আজ খবর ডেস্ক : বাঙালির জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ দুর্গাপুজো। এবার সেই পুজো প্রিয় বাঙালির জন্য সুখবর। ইউনেস্কোর ‘ইনট্যানজিবল হেরিটেজের’ স্বীকৃতি পেল বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো। গত ১৩ ই ডিসেম্বর থেকে ১৮ ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত হয়েছে ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির ১৬ তম অধিবেশন। সেই অধিবেশনের তৃতীয় দিনে ‘কলকাতার দুর্গাপুজো’-কে ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটির তালিকায়ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।পশ্চিমবঙ্গে নিযুক্ত কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ” এই উৎসব ধর্ম, লিঙ্গ এবং সমস্ত অর্থনৈতিক স্তরের বাধাগুলি পেরিয়ে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করার পদ্ধতির জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।”
ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে এই খবর প্রকাশ করে লেখা হয়েছে, “দুর্গা পুজাকে ধর্ম ও শিল্পের সর্বজনীন মিলন ক্ষেত্রের সর্বোত্তম উদাহরণ হিসাবে দেখা হয় এবং সহযোগী শিল্পী ও ডিজাইনারদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ক্ষেত্র হিসাবে দেখা হয়। এই উৎসব শহুরে এলাকায় বড় আকারের পালিত হয় এবং মণ্ডপগুলির পাশাপাশি রয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢাক এবং দেবীর পূজা।” এই উৎসব চলাকালীন সমস্ত শ্রেণির মানুষ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আনন্দের আতিশয্যে মেতে ওঠেন। পুজোকে কেন্দ্র করে যে ধর্মীয় সম্প্রীতির বাতাবরণ তৈরি হয়, তা ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়েছে ইউনেস্কোর দরবারে।
চলতি বছরে সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দপ্তর কর্তৃক কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠান হয়। পরবর্তীকালে রাজ্যের ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করে কেন্দ্র এবং বিষয়টি ইউনেস্কোর কাছে পেশ করা হয়। এরপরই আজ ইউনেস্কোর নয়াদল্লি অফিসের টুইটার হ্যান্ডেলে এই স্বীকৃতির কথা নিশ্চিত করা হয়।
এর আগে ২০১০ সালে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার ছৌ লোকনৃত্য এই স্বীকৃতি পেয়েছিল। একই সঙ্গে সেবছর স্বীকৃতি পেয়েছিল কেরলের মুদিয়েত্তু লোক নৃত্যনাট্য এবং রাজস্থানের কালবেলিয়ে লোকগীতি। পাশাপাশি ইতিমধ্যেই কুটিয়াত্তম সংস্কৃত থিয়েটার, রামলীলা, বৈদিক জপের ঐতিহ্য এবং লাদাখের বৌদ্ধ নাম-জপও এই সম্মানে স্বীকৃত হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালে কুম্ভ মেলাকে এই হেরিটেজের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। তার আগে ২০১৬ সালে যোগচর্চাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল । তারও কিছু আগে ২০১৪ সালে পঞ্জাবের ঐতিহ্যবাহী পিতল এবং তামার কারুকাজ সাংস্কৃতিক হেরিটেজের স্বীকৃতি পায়। এছাড়া ২০১৩ সালে মণিপুরের সংকীর্তন অনুষ্ঠানের গানকেও ইউনেস্কোর দ্বারা হেরিটেজের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।