আজ খবর ডেস্ক- সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল জনপ্রিয় ছিল #mmlive।
বন্ধ হয়ে গেল সেই ফেসবুক লাইভ। নিঃসন্দেহে ভক্তদের জন্য হতাশাজনক খবর।
আগামী ৩০শে জুন পর্যন্ত #facebook, #instagram সহ যাবতীয় সমাজ মাধ্যম বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিলেন মদন মিত্র। ফেসবুক লাইভ করে নিজেই জানিয়ে দিলেন সে কথা।
তৃণমূল কংগ্রেসের কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র ফেসবুক লাইভে এলেই চড়চড়িয়ে বাড়ত ভিউয়ারশিপ। কিন্তু সেই সব কিছুকে অবহেলায় উড়িয়ে দিয়ে সমাজ মাধ্যম থেকে এই আপাত সন্ন্যাস কেন নিলেন মদন মিত্র? তাই নিয়ে চলছে জোর জল্পনা।
বৃহস্পতিবার ফেসবুক লাইভে এসে এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেও কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রেখেছেন মদন মিত্র। বরং কিঞ্চিৎ হেঁয়ালি করে বলেছেন, “বেশি ফেসবুক করলে ফেস নষ্ট হয়”।
যদিও তৃণমূল অন্দরের খবর, সম্প্রতিক সময়ে একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন মদন। তাই এবার সরাসরি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে তাঁকে। বলা হয়েছে, কথা কম বলে বিধায়ক হিসেবে নিজের কাজ বেশি করে করতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে ও এই ফেসবুকলাইফ করা নিয়ে মদন মিত্র কে “ধমক” দিয়েছিলেন খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মদন মিত্র আক্ষরিক অর্থেই কামারহাটির “কালারফুল” বিধায়ক। হয়তো সেই কারণেই সদ্য হয়ে যাওয়া ভবানীপুর উপনির্বাচনের বৈঠকে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে বলেছিলেন, একটু কম রঙিন থাকতে। কিন্তু ইদানিংকালে পরপর বেশ কয়েকবার ফেসবুক লাইভে এসে মদন মিত্র নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেস ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে একাধিক “বিতর্কিত” মন্তব্য করেন। মদনের কটাক্ষ থেকে বাদ যাননি, রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও।
বৃহস্পতিবার লাইভে এসে মদন মিত্র বলেন, “আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত আমি কোন ও ফেসবুক লাইভ, ইনস্টাগ্রাম বা কোনওভাবেই অন্য কোনও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আসব না। আমার কাছে কোথা থেকে একটা নির্দেশ এসেছে যে, মদন মিত্র তুমি ফেসবুক ছেড়ে দাও। বেশি ফেসবুক করো না। বেশি ফেসবুক করলে তোমার ফেসলুকের যে গ্ল্যামার তা নষ্ট হয়ে যাবে। যখন নির্দেশ এসেছে, আমি করব না।”
ক্ষোভ যে যথেষ্ট রয়েছে তা বোঝা গিয়েছে মদনের পরবর্তী মন্তব্য। তিনি আরও বলেন, ” আমি ফেসবুক করি তো তৃণমূলের দয়ায়। আমার ফেসবুক মদন মিত্র বা বিধায়ক বলে মানুষ দেখে না। দলের সাধারণ কর্মী হিসেবেই আমার কথা শোনে। তাই আমি তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলছি, একদম ব্যাস খতম। মদন মিত্র আর ফেসবুক, ইনস্টা করবে না”।
সম্প্রতি এক তরুণীর সঙ্গে মদন মিত্রর একাধিক ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত ভাইরাল হয়ে পড়ে। পরে অবশ্য মৌমিতা মন্ডল নামের ওই তরুণী নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জানান, তিনি ছোটবেলা থেকেই মদন মিত্রের ফ্যান। একটি অনুষ্ঠানে মদন মিত্র কে সামনে পেয়ে কিছু সেলফি তুলেছিলেন। তা নিয়ে “নোংরা” রাজনীতি হচ্ছে।
এর আগে দলের কাছে কোন কথা বলতে গেলে কি উপায় বলা যাবে তা নিয়েও বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন মদন মিত্র। ফেসবুক লাইভে তিনি বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছনো যায় না। টপসিয়ার তৃণমূল অফিস ভেঙে ফেলা হয়েছে। এবার থেকে দরকার পড়লে তিনি নাকি নাক তলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে তাঁর প্রয়োজনীয় কথা জানাবেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, এরপর থেকেই নড়েচড়ে বসে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বার্তা পাঠান হয় মদন কে।
তবে বৃহস্পতিবার সবশেষে মদন মিত্র জানিয়েছেন, ফেসবুক লাইভে এসে সাধারন মানুষের সঙ্গে আর আড্ডা না মানলেও তৃণমূলের দলীয় কোনও কর্মসূচি অথবা প্রকল্পের বিষয়ে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি তাঁর বক্তব্য জানাবেন।