আজ খবর ডেস্ক : করোনাকালে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অতিমারীর সঙ্গে মানুষের কঠিন লড়াইয়ের পরিচায়ক হয়ে উঠেছে মাস্ক। ডিসপোজেবল ৩-প্লাই মাস্ক হোক বা কাপড়ের , বৈজ্ঞানিক ভাবে দেখা গিয়েছে, যে কোনরকম মুখের আবরণই কোভিড সংক্রমণ রুখতে সক্ষম । এমনকি অতিমারীর নৃশংসতা বহু মানুষের মাস্কের প্রতি মানসিকতা পরিবর্তন করে দিয়েছে। যেমন এক সময় মাস্ক একেবারেই না পড়তে চাওয়া নর্ডিকদের মধ্যে ৯৬ শতাংশ মানুষ করোনা কেটে গেলেও আজীবন মাস্ক পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।সংক্রমণ রুখতে মাস্কের ভূমিকা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এই মাস্কের সঙ্গে প্রযুক্তিজুড়ে এর উন্নতির জন্য, বহুবিধ প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন বিজ্ঞানী, গবেষকেরা।
উটপাখির অ্যান্টিবডি :
জাপানের গবেষকরা, অতিবেগুনী রশ্মির দ্বারা কোভিড-১৯ সনাক্ত করতে উটপাখির অ্যান্টিবডি ব্যবহার করছেন। তাঁদের মতে, উপসর্গবিহীন কেসগুলি শনাক্ত করতেও এটি বিশেষভাবে সহায়তা করবে।কিয়োটো প্রিফেকচারাল ইউনিভার্সিটির ইয়াসুহিরো সুকামোতো এবং তার দল তাঁদের পূর্ববর্তী গবেষণায় জানা গিয়েছে, উটপাখির কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। তাই তার উপর ভিত্তিতে করেই একটি মাস্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গবেষকেরা।
ঠিক করা হয়েছে, মাস্কের ফিল্টারটিতে থাকে উটপাখির অ্যান্টিবডির আবরণ । পরীক্ষায় দেখা গেছে ব্যাক্তির দেহে ভাইরাস উপস্থিত থাকলে, অতিবেগুনী রশ্মির নিচে স্প্রে করা রাসায়নিক জ্বলতে থাকে । তাই এবার স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠবে এমন ফেস মাস্ক তৈরি করা নিয়ে কাজ করছেন তাঁরা।
ন্যানোম্যাটেরিয়ালগুলিতে মাইক্রোফ্লুইডিক্স :
যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা কোভিড সংক্রমণ রুখতে একটি মাস্ক তৈরি করতে গিয়ে, তাতে ন্যানোম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করেছেন।অন্যদিকে অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা মাইক্রোফ্লুইডিক্স নামে একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। তাতে রূপালী ন্যানো পার্টিকেল ব্যবহার করা হয়েছে। যা মুখোশগুলিকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে সক্রিয় বাধাসৃষ্টি করতে পারে এবং মাস্কের কার্যকারিতা বাড়ে।
ফ্রিজ-ড্রাইড সেলুলার মেশিনারি :
মাস্কের কার্য ক্ষমতা জোরদার করতে এমআইটি এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীরা কোভিড সনাক্ত করার জন্য মাস্কের সঙ্গে ছোট, নিষ্পত্তিযোগ্য সেন্সর এম্বেড করেছেন।এই ফেস মাস্কগুলির লক্ষ্য হল ৯০ মিনিটের মধ্যে মাস্ক পড়া ব্যাক্তি কোভিড আক্রান্ত কি না তা নির্ণয় করা। প্রসঙ্গত, এই ফ্রিজ-ড্রাইড সেলুলার মেশিনারি নির্মাতারা আগে ইবোলা এবং জিকা রোগ নির্ণয়ের জন্য ব্যবহার করেছিলেন। এই নতুন ভাবনার ফলাফল ইতিবাচক হওয়ায় এবার নতুন গবেষণায়, গবেষকরা সেন্সরগুলিকে ল্যাব কোটগুলিতেও অন্তর্ভুক্ত করতে প্রয়াসী হচ্ছেন।