আজ খবর ডেস্ক : তৃণমূলের দুই অভিনেত্রী সাংসদ নুসরত জাহান রুহি এবং মিমি চক্রবর্তীকে শোকজ করল তৃণমূল কংগ্রেস। সংসদ অধিবেশনে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না তাঁরা। যদিও চলতি শীতকালীন অধিবেশনে একবার তাঁদের কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল সেলফিতে। তবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের নের্তৃত্বে সংসদীয় দলের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত জাহান। সেই কারণেই মেজাজ গরম অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের। তাই দুইজনকেই শোকজ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল তৃণমূল।
জানা গিয়েছে, শুটিংয়ের জন্য রাজস্থান গিয়েছেন অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। তাই তিনি বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবে নুসরতের বৈঠকে না আসার পিছনে কি কারণ রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট ভাবে কিছু জানা যায়নি।তৃণমূলের তরফ থেকে দলের সংসদদের উদ্দেশ্যে আগেই বার্তা দেওয়া হয়েছিল যে, সকাল ১০ টায় তৃণমূলের সংসদীয় দলের দপ্তরে পৌছতে হবে। কিন্তু সেই বার্তা সম্পর্কে জানতেনই না নুসরত। তৃণমূলের সব সংসদ যখন সাংসদ ভবন চত্ত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তখন সেন্ট্রাল হলে বসে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তৃতা শুনছেন নুসরাত। অথচ সেদিন মোদীর বক্তৃতা বয়কট করারই কর্মসূচী ছিল তৃণমূল সহ অন্যান্য বিরোধীদের।
তাছাড়া এর আগেও অভিনেত্রী সাংসদ নুসরত জাহানের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল দলকে। তাছাড়া তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় আগেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, সংসদে এবং সাংসদদের কোনও বৈঠকে ৯৭ শতাংশ উপস্থিতি বাধ্যতামুলক । অন্যথা হলে কড়া পদক্ষেপ নেবে দল। তারপর বৈঠকে অভিষেক আরও একবার দলের রীতিনীতির বিষয় নিয়ে সাংসদের সঙ্গে কথা বলেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামীদিনে কোন পথে সংসদে তৃণমূল কার্যবিধি পরিচালিত হবে, সেই নিয়েও আলোচনা করা হয়েছিল। পাশাপাশি কী কারণে নুসরত ও মিমি ওই বৈঠকে আসেননি সেই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন অভিষেক। যদিও এই নিয়ে এখনও অবধি কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি ওই দুই সাংসদ।
তবে ওই বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ এবং গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফালেইরোও উপস্থিত ছিলেন না। তবে তাকে নিয়ে এই ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না দল। কারণ ফালেইরো আগামী বছরের আসন্ন গোয়া বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে এই মুহূর্তে ব্যস্ত আছেন।বৈঠকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী উপস্থিত ছিলেন না। তবে সেই বিষয় তৃণমূল সূত্রে জানান হয়েছে, ” দিব্যেন্দু অধিকারি শুভেন্দু অধিকারীর ভাই। তিনি বৈঠকে উপস্থিত না থাকলেও দল তাঁর উপর মনোযোগ দেবে না। সেই কারণেই তাঁকে কোনরকম নোটিশ পাঠানো হয়নি। অন্যদিকে ফালেইরোও গোয়ায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভিত প্রস্তুত করতে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই তাঁকেও নোটিশ পাঠানো হয়নি। তবে মিমি ও নুসরাত এর নিয়ম লঙ্ঘন করায় তাঁদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে।”
সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, ” এই মুহূর্তে তৃণমূলের অন্যতম লক্ষ্য হলো ১২ জন বরখাস্ত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে লোকসভার অধিবেশন বয়কট করা। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেককেই সংসদে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।”সেইসঙ্গে এই বিষয়টিও তৃণমূলের তরফ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, কংগ্রেসের নেতৃত্বে যেকোনো রকম কর্মসূচিতে যোগ দেবে না তৃণমূল। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী তৃণমূলকে ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সেইসঙ্গে কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচি বয়কট করে, বিজেপির সঙ্গে তাদের সমঝোতার বিষয়টি স্পষ্ট করে দিচ্ছে। তবে এই বিষয় তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় পাল্টা জবাবে জানিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের এমন কোনও জোট নেই, তাই কংগ্রেসের যে কোনও কর্মসূচিতে তান্ডার্ন যোগদান ‘বাধ্যতামূলক নয়’।