আজ খবর ডেস্ক : মধ্যপ্রদেশের রাজ্য সরকার জনগণের সমস্যা সমাধানের জন্য ২০১৯ সালে ‘আপকি সরকার-আপকে দ্বার’ নামে একটি প্রোগ্রাম শুরু করেছিল। সেই মতোই এবার, ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন সরকার ‘আপকে অধিকার আপকে সরকার আপকে দ্বার’ কর্মসূচির শুরু করলেন।মঙ্গলবার, স্বাধীনতা সংগ্রামী বিরসা মুণ্ডার জন্মবার্ষিকী এবং ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সরকারের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে ৪৫ দিনব্যাপী রাজ্যজুড়ে ‘আপকে অধিকার, আপকে সরকার, আপকে দ্বার’ অনুষ্ঠান শুরু করার ঘোষণা করা হয়েছে।অনুষ্ঠানটি ১৬ ই সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।

এর অধীনে, ওই রাজ্যের ২৪ টি জেলাজুড়ে শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি জেলা থেকে পঞ্চায়েত পর্যন্ত, শিবিরে উপস্থিত আধিকারিকরা জনগণের সমস্যাগুলি সম্পর্কে জানবেন এবং তা সমাধানের চেষ্টা করবেন। তাই এই লক্ষ্যপূরণ করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি দিনের জন্য পঞ্চায়েতভিত্তিক কার্যকলাপের একটি তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডে ২৪ টি জেলা, ২৬৪ টি ব্লক, ৫০ টি পৌরসভা ও ৪,৩৫১ টি পঞ্চায়েত রয়েছে।

আপনার অধিকার, আপনার সরকার, আপনার দ্বারে’ কর্মসূচির অধীনে পঞ্চায়েত স্তরের শিবিরে যে সমস্ত কাজগুলি করা হচ্ছে, তা হল –

১) ঝাড়খণ্ড রাজ্য খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের অধীনে নতুন রেশন কার্ড তৈরির জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে।

২) রেশন কার্ডের জন্য প্রাপ্ত আবেদনের ভিত্তিতে অনুমোদিত রেশন কার্ড সুবিধাভোগীর জন্য উপলব্ধ করা হচ্ছে ।

৩) যে সমস্ত মানুষেরা রেশন কার্ডের সুবিধা সম্পর্কে বিশেষ অবগত নয়, তাদের রেশন কার্ড তৈরির জন্য উদ্বুদ্ধ করা।

৪) রেশন কার্ডের ত্রুটি সংশোধনের জন্য আবেদনপত্রটি গ্রহণ এবং সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।

৫) রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রতিকার।

৬) নতুন সুবিধাভোগীদের পেনশনের সুবিধা মঞ্জুর করার জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ করা।

৭) পেনশনের জন্য প্রাপ্ত আবেদনগুলি যাচাই করে তার গ্রহণযোগ্যতার ব্যবস্থা করা।

৮) পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সুবিধাভোগীর যে কোনরকম সমস্যা হলে তার সমাধান করা।

৯) MNREGA-এর অধীনে নতুন জন কার্ডের জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ এবং তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া।

১০) ঝাড়খণ্ডে ফিরে আসা অভিবাসী কর্মীদের জন্য অগ্রাধিকার হিসাবে জব কার্ড তৈরি করা।

১১) যদি MNREGA-এর অধীনে কর্মসংস্থান প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক স্কিম অনুমোদিত না হয়, তাহলে নতুন স্কিমগুলির অনুমোদনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া।

১২) ফুল-ঝাঁও আশির্বাদ অভিযানের অধীনে হাড়িয়া বিক্রির কর্মসংস্থানে নিয়োজিত মহিলাদের চিহ্নিত করা এবং তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুবিধা প্রদান করা।

১৩) ধুতি-শাড়ি বিতরণ।

১৪) কম্বল বিতরণ।

১৫) 15 তম অর্থ কমিশনের অধীনে প্রাপ্ত অর্থ পাবলিক ইউটিলিটি স্কিমগুলির অনুমোদিত করা।

মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বিরসা মুন্ডার জন্মস্থান খুন্তির উলিহাতু থেকে ৪৫ দিনব্যাপী ‘আপকা অধিকার, আপকি সরকার আপকে দ্বার’- কর্মসূচির উদ্বোধন করতে গিয়ে বলেন, জনকল্যাণের জন্য সরকার এখন থেকে জনসাধারণের দরজায় আসবে। জনগণের সমস্যা সমাধান করাই হবে তার প্রধান উদ্দেশ্য।

অন্য রাজ্যের থেকে অনুপ্রাণিত প্রোগ্রাম :

২০১৯ সালে, মধ্যপ্রদেশের রাজ্য সরকার সেখানকার জনগণের সমস্যা সমাধানের জন্য ‘আপকি সরকার-আপকে দ্বার’ নামে একটি কর্মসূচি শুরু করেছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে তাঁদের সমস্যা সমাধান করা। এই অভিযানের আওতায় কর্মকর্তারা গ্রামে গ্রামে পৌঁছে গ্রামের মানুষের সমস্যা শুনে গ্রামেই সেই সমস্যা মেটানোর কাজ করতেন। এছাড়া আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গেও ‘ দুয়ারে সরকার ‘ নামের প্রকল্পটিও অনেকটা একই আদতে পরিকল্পিত। এরপর সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন সরকার ‘আপকে অধিকার, আপকি সরকার, আপকে দ্বার’ কর্মসূচি শুরু করেন।

এই প্রচারণা কর্মসূচি থেকে অভিনবত্ব কোথায় ?

জনকল্যাণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে জনসাধারণকে ধারাবাহিকভাবে সুবিধে প্রদানের জন্য এই কর্মসূচি চালান হয়। এর জন্য ইতিমধ্যেই জেলা এবং ব্লক সদর দপ্তরের দিনওর ঠিক করে ফেলা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে প্রতি মঙ্গল ও শুক্রবার করে জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে উপস্থিত থেকে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে দেখা করে তাদের সুবিধে অসুবিধের কথা শুনবেন। একইভাবে ব্লক সদরে প্রতি মঙ্গল ও শুক্রবার আধিকারিকরা উপস্থিত থেকে জনসাধারণের সমস্যা শুনবেন। ঝাড়খণ্ডের রঘুবর দাসের আগের সরকারের আমলে অফিসাররা মাসে একদিন করে গ্রামে রাত কাটাতেন। তার আমলে এই কর্মসূচীর আস্ফালন ছিল। তারপর এখন হেমন্ত সরকার ‘ আপকে অধিকার, আপকি সরকার, আপকে দ্বার’ অভিযান শুরু করেন। এটি সেই অর্থে ভিন্ন যেহেতু প্রোগ্রামটি টানা ৪৫ দিন ধরে চলবে। কারণ এর আগে ওই রাজ্যে এই ধরনের প্রোগ্রাম এক সপ্তাহ বা এক মাসের বেশি চলত না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *