আজ খবর ডেস্ক- উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সোয়াট জেলা। এখানেই বারিকোট তহসিলের বাজিরা শহরে পাকিস্তানি এবং ইতালীয় প্রত্নতাত্ত্বিকরা যৌথভাবে একটি খননকার্য চালান। তাতেই অন্তত ২,৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো একটি ‘মন্দির’ ও আরও বেশ কিছু মূল্যবান প্রত্নবস্তু খুঁজে পেলেন তাঁরা।

বাজিরা শহরের এই নিদর্শনগুলি প্রমাণ দেয় যে এককালে সোয়াট এলাকাটিতে কমপক্ষে ছয় থেকে সাতটি পবিত্র ধর্মীয় স্থান ছিল। বৌদ্ধ যুগের স্থাপত্যটি পাকিস্তানের তক্ষশীলায় আবিষ্কৃত পুরাকীর্তির চেয়েও প্রাচীন বলে অনুমান করেছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।এটি এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানে আবিষ্কৃত বৌদ্ধযুগের সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন। মন্দির ছাড়াও প্রত্নতাত্ত্বিকরা সেখান থেকে বৌদ্ধ যুগের ২,৭০০টিরও বেশি নিদর্শন উদ্ধার করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে মুদ্রা, আংটি, পাত্র এবং গ্রিক রাজা মেনান্দর বা মিলিন্দের আমলের খরোষ্ঠী লিপিতে লেখা ইত্যাদি। এই গ্রিকরাজ যথেষ্ট বিখ্যাত। কারণ, বৌদ্ধাচার্য নাগসেন তাঁকে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের কথোপকথন পালি ধর্মসাহিত্যে ‘মিলিন্দ পঞ্চহো’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করা রয়েছে।

পাকিস্তানে এই ইতালীয় প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযানের প্রধান ড. লুকা মারিয়া অলিভেরি বলেন, “বৌদ্ধ আমলের স্থাপত্যের আবিষ্কার প্রমাণ করেছে যে, সোয়াটে তক্ষশীলার চেয়েও প্রাচীনতম প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ রয়েছে।” ভবিষ্যতে সেখান থেকে আরও এই ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার সম্ভব বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। শুধু ইতালীয় বিশেষজ্ঞরাই নন, জাদুঘর ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পরিচালক ড. আবদুস সামাদও মনে করেন, সোয়াটের বাজিরা শহরটি তক্ষশীলার ধ্বংসাবশেষের চেয়েও বেশি পুরনো।

ইতালির শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পিএইচডি শিক্ষার্থীরাও এই স্থানগুলির খননকার্যের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। পাকিস্তানে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেয়া ফেরারেস সাংবাদিকদের জানান, “পাকিস্তানের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বিভিন্ন ধর্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের সহযোগিতায় ইতালীয় প্রত্নতাত্ত্বিক মিশন গত সত্তর বছর ধরে পাকিস্তানের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলিকে রক্ষা ও খনন করে চলেছে।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *