আজ খবর ডেস্ক- সদ্য বাতিল হয়েছে তিন কৃষি আইন। দেশ জুড়ে এই দীর্ঘ কৃষক আন্দোলন ঘিরে সাড়া পড়ে গিয়েছিল। উত্তর প্রদেশ, দিল্লি ও পাঞ্জাব সীমান্তে কৃষকদের একটি অংশ যেভাবে বিক্ষোভ চালাচ্ছিলেন, তার জেরে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তবে পরবর্তী সময়ে পুনরায় এই আইন আনা হতে পারে, এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার।

গত শুক্রবার অর্থাৎ ২৪শে ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। সেখানেই তিনি কৃষি আইনগুলি বাতিলের জন্য “কিছু সংখ্যক ব্যক্তিকে” দায়ী করেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী জানান, “আমরা কৃষি সংশোধনী আইন এনেছিলাম। কিন্তু কিছু লোক এই আইনগুলো পছন্দ করেনি। এটি স্বাধীনতার ৭০ বছর পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে একটি বড় সংস্কার ছিল।”
এর পরেই তিনি বলেন, “কিন্তু সরকার এখনই নিরাশ হচ্ছে না… আমরা একধাপ পিছিয়েছি ঠিকই। তবে আমরা আবার সামনের দিকে এগোব। কারণ, কৃষকরাই ভারতের মেরুদণ্ড।”

কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর মুখে এমন কথা শুনে স্তম্ভিত গোটা দেশ। গত  ১৯ নভেম্বর, গুরু নানক জয়ন্তীর দিনই সকলকে চমকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন, তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, “কৃষি আইন আনার পেছনে মহৎ উদ্দেশ্য থাকলেও দেশের একাংশ কৃষককে এই আইনের গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝানো যায়নি। কৃষকদের আর্জি মেনেই তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আমাদের সরকার কৃষকদের কল্যাণের কথা ভেবেই, দেশের উন্নতির কথা ভেবেই এই আইন এনেছিল। আমাদের উদ্দেশ্য পবিত্র হলেও কিছু কৃষকদের এই কথা বোঝাতে পারিনি। কৃষকদের এক অংশই এর বিরোধিতা করলেও, তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দেশের কৃষিবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, কৃষি বিশেষজ্ঞরা কৃষকদের নতুন তিন কৃষি আইনের সুবিধা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। আমরা দুই বছরের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। আইনের যে অংশ গুলি নিয়ে তাদের সমস্যা ছিল, তা সংশোধনের প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। এরইমধ্যে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও পৌঁছয়। এই ঘটনাগুলি সকলেরই জানা।”

প্রধানমন্ত্রীর সেই আশ্বাস মতো সংসদের সদ্য সমাপ্ত শীতকালীন অধিবেশনে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হয়। তখন থেকেই বিদ্রোহী কৃষকদের এক অংশ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আশঙ্কা করছিল, এই কৃষি আইন পরবর্তী সময়ে আবার নিয়ে আসা হতে পারে। মূলত উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবে ভোটের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। শুক্রবার মহারাষ্ট্রের অনুষ্ঠানে আবারও কি সেই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন মোদি সরকারের কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *