আজ খবর ডেস্ক- সহজে গন্তব্যে পৌঁছতে ভরসা ছিল বাস, সব রুটে নেই অটো, হালে চালু হয়েছে লোকাল ট্রেন, তাই নিত্য যাত্রায় সম্বল বাস। তবে লক্ষ্য করা গিয়েছে রাস্তায় সরকারি-বেসরকারি বাস নামছে অনেক কম। এর পিছনে রয়েছে বেশ কিছু কারণ। যা স্বাভাবিকভাবেই সাধারণের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে।
পথে বাস না নামার কারণ হিসেবে প্রথম পর্যায়ে দেখা যাচ্ছে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি। যে হারে জিজেলের দাম ব্যাটিং করে চলেছে, তাতে কতদিন পথে বাস নামবে সেই নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা।
সরকারি সূত্রে বেরিয়ে এসেছে একটি বড় তথ্য। প্রতিটি সরকারি বাস ডিপোতে সপ্তাহ পিছু ১২ হাজার লিটার ডিজেল দেওয়া হয়। যার বাজার মূল্য ছিল প্রায় ৮ লাখ টাকা। তবে এখন জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারণে সেই দাম পৌঁছেছে ১২ লাখ টাকায়। বলা যেতে পারে এক ধাক্কায় প্রায় ৪ লাখ টাকা বেড়ে গিয়েছে তেলের দাম। আধিকারিকদের দাবি, বাস চালিয়ে যে টাকা আয় হচ্ছে তার চেয়ে তেলের দাম অনেক বেশি। অর্থাৎ ন্যূনতম খরচটুকু উঠছে না তাঁদের। সিটিসি- র ডিপো সংখ্যা ১২ এবং সিএসটিসি- র সংখ্যা ১১।ফলে সর্বমোট ২৩ টি ট্যাংকার পাঠাতে অতিরিক্ত খরচ বেড়ে দাড়িয়েছে ৯২ লাখ।
তবে এখন যা হাল, তাতে ১০ টির বেশি ট্যাঙ্কার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করছেন আধিকারিকরা। অগত্যা বাস নামানই দায়। পুরনো হিসেব ঘাটলে দেখা যাচ্ছে আগে সিএসটিসি- র সপ্তাহে আয় ছিল ২৮ থেকে ৩০ লাখ টাকা। এখন যা কমে দাড়িয়েছে ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকায়। সপ্তাহান্তে সেটা আরও নজিরবিহীন ভাবে কম, মাত্র ৬ লাখ টাকা। এখন প্রশ্ন উঠছে, অতিরিক্ত বাস চালালে লোকসান তো হবেই, উল্টে বাস বের করাই সম্ভব নয়। কারণ, জ্বালানির অভাব দেখা দেবে।
অন্যদিকে বেসরকারি বাসের মালিকদের দাবি, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও ভর্তুকি, সরকারি সাহায্য নেই। সম্পূর্ণ খরচ বহন করতে হয় মালিকপক্ষকে। বাস রাস্তায় না নামালে সমস্যা প্রবল, তাই কম নামানই বুদ্ধিমানের কাজ।
রেকর্ড হারে বাস কম নামছে পথে, যেমন সিএসটিসি আগে দিনে দুটি ট্রিপ মিলিয়ে প্রায় ৯০০ বাস নামাতো রাস্তায় যা কমে দাড়িয়েছে প্রায় ৬০০। অন্যদিকে, সিটিসি আগে প্রায় ২৫০ টি বাস বের করতে সক্ষম ছিল, তবে এখন তা কমে হয়েছে প্রায় ১৮০। এই ভাবেই ছবিটা পরিষ্কার যে কি হারে বাস কমেছে পথে।
এখনই জ্বালানির দাম না কমালে ভবিষ্যতে পথে কটা বাস নামবে সেই নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দোপাধ্যায়। তেলের দাম না কমলেও অন্তত বাসের ভাড়া বাড়ানোর দাবি করছেন তাঁরা। যাতে নূন্যতম খরচটুকু উঠে আসে।