আজ খবর ডেস্ক- লোকসভা ভোট ২০২৪ এ। গঙ্গা ও যমুনা দিয়ে এর মধ্যে ঢের জল গড়ানো বাকি! কিন্তু বিরোধী জোট তৈরির চেষ্টা যে আপাতত বিশ বাঁও জলে, তা অন্তত স্পষ্ট। একদিকে যখন কংগ্রেস নেতৃত্বকে কার্যত “অযোগ্য” বলে কড়া আক্রমণ করছে ঘাসফুল শিবির। অন্যদিকে ১০ জনপথের বিরোধী জোটের নৈশভোজে তৃণমূল কে ব্রাত্য করলেন সোনিয়া গান্ধী। অর্থাৎ, এর থেকে কী সিদ্ধান্তে আসছে রাজনৈতিক মহল? শুরুর আগেই ভেস্তে যাওয়ার পথে বিরোধী ঐক্য।
এতো সবে গল্পের শুরু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুম্বাই সফরে সময় দেন নি শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করা এনসিপি সুপ্রিমো শারদ পাওয়ার এবং শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। বৈঠক শেষে, শারদ পাওয়ারকে পাশে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ‘ইউপিএ’ বলে আর কিছু নেই। অথচ সেই শারদ পাওয়ারকেই বিজেপি বিরোধী জোট তৈরির দায়িত্ব দিলেন সোনিয়া গান্ধী।

সোনিয়া গান্ধীর বাড়িতে বিরোধী নেতাদের বৈঠকে হাজির ছিলেন এনসিপি সুপ্রিমো শারদ পাওয়ার, সিপিএম-এর সীতারাম ইয়েচুরি, ন্যাশনাল কনফারেন্সের ফারুক আবদুল্লা, ডিএমকের টি আর বালু, শিবসেনার সঞ্জয় রাউত, কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে। বৈঠকে বিজেপি বিরোধী জোটকে জোরদার করার পাশাপাশি রাজ্যসভা থেকে সাংসদদের সাসপেনশনের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয় বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। এই বৈঠকে নাকি বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জোটের প্রসঙ্গও উঠেছে। সূত্র মারফত আরও জানা গেছে, রাহুল গান্ধী বিরোধী নেতাদের একসঙ্গে হওয়ার ঘটনায় খুশি। এই ধরনের বৈঠক ঘনঘন করার ওপরেও জোর দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ, তৃণমূলকে এড়িয়েই বিজেপি বিরোধী জোট চাইছেন এই নেতারা। আপাতত তৃণমূলের হাতে থাকল শুধুই ‘আপ’।

মঙ্গলবার সন্ধের বৈঠকে দেখা যায়নি তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধিকে। কংগ্রেস সূত্রে খবর এই বৈঠকে তৃণমূলকে আমন্ত্রণই জানানে হয়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেত্রী যেভাবে কংগ্রেসকে সরিয়ে প্রধান বিরোধী হওয়ার চেষ্টা করছেন, সেই পরিস্থিতিতে ওই বৈঠকে তৃণমূলকে না ডাকাটা নিহসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
জানা গেছে, সোনিয়ার বাড়িতে বৈঠকে শারদ পাওয়ার ১লা ডিসেম্বরের বৈঠক নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। এর আগে শিবসেনাও তৃণমূলের থেকে নিজেদেরকে আলাদা করে নিয়েছিল। এবার শারদ পাওয়ার সেই পথে হাঁটলেন। সূত্রের আরও খবর, বৈঠকে শারদ পাওয়ারের পাশাপাশি সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি মমতার বিজেপি বিরোধী জোট নিয়ে কটাক্ষই করেছেন। বৈঠকে সনিয়া গান্ধী রাজ্যসভা থেকে ১২ সাংসদের সাসপেনশন নিয়ে কথা বলার জন্য শারদ পাওয়ারকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

এমনকি, সোনিয়া গান্ধীর বাড়িতে হওয়া বৈঠকে তৃণমূলের অবস্থান নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলো এবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন। কারণ, বৈঠকে যাওয়া নেতারা মনে করছেন তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে এব্যাপারে কথা বলাটা জরুরি। বিশেষত, প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এ রাজ্যে শিল্প সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রণ জানান মমতা। শিল্পপতি গৌতম আদানির সঙ্গে মমতার বৈঠক ও খানিকটা ফাটল ধরেছে বিরোধী ঐক্যে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *