আজ খবর ডেস্ক- বড়দিন আর বর্ষশেষের উৎসব বলে কথা। রাজ্য সরকারের তরফে তাই নৈশ বিধিনিষেধে ছাড় দেওয়া হয়েছিল। সেই সুযোগে শনি ও রবিবার রাতভর বেপরোয়া গাড়ি ও বাইকের দেখা মিলেছে শহরের সর্বত্র।
অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে গতির ঝড় তুলতে দেখা গিয়েছে অনেককেই। রাত যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে বেপরোয়া মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য। বিনা হেলমেটে, বাইকের পিছনে দু’-তিন জনকে বসিয়ে হুল্লোড় করতে দেখা যায় বাইপাস, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড-সহ শহরের একাধিক রাস্তায়। অধিকাংশের মুখে ছিল না মাস্ক।

কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্র্যাফিক আইনভঙ্গের দায়ে শুধু শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ৩২২০টি মামলা রুজু হয়েছে। পাশাপাশি মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য ৫৭ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য ১৮০ জন, বিনা হেলমেটে বাইক চালানোর জন্য ৯৩৪ জনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর। একাধিক জনকে পিছনে বসিয়ে বেপরোয়া ভাবে বাইক চালানোয় ৭০৬ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। স্বাভাবিক ভাবেই রবিবারের পর বিধিভঙ্গ ও পুলিশের তরফে গ্রেপ্তারের সংখ্যাটাও অনেকটাই বেড়েছে।

করোনা, ওমিক্রন অথবা পুলিশের ভয় কোনও কিছুতেই থামেনি এই উন্মত্ত জনতা। বারবার জনগণকে সচেতন থাকার আবেদন জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। সতর্ক থাকতে বলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তাতে কী? বেপরোয়া গাড়িচালকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্যত নাজেহাল হতে হয়েছে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘উৎসবের দিনে এমনিতেই শহর জুড়ে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়। শনিবার-রবিবার সেই মত ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বর্ষশেষের উৎসবকে কেন্দ্র করে এই সময় রাতের দিকে গাড়ির সংখ্যা বাড়ে। তাই আগে থেকে রাস্তায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। বেপরোয়া গাড়িচালকদের বিরুদ্ধে আগামী কয়েক দিনও অভিযান চলবে।’’

এত সতর্কবার্তা, এত প্রচারের পরেও হুঁশ ফিরছে না শহরবাসীর একাংশের! বরং, সুযোগ পেলেই চলছে আইন ভাঙা। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে হেলমেট ছাড়া, তিন জনকে পিছনে বসিয়ে বেপরোয়া গতিতে বাইক চালানো— বাদ যায়নি কিছুই।
ওমিক্রন-আতঙ্কের মধ্যেই বড়দিনে পার্ক স্ট্রিটে মানুষের এই ঢল দেখে রীতিমতো আতঙ্কিত শহরের সচেতন নাগরিকদের একটা বড় অংশ। ওই দিন সন্ধ্যার পর থেকে পার্ক স্ট্রিটে কার্যত তিলধারণের জায়গা ছিল না। একই ছবি ছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, চিড়িয়াখানা, ময়দান-সহ শহরের অন্যান্য দ্রষ্টব্যেও। তবে তাতে দমিয়ে রাখা যায়নি শহরবাসীর একাংশকে। সংক্রমণের আশঙ্কা উড়িয়ে, নৈশ কার্ফুর বিধিনিষেধে ছাড়ের সুযোগ নিয়ে অনেকেই রাতে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন ‘জয়রাইডে’। যদিও কলকাতা পুলিশের তরফে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বাইপাস, সায়েন্স সিটি, চিংড়িঘাটা, রুবির পাশাপাশি পার্ক সার্কাস, উল্টোডাঙা, শ্যামবাজার, হাজরা, রাসবিহারী-সহ শহরের একাধিক মোড়ে মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত পুলিশ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *