আজ খবর ডেস্ক- প্রায় বাইশ মাস পর খুলল স্কুলের দরজা। শোনা গেল সেই পুরনো কোলাহল, পরিপাটি ইউনিফর্ম, পিঠে বইয়ের ব্যাগ। তার মধ্যে থেকে উঁকি দিচ্ছে রংবেরঙের জলের বোতল। করোনা অতিমারির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি মেনে খুলে দেওয়া হল রাজ্যের সব স্কুলের দরজা।
এদিন সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে স্কুলের বাইরে দেখা গেল অভিভাবকদের ভিড়। রাজ্য সরকারের দেওয়া নিয়ম নির্দেশ মেনেই শুরু হল পঠন-পাঠন। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত চলছে স্কুল। পরে ধীরে ধীরে নিচু শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্কুল খুলবে নাকি, সেই বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। স্কুলগুলোর পাশাপাশি খুলে দেওয়া হল কলেজ। বেথুন, স্কটিশ চার্চ, আশুতোষের মতন কলেজগুলি খুলে দেওয়া হল এদিন। কিছু কলেজের ক্ষেত্রে অবশ্য নিয়ম করা হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা একটি ডোজ নিলেই করতে পারবেন ক্লাস। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে তাঁদের নিতে হবে দু’টি ডোজ।
শিক্ষামন্ত্রীর তরফে আগেই জানানো হয়েছিল স্কুলে আসার ব্যাপারে কড়াকড়ি করা হবে না ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে। শরীর ও স্বাস্থ্যর বিষয়টি আগে প্রাধান্য দেওয়া হবে, তাই স্কুলে অনুপস্থিত হলেও সেই বিষয়ে জোর দেওয়া হবে না স্কুলের তরফে। স্কুলে আসা থেকে ক্লাস করার পর ফিরে যাওয়া পর্যন্ত মানতে হবে একাধিক নিয়ম এবং নিষেধাজ্ঞা। শিক্ষা দপ্তরের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল স্কুলের মূল প্রবেশ দ্বারে রাখা হবে তিন জনকে। যারা দেখবেন ছাত্রছাত্রীরা মাস্ক পড়ে আছেন নাকি। মাপা হবে শরীরের তাপমাত্রা এবং জীবানু নাশের কাজ ঠিকভাবে করা হচ্ছে নাকি। এ দিনেও ছবিটা ঠিক সেরকমই দেখা গেল।
শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল দত্ত জানান, এতদিন পরে স্কুল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কে স্বাগত জানাচ্ছেন তিনি। এতটা সময় পর ছাত্রদের কাছে পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি শিক্ষক শিক্ষিকা মহল। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য, দু’টি বিষয়ের উপরেই নজর রাখবেন তাঁরা। মহাঋষি বিদ্যামন্দিরে দেখা গেল স্কুলের মাঠে নির্দিষ্ট বিধি মেনেই চলছে প্রার্থনা। কোথাও আবার ছাত্র ছাত্রীদের দেওয়া হল লজেন্স। স্কুল শুরু প্রথম দিনে, ধাদকা নারায়ণ চন্দ্র লাহিড়ী বিদ্যামন্দিরে লজেন্স হাতে তুলে দিলেন শিক্ষকরা। অনেক স্কুলে আবার দেখা গেল ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে ফুল এবং কলম তুলে দিয়ে স্বাগত জানানো হল নতুন করে।
বারাসাতের একটি স্কুলে ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে স্যানিটাইজারের বোতল। মেদিনীপুরের ছবিটা একটু অন্যরকম। মেদিনীপুর পুরসভার প্রশাসক সৌমেন খানকে স্কুল পড়ুয়াদের হাতে ফুল তুলে দিয়ে স্বাগত জানাতে দেখা গেল এদিন।
সবমিলিয়ে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনেই শুরু হল এদিনের স্কুলগুলি। এতদিন পর পুরনো বন্ধু-বান্ধব এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে খুশি ছাত্রছাত্রীরা। শুধু স্কুলের তরফ থেকেই নয় ছাত্র-ছাত্রীদের তরফ থেকেও সচেতনতা এবং বিধি-নিষেধকে ব্যাপক মাত্রায় মান্যতা দিতে দেখা গেল স্কুল শুরুর প্রথম দিন।