আজ খবর ডেস্ক : ছোট্ট থেকেই ‘ বাঘ মামার হালুম ‘ দিয়ে কতই না ভয় পেয়েছি আমরা। কিন্তু এ যে একেবারে উল্টো ! শোনা গিয়েছিল, নাকি বাঘ দেখতেই বিহার থেকে পালিয়ে বাংলায় আসে সে।সোমবার আলিপুর চিড়িয়াখানার বাঘের খাঁচার সামনে উঁকিঝুঁকি মারছে, এমন সময় কর্মীদের হাতে ধরা পড়ে এক বালক। তবে হাজার জিজ্ঞাসার পরও নিজের নাম-পরিচয় কিছুই জানাতে পারে না সে। অগত্যা পুলিশের দ্বারস্থ হন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। অবশ্য ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশের কাছে ওই পাঁচ বছরের ছোট্ট বালক জানিয়েছিল, তার বাড়ি বিহারে। কিন্তু জানাতে পারেনি বাবার নাম, ফোন নম্বর।এত ছোট্ট ছেলেটিকে বাড়ি ফেরানোর কোন উপায় না পেয়ে, শেষে তাকে শিশু কল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দেয় পুলিশ।
পাশাপাশি চলতে থাকে তার বাড়ির খোঁজ। বিহারের পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। এর মধ্যেই ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ অন্য এক সূত্র মারফৎ জানতে পারে যে, বালকের পিসি থাকেন গার্ডেনরিচ এলাকায়। দ্রুত তার পিসির সঙ্গে কথা যোগাযোগ করা হয়। আর কথা বলতেই বেরিয়ে আসে আসল কথা। জানা যায়, বিহারের আরা জেলার বাসিন্দা ওই বালকের বাড়ি থেকে পালানোর একটি শখ রয়েছে। সে মাঝের মধ্যেই বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে যায় এদিক ওদিক। কখনও হাঁসের পিছু নিতে গিয়ে বেপাত্তা হয়ে যায়, কখনও আবার মনের খেয়ালে। সে কারণ যাই হোক না কেন, পালাতে বেজায় লাগে ওই পাঁচ বছরের খুদের।
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত জানান, ‘‘সোমবার চিড়িয়াখানায় ওই বালককে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় কর্মীদের। তাঁরা ওকে আমার অফিসে নিয়ে আসেন। জানতে পারি পটনার কোনও স্টেশনের কাছে তার বাড়ি। পটনার বাসিন্দা এক কর্মীকে ডেকে পাঠিয়ে বালকের সম্বন্ধে আরও খোঁজ খবর নেওয়া চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বালকটি আর কিছুই বলতে পারেনি। তার পর আমরা বালকটিকে ওয়াটগঞ্জ থানার হাতে তুলে দিই।’’
ছেলের বারংবার পালানোয় রীতিমত ঘুম উড়েছে বাবা মায়েরও। এক সময় সহ্যের বাঁধ ভেঙে যায়। মা-বাবা ছেলেটিকে রেখে আসেন কলকাতায় তার পিসির বাড়ি। গার্ডেনরিচেই থাকেন তিনি। সেখান থেকে পালিয়েই এই কীর্তি ঘটায় ওই দুরন্ত বালক।পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই আরা জেলায় যোগাযোগ করে বালকের মা-বাবাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা কলকাতায় এলে শিশু কল্যাণ সমিতি বালকটিকে মা-বাবার হাতে তুলে দেবেন বলে জানান হয়েছে।