আজ খবর ডেস্ক : রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে আগেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল, পুরভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত না মানলে পদক্ষেপ নেবে দল। সেই মতোই রতন মালাকার সহ আরও দুই প্রার্থীকে সাবধান করেছিল সবুজ শিবির। রতন মালাকার শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। তবে বারণ করা সত্তেও দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দলের হয়ে দাঁড়ানোয় সদ্যপ্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায় ও সচ্চিদানন্দ বন্দোপাধ্যায়কে বহিস্কার করল তৃণমূল কংগ্রেস। ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পুরা ভোটে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তনিমা।অন্যদিকে ৭২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন সচ্চিদানন্দ বন্দোপাধ্যায়।
প্রথমে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে তনিমা চট্টোপাধ্যায় নাম ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। পরে দেবাশীষ কুমারের অফিস থেকে দলের প্রতীক হস্তান্তরের কাগজও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু পরমুহুর্তেই সেই প্রতীক ফিরিয়ে নেওয়া হয় তনিমার কাছ থেকে। তনিমাকে প্রার্থী করায় রাতভর পার্টি অফিসের সামনে ধর্না দিতে দেখাগিয়েছিল ওই ওয়ার্ডের অন্য ত্যাগ দাবিদার প্রার্থী সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়কে। শেষ পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসেবে সুদর্শনার নামই মঞ্জুর করে তৃণমূল। তারপরই দলের প্রতি অভিমান বসত মৃত দাদা সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর ছবি হাতে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন চট্টোপাধ্যায়। শুরু করেন প্রচার।
অন্যদিকে সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। ভবানীপুরের অধীনে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভাতৃবধূ কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়। তারপরই কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান রতন মালাকার। দলের তরফ থেকে এই তিন প্রার্থীকে নির্দলের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। দলের অনুগত রতন মালাকার পরবর্তী সময় নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পেরিয়ে গেলেও নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন তনিমা ও সচিদানন্দ। রতন মালাকারের মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর সচিদানন্দ বলেন, ” এখন মনোনয়ন তোলা মানে মানুষের সঙ্গে বেইমানি করা। রতন কেন করলো বুঝলাম না।”
তারপরই দলের তরফ থেকে দুই প্রার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তৃণমূল গোটা দলকেই যেন বাঁশটা দিতে চাইল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ১১৩ টি পৌরসভা ও কর্পোরেশনে এখনও ভোট বাকি। ফলত ওই দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে দল যদি কড়া পদক্ষেপ না নিত, তবে জেলা ও মফস্বলেও আগামী দিনে এই ধরনের ঘটনা বাড়তে পারত। তাই দলের তরফ থেকে বাঁধন অক্ষুণ্ণ রাখতেই এই পদক্ষেপ নিল দল।