আজ খবর ডেস্ক- ফের একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ময়দানে নামলেন প্রশান্ত কিশোর। তৃণমূল নেত্রীর মুম্বই সফরের মাঝপথে কংগ্রেসকে ফের নিশানা করলেন ভোটকুশলী
পি কে।
বৃহস্পতিবার নাম না করে বিজেপি বিরোধী জোটে সোনিয়া ও রাহুলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এদিন একটি টুইট করেন প্রশান্ত। লেখেন, ‘কংগ্রেস যে ভাবনা এবং অংশের প্রতিনিধিত্ব করে তা শক্তিশালী বিরোধীদের জন্য অত্যাবশ্যক। কিন্তু কংগ্রেসের নেতৃত্ব একজন ব্যক্তির ঐশ্বরিক অধিকার নয়। বিশেষ করে যখন দলটি গত ১০ বছরে ৯০ শতাংশের বেশি নির্বাচনে হেরেছে।’ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে প্রশান্ত জানান, শক্তিশালি বিরোধীর জন্য কংগ্রেসের আদর্শ প্রয়োজন হলেও নেতৃত্ব প্রয়োজন নয়।

মাত্র একদিন আগেই মমতা বন্দ্যোপধ্যায় ও এনসিপি(NCP) প্রধান শারদ পাওয়ার “ইউপিএ” (UPA) কে ফুৎকারে উড়িয়েছেন। দিন কয়েক আগে দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে ও দেখা করেন নি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে। কংগ্রেসের ডাকা সংসদীয় কমিটির সর্বদল বৈঠক এড়িয়ে গেছিল তৃণমূল। শুধু তাই নয়, দিনকয়েক ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল নেতৃত্ব বার বার অভিযোগ করেছে, বিরোধী জোট গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না কংগ্রেস। বরং তারা ব্যক্তিকে প্রাধান্য দিচ্ছে। 
সম্ভবত সেই প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ভোট কুশলি প্রশান্ত কিশোর টুইট করেছেন। ওয়াকিবহাল মহলের মত, তৃণমূলের রণকৌশল কিছু ক্ষেত্রে সমালোচিত হয়েছে বিশেষত, সংসদের বাইরে আলাদা আলাদা ভাবে কংগ্রেস ও তৃণমূলের বিক্ষোভ কর্মসূচি দেখে অনেকেই বলছেন এর ফলে বিরোধী ঐক্য ধাক্কা খাচ্ছে। যা আখেরে বিজেপিকে সুবিধে করে দিচ্ছে। পাল্টা প্রশান্ত কিশোরের এই টুইট কি আসলে পরোক্ষে কংগ্রেসের ওপর চাপ সৃষ্টি? বার্তা দেওয়া হল যে, জোর করে বিরোধীদের উপর রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) কে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

এই প্রথমবার নয়। এর আগেও টুইটে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিকবার তোপ দেগেছেন প্রশান্ত কিশোর। অক্টোবর মাসের একটি টুইটে তিনি লখিমপুরের (Lakhimpur Kheri) ঘটনা তুলে ধরে লিখেছিলেন, “এই ঘটনার মাধ্যমে কংগ্রেস নিজেদের আবার শক্তিশালী করতে চাইলেও তাদের সমস্যার কোনও তাৎক্ষনিক সমাধান নেই।”   

মুম্বাইয়ে জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বিজেপি বিরোধী জোটে কংগ্রেসের ভূমিকা প্রসঙ্গে কোনও কথা বলেননি মমতা। তিনি বলেন, ‘‘যেখানে যে দল শক্তিশালী সেখানে তাদের সঙ্গে নিয়েই লড়তে হবে। তবে কেউ যদি না লড়তে চায় কী করব? তা হলে নিজেদেরই লড়তে হবে।’’ যদিও ওই সাংবাদিক বৈঠকেই শা পাওয়ার জানিয়েছিলেন, বিজেপি বিরোধী জোটে কংগ্রেসকেও প্রয়োজন।
গত সোমবার তৃণমূল কর্মসমিতির বৈঠকে মমতা জানিয়ে দেন, বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বিরোধী জোটে কংগ্রেসের ভূমিকা সম্পর্কে প্রশান্তের টুইট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।

কয়েক মাস আগেই রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা বধরার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রশান্ত।জল্পনা ছিল প্রশান্ত পাঞ্জাবের ভোটে কংগ্রেসের হয়ে ভোট সামলানোর কাজ করবেন তিনি। কিন্তু সেই জল্পনা ফিকে হতেই ধারাবাহিক ভাবে কংগ্রেস নেতৃত্বকে নিশানা করছেন পিকে। কখনও রাহুলকে ‘কংগ্রেসের সমস্যার মূল’ বলে চিহ্নিত করেছেন। কখনও পূর্বাভাস দিয়েছেন, প্রিয়ঙ্কা বঢরা লখিমপুর-খেরির কৃষক হত্যার ঘটনা নিয়ে যতই আন্দোলন করুন, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবনের কোনও সম্ভাবনা নেই।
এই অবস্থায় সর্ব ভারতীয় রাজনীতিতে প্রশান্ত কিশোরের এই টুইট দিনভর চর্চার কেন্দ্রে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *