স্বাস্থ্যকর ফাইবার আছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। খাওয়ারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রঙের শাকসবজি এবং ফল যোগ করে একটি ভালো স্যালাড খেতে পারেন।
৭) উৎসবের দিন গুলিতে খাওয়ারের পাশাপাশি ফিলার হিসেবে কম ক্যালোরিযুক্ত এবং সুস্বাদু আদা লেমোনেড, ভার্জিন পিনা কোলাডা, কিউই মার্গারিটা, মসলা দুধ, থানদাই, মৌরি বীজের সাথে মিল্কশেক, ফালুদা, শসা পুদিনা কুলার, টমেটো মকটেল ইত্যাদি যোগ করতে পারেন।