আজ খবর ডেস্ক- করোনা আবহে মাত্র দেড় মাসের জন্য খোলা হয়েছিল রাজ্যের স্কুল। “তৃতীয় ঢেউ”য়ের (Third wave) আশঙ্কায় তাও বন্ধ হয়ে যায়। আপাতত খানিকটা হলেও স্থিতিশীল করোনা গ্রাফ। কিছু কিছু বিধিনিষেধ বহাল রেখে শর্তসাপেক্ষে খোলা হয়েছে দোকানপাট, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, সিনেমা হল, জিম, পার্লার।
বিয়ে বাড়ি বা অন্যান্য অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও চাড়ের পরিমাণ বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ফের কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হল। আবেদন, খোলা হোক রাজ্যের স্কুল, কলেজ।

স্কুল খোলা নিয়ে (School Reopen) কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) দায়ের দ্বিতীয় জনস্বার্থ মামলায় আবেদন করা হল “স্কুল খোলা নিয়ে পলিসি তৈরি করুক রাজ্য সরকার (West Bengal Government)।”
মামলা করলেন, এআইএসএফ(AISF) রাজ্য সভাপতি সৌমেন হালদার। 
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনার ধাক্কায় প্রথমবার বন্ধ হয় স্কুল, কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেই ভীতি কাটিয়ে গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে শর্তসাপেক্ষে স্কুল খোলা হয় এই রাজ্যে। শুরু হয় কলেজের ক্লাসও।
কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই ফের বন্ধ হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা। কোভিড বিধি মেনে গত বছর ১৬ই নভেম্বর থেকে স্কুল-কলেজে ক্লাস শুরু হয়। শর্তসাপেক্ষে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি মেলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের। কিন্তু, তৃতীয় ঢেউয়ের আবহে গত ৩রা জানুয়ারি থেকে রাজ্যে ফের বন্ধ হয় স্কুল-কলেজ। 

মামলাকারীর পক্ষে এদিন তাঁর আইনজীবী আদালতে আবেদন জানান, “স্কুল খোলা নিয়ে রাজ্য সরকার সুনির্দিষ্টভাবে একটা পরিকল্পনা করুক। কোভিড পরিস্থিতিতে কীভাবে স্কুল খোলা রাখা যায় তা নিয়ে একটা নীতি তৈরি করুক রাজ্য। আদালত অবিলম্বে নির্দেশ দিক। এরাজ্যে স্কুল খোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ৫০ শতাংশ হোক বা অন্যান্য শর্তসাপেক্ষে হোক, অনেক কিছুই এই পরিস্থিতিতে খোলা রয়েছে। সেখানে শুধুমাত্র স্কুল বা কলেজ এগুলো কেন বন্ধ থাকবে?”
মামলাকারির আইনজীবী রাজনীল মুখার্জি আরও উল্লেখ করেছেন, “এতে সার্বিকভাবে পড়ুয়াদের ক্ষতি হচ্ছে। প্রায় ২বছর হতে চলল শিক্ষাব্যবস্থা মারাত্মক সঙ্কটজনক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। মাঝে কিছু দিন স্কুল খুললেও কলেজ বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত বারবার নেওয়া হয়েছে তাতে পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পড়ুয়ারা। একইসঙ্গে বিনামূল্যে শিক্ষার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পড়ুয়ারা। কারণ, অনলাইন ক্লাসের জন্য ইন্টারনেটের খরচ বাড়ছে। সেটাও পড়ুয়ারা পাচ্ছে না। এক্ষেত্রেও সরকারের নীতি তৈরির করা উচিত।’’

রাজ্যে স্কুল-কলেজ খোলার দাবিতে চলতি সপ্তাহে আরেকটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলাটি দায়ের করেছিলেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আদালতে বলেছিলেন, “সংবিধানে সবার জন্য বিনামূল্যে শিক্ষার অধিকারের কথা বলা আছে। বর্তমানে অনলাইনে পড়াশোনার জন্য পড়ুয়াদের মধ্যে ডিজিটাল বিভাজন করা হচ্ছে। কারণ, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, হাই স্পিড ইন্টারনেট সবার কাছে থাকে না। এই ব্যয়ভার বহনের ক্ষমতাও প্রত্যেকের থাকে না। এই পদ্ধতিতে পড়াশোনা চালাতে হলে রাজ্যের সব ছাত্র-ছাত্রীদের ই-লার্নিং এর সমস্ত গ্যাজেটের খরচ রাজ্য সরকারকে বহন করতে হবে।’’

শিক্ষক মহলের একাংশ প্রথম থেকেই স্কুল কলেজ শর্তসাপেক্ষে খোলার বিষয়ে সরব হয়েছিলেন। কিন্তু যেহেতু ১৮ বছরের নিচেপড়ুয়াদের একটা বড় অংশের এখনও ভ্যাকসিন নেওয়া হয়নি, সেই কারণে প্রশাসনের তরফে এই বিষয়ে নতুন কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।
এই বিষয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হওয়ার পর আদালত কী বলে, আপাতত সে দিকেই নজর রাখছে ওয়াকিবহাল মহল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *