আজ খবর ডেস্ক : বিধানসভা নির্বাচনে সবুজ ঝড়ে মুড়িয়ে গিয়েছিল পদ্মফুলের মাথা। তবে এবার ঘুরে দাঁড়ানোর পালা। আগামী ১৯ শে ডিসেম্বর কলকাতায় পুরোভোট। আর তার আগেই ব্রহ্মাস্ত্র বের করল রাজ্য বিজেপি। প্রকাশিত হল রাজ্য বিজেপির ম্যানিফেস্টো !কি কি রয়েছে তাতে ? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
ম্যানিফেস্টোর শিরোনামে লেখা ” এবার আমাদের কলকাতা জিতবে” তারপর তাতে স্বচ্ছতা থেকে স্বাস্থ্য, সুরক্ষা থেকে সংস্কৃতি, শিক্ষা সহ আরও একঝুড়ি প্রতিশ্রুতির কথা লেখা হল। যার মূল সারমর্ম এমনটা দাড়ায় যে –
১. এবার স্বাস্থ্য জিতবে : তাতে নগরবাসীর সর্বোত্তম স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য ভাড়াভিত্তিক চেম্বার স্থাপন করা, শহরজুড়ে ১০৮ টি এম্বুলেন্স চালু করা, ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে ধোয়ার মাধ্যমে জীবানু নাশ প্রক্রিয়া চালানো সহ শ্মশান কবরস্থান এর স্বাস্থ্য বিধি এবং মর্যাদা সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়। শুধু তাই নয় পর্যাপ্ত পানীয় জলের পরিষেবা সুনিশ্চিত করতে ” হর ঘর জল প্রকল্প ” এবং ” AMRUT’ প্রকল্প চালু করার কথা জানানো হয়। সেইসঙ্গে শহরের দূষণ মোকাবিলায় দশটি টাওয়ার স্থাপন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এই ম্যানিফেস্টোতে।
২. এবার স্বচ্ছতা জিতবে : সেখানে বলা হয়েছে, স্বচ্ছ ভারত ২.o প্রকল্পের আওতায় স্বচ্ছতার দিক থেকে কলকাতাকে শীর্ষ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার নির্মাণ, পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বৃদ্ধি, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ইউনিট গুলি থেকে ১০০ শতাংশ বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ করা, ময়লা ফেলার জায়গা অর্থাৎ ধাপার মাঠ পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেবে গেরুয়া শিবির। সেইসঙ্গে হুগলি নদীর তীরবর্তী অঞ্চল গুলির সৌন্দর্যায়ন, আঞ্চলিক সুবিধা বৃদ্ধি, নদী ও উপনদী গুলি পরিষ্কার রাখা সহ কালীঘাটের আদিগঙ্গা হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয় তাতে।
৩. এবার সুরক্ষা জিতবে : উন্নত মানের সড়ক নির্মাণ, সাধারণ মানুষের যানজটের সমস্যা দূর করা, বর্ষায় রাস্তায় জল জমা থেকে শুরু করে কলকাতার প্রতিটি আবাসনে আগুন লাগার মতো জরুরী পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যথার্থ পরিকাঠামো সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে এই ম্যানিফেস্টোতে। সেইসঙ্গে বর্ষাকালের দুর্ঘটনা এড়াতে সমস্ত ওভারহেড তারগুলি সঠিকভাবে পরিচালনা করা, নতুন ফায়ার স্টেশন নির্মাণ, অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক প্রযুক্তি ব্যবহার, শহরের নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় সুনিশ্চিত করার আশ্বাসও দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে কাটমানি থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতাদের যে কোনো দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি দুর্নীতি দমন দপ্তর তৈরি করার কথা জানান হয়েছে।
৪. এবার সংস্কৃতি জিতবে : কলকাতার অন্যতম ঐতিহ্য দুর্গা পূজাকে আন্তর্জাতিক মানে প্রচার, বিশেষ প্যান্ডেল গুলির জন্য জাদুঘর তৈরি, শহরের রাস্তাগুলি সৌন্দর্যায়নের জন্য স্থানীয় শিল্পী ও কলাকুশলীদের নিযুক্তিকরন থেকে শুরু করে কলকাতার খাদ্য সংস্কৃতির প্রচারের জন্য একটি আন্তঃনগর ফুড সার্কিট তৈরি করার কথা বলা হয়েছে।
৫. এবার শিক্ষা জিতবে : পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলিতে অত্যাধুনিক কম্পিউটার ও বিজ্ঞান গবেষণাগার উন্নত পরিকাঠামো গঠন করা, সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহীদের জন্য প্রতিদিন একটি করে শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, মিড ডে মিলের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা, এবং ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য অভিজ্ঞ শিক্ষক ও আধুনিক সরঞ্জাম এর একটি ক্রিয়া কেন্দ্র মহানগরীর বুকে নির্মাণ করার কথা বলা হয়েছে এই ম্যানিফেস্টোতে।
৬. এবার সবাই জিতবে : আমার কলকাতা প্রকল্পের মাধ্যমে মেট্রো লোকাল ট্রেন টাইম এবং বাসের জন্য একটি ইউনিফাইড ট্রান্সপোর্ট কার্ড তৈরি করা, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এর জন্য টিকিটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড করা, পার্কিং পদ্ধতি সহজ করা, ক্রেতাদের প্রোমোটারের বিবরণ প্রদান নিশ্চিত করে বৈধ নির্মাণ সুনিশ্চিত করা, এছাড়া বসতি এলাকার নিরাপত্তা, হকার ও ভিক্ষাজীবীদের জন্য একাধিক প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে এই ম্যানিফেস্টোতে।
স্বাভাবিকভাবেই ভোটের আগে নিজেদের প্রচারে ও দলীয় ভাবমূর্তি সমৃদ্ধ করতে বিজেপির পক্ষ থেকে যেকোন রকম আপস করা হচ্ছে না এই ম্যানিফেস্টোই তার পরিচায়ক।