আজ খবর ডেস্ক- চমকে দেওয়ার মত তথ্য সামনে এসেছিল কয়েক বছর আগে। ভারতের বিভিন্ন রেল স্টেশনে নাকি সব থেকে বেশি পর্ন সাইট ঘাঁটাঘাটি হয়। আর, পুরোটাই হয় একদম বিনামূল্যে। এর পরেই কিছু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়েছিল ভারতীয় রেল। এবার নতুন বছরে নতুন সিদ্ধান্ত।
এত দিন ছোট-বড় মিলিয়ে সারা দেশে ৬০৭১টি স্টেশনে বিনা পয়সায় ওই পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছিল বলে রেলটেল সূত্রে খবর। হাওড়া, শিয়ালদহ-সহ কলকাতা এবং তার আশপাশের প্রায় সব স্টেশনেই সেই সুযোগ ছিল।
রেল-কর্তৃপক্ষ স্থির করেছে, এ বার থেকে সারা দিনে মাত্র প্রথম আধ ঘণ্টা নিখরচার ওয়াইফাই পরিষেবা দেওয়া হবে। তার পরে ওই পরিষেবা নিতে গেলে টাকা লাগবে বলে জানিয়েছে রেল।
গুগ্ল এত দিন বিভিন্ন স্টেশনে নিখরচায় ওয়াইফাই পরিষেবা দিচ্ছিল। এই বিষয়ে রেলের সঙ্গে ৫ বছরের চুক্তি হয়েছিল তাদের। রেল সূত্রের খবর, দু’বছর আগে সেই চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পরে গুগ্ল আর তা পুনর্নবীকরণ করায়নি। তারা যুক্তি দেয়, বিনা পয়সায় ওই পরিষেবা দিতে গিয়ে তাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল।
তার পর থেকে রেলের নিজস্ব টেলিকম সংস্থা রেলটেল ওই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয়। তারাও বিনামূল্যে ওই পরিষেবা দিতে শুরু করে। কিন্তু এর ফলে বিরাট অঙ্কের ডেটা খরচ হতে থাকে। অনেকে বিনা পয়সার ওয়াইফাইয়ের সুযোগ নিয়ে সিনেমা ডাউনলোড করতে শুরু করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
রেল জানিয়েছে, সব স্টেশনে ওয়াইফাই পরিষেবা দিতে মাসে ৯৭.২৫ টেরাবাইট ডেটা খরচ হচ্ছে রেলটেলের। তার পরেই রেল সিদ্ধান্ত নেয়, দিনে প্রথম আধ ঘণ্টার পরে নিখরচার ওই পরিষেবা দেওয়ার পরে ফের সেই সুযোগ নিতে চাইলে নির্দিষ্ট হারে টাকা খরচ করতে হবে।
ঠিক হয়েছে, প্রথম ৩০ মিনিটের পরে ১০, ১৫, ২০, ৩০, ৪০, ৫০ এবং ৭৫ টাকার ডেটা প্যাক থাকবে। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ডেটা প্যাক বেছে নিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে। এর ফলে অনলাইনে ট্রেনের সময়সূচি, আসন সংরক্ষণের তথ্য ছাড়াও লাউঞ্জ বা ওয়েটিং রুম বুকিং সংক্রান্ত নানা কাজে যাত্রীদের সুরাহা হবে বলে রেলের দাবি।
ধাপে ধাপে সারা দেশে কমবেশি ৮ হাজার স্টেশনকে ওয়াইফাই পরিষেবার আওতায় আনতে চায় রেল। তবে ওই পরিষেবা থেকে আয়ের বিকল্প সম্ভাবনা এখনও দেখা যাচ্ছে না। তাই ব্যবহারকারীদের কাছ থেকেই খরচের খানিকটা আদায়ের ব্যবস্থা হচ্ছে। বড় মাপের ১২৮৭টি স্টেশনে রেলটেল ওই পরিষেবা দিচ্ছে। অন্যান্য স্টেশনে রেলটেল পরিকাঠামো তৈরি এবং পরিষেবা দেওয়ার কাজ করলেও তার খরচ হিসেবে বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার ‘সামাজিক কর্তব্য’ খাতে বরাদ্দ টাকার একাংশকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
এর আগে প্রথম সারির দ্রুতগামী মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের কামরায় ওয়াইফাই চালু করার কথা জানিয়েও বিপুল খরচের দরুন সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছিল রেল। পরিকাঠামো তৈরির বিপুল খরচের তুলনায় আয়ের সুযোগ না-থাকায় সাময়িক ভাবে ওই পরিকল্পনা স্থগিত রাখা হয়েছে।
নতুন বছরে তাই “ফেল কড়ি মাখো তেল” পদ্ধতিতে চলতে চাইছে ভারতীয় রেল। একই সঙ্গে, কলকাতা মেট্রো রেলের তরফে ২০ টি স্টেশনে পাওয়ার ব্যাঙ্ক চালু করা হচ্ছে। সহযোগিতায় ব্যাঙ্গালোরের একটি বেসরকারি সংস্থা। কিউ আর কোডের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে এই পরিষেবা পাবেন যাত্রীরা।