আজ খবর ডেস্ক- তিনি অনন্ত জল্পনার উৎস। সুভাষ ঘরে ফিরেছিলেন নাকি “ঘরে ফেরে নাই”? এই প্রশ্নে এখনও আন্দোলিত হয় দেশজ রাজনীতি! আবারও তা প্রমাণিত। এবার কেন্দ্রকে সরাসরি সেই প্রসঙ্গে জবাব দিতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। শুধু উত্তর নয়, দিতে হবে তথ্য প্রমাণ ও।
 

সুভাষচন্দ্র বসু জীবিত না মৃত? এ নিয়ে তথ্য জানাতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে আদালত জানিয়েছে যে, নেতাজি জীবিত না মৃত তা আট সপ্তাহ অর্থাৎ ২মাসের মধ্যে একটি হলফনামায় জানাতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে।

কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন জনৈক হরেন বাগচী। একইসঙ্গে , ভারতীয় টাকায় নেতাজির ছবি ব্যবহার করা যায় কি না, তা-ও কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি। সে মামলার শুনানি ছিল সোমবার। আবেদনকারীর বক্তব্য খতিয়ে দেখে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজশ্রী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে মামলাকারীর আবেদন মেনে নিয়ে আদালতের আরও নির্দেশ, ভারতীয় টাকায় নেতাজির ছবি ব্যবহার করা যায় কি না, সে বিষয়ে হলফনামা মারফত মতামত জানাতে হবে কেন্দ্রকে।

নিজের আবেদনে হরেন বাগচীর দাবি, কেন্দ্র থেকে শুরু করে আম জনতা— সকলেই নেতাজিকে যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করছেন। অথচ তিনি জীবিত না মৃত, তা নিয়ে কেন তথ্য প্রকাশ করছে না কেন্দ্র? নেতাজি সংক্রান্ত মোট কত ফাইল প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত, তা-ও জানতে চেয়েছেন আবেদনকারী। মহাত্মা গান্ধীর ছবির মতই নেতাজির ছবিও ভারতীয় টাকায় ব্যবহার করা যায় কি না, সে বিষয়ে ভারত সরকারের মতামত জানতে চেয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্ট তাইওয়ানের তাইহোকু বিমান দুঘর্টনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল কি না, তা নিয়ে তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই। এমনকি, পরে উত্তর প্রদেশে অন্য রূপে কি ফিরে এসেছিলেন সুভাষ? তাই নিয়েও বিস্তর জল্পনা চলেছে।

এর মধ্যেই, কয়েক মাস আগে নেতাজির ‘মৃত্যুবার্ষিকী’তে শ্রদ্ধা নিবেদন করে অস্বস্তিতে পড়েছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। সে সময় বিজেপি সাংসদ তথা মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের একটি টুইট ঘিরে সমালোচনার মুখে পড়েছিল বিজেপি। পোখরিয়ালের পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও নেতাজিকে নিয়ে টুইট করে ‘মরণোত্তর’ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছিল। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। সমালোচনা করেছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলও। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস হোক বা বিজেপি— কেন্দ্রের কোনও ক্ষমতাসীন দলই নেতাজির শেষ অবস্থা নিয়ে অনুসন্ধান করেনি। নেতাজি সংক্রান্ত যাবতীয় গোপন নথি প্রকাশ্যে আনার
মামলায় এই নির্দিষ্ট নির্দেশটি কেন্দ্রকে ফের সমস্যায় ফেলবে। এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। আদালতের এই নির্দেশের পর ভারতীয় টাকায় নেতাজির ছবি ব্যবহার করতে রাজি হলে বা অস্বীকার করলে, তা নিয়েও এক প্রস্থ বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *