আজ খবর ডেস্ক : লক্ষ্য পুরণের জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ় মনোবল। আর এই কথাটিই প্রমাণ করে দিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকান্ত বোলা। তিনি শূন্য থেকে ব্যবসা শুরু করেছিলেন, যা এই মুহূর্তে হয়ে উঠেছে বিশাল।

জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন শ্রীকান্তের ব্যবসার বর্তমান বার্ষিক আয় ২৯ কোটি টাকা। আসুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে তিনি এই সাফল্য পেলেন।

শ্রীকান্তর জন্ম অন্ধ্রপ্রদেশে। এক চাষীর পরিবারে ১৯৯২ সালে জন্ম নেন তিনি। কিন্তু জন্ম থেকেই তার চোখে কিছু সমস্যা ধরা পড়ে। পরিচিত মানুষরা তাঁর মা-বাবাকে বলেন তাঁকে অনাথ আশ্রমে রেখে আসতে। কিন্তু তাঁর বাবা-মা তাতে নারাজ। বড় হয়ে ওঠার সাথে সাথে শ্রীকান্ত বুঝতে পারেন যে তাঁর শিক্ষক ও সহপাঠীরা তাঁকে অবহেলা করছেন। এমনকি স্কুলে তিনি হয়ে উঠেছিলেন সকলের হাসির পাত্র।

এরপর বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে সবাইকে অবাক করে দেন শ্রীকান্ত। কিন্তু আইআইটি-এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ায় জন্য কোন গাইড পাননি তিনি।

কিন্তু এর পরেও হার মানেননি শ্রীকান্ত। তিনি আমেরিকার শীর্ষ প্রযুক্তি শিক্ষাকেন্দ্র এমআইটিতে ভর্তির জন্য আবেদন করেন এবং তিনিই হন এমআইটির ইতিহাসে প্রথম আন্তর্জাতিক দৃষ্টিহীন ছাত্র। লেখাপড়া শেষ করে তিনি আবার ভারতে ফিরে আসেন ও নিজের সংস্থা বোলান্ট ইন্ডাস্ট্রিজ শুরু করেন। কয়েকদিনের মধ্যেই বিখ্যাত হয়ে ওঠে সেই কোম্পানি। এমনকি রতন টাটাও ওই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ২০১৮ সালের মধ্যে কোম্পানিটি ১৫০ কোটি টাকা আয় করেছে এবং প্রচুর লোককে কাজ দিয়েছে।

২০১৭ সালে শ্রীকান্ত আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন ফোর্বসের ৩০ জন শ্রেষ্ঠ এশিয়ান বিজনেসম্যানের তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন এবং সিআইআই ইমার্জিং এন্ট্রেপ্রিনার অফ দ্য ইয়ার ২০১৬, ইসিএলআইএফ মালয়েশিয়া ইমার্জিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-এর মত বিখ্যাত পুরস্কারও পেয়েছেন।

২০০৬ সালে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত ডক্টর এপিজে আবদুল কালামের বক্তৃতায় তিনি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি আবদুল কালামকে বলেছিলেন যে তিনি ভারতের প্রথম অন্ধ রাষ্ট্রপতি হতে চান।
শ্রীকান্তের এই হার না মানা গল্প গোটা পৃথিবীর কাছে এক অনুপ্রেরণা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *