আজ খবর ডেস্ক : গতকালই শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু করোনা আবহে এই বছরের মতো বন্ধ বীরভূমের ঐতিহ্যশালী জয়দেব-কেঁদুলির মেলা। তাই কোভিদ বিধি মেনে অল্প কিছু জনের জন্য পুণ্যস্নানের ব্যবস্থা করার , ঘোষণা করল বীরভূম প্রশাসন। বীরভূম প্রশাসনের তরফ থেকে জানান হয়েছে, কোভিড সংক্রমণের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে, তাতে কোনভাবেই বেশি জমায়েতের অনুমতি দেওয়া যাবে না। তাই খুব কম সংখ্যক পূণ্যার্থীদের স্নানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে বন্ধ থাকবে বাউলের আখড়াগুলি।
বোলপুরের মহকুমা শাসক অয়ন নাথ জানান, বর্তমান করোনা পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে কোনভাবেই মেলা করা সম্ভব নয়। প্রতিবছর এই মেলা উপলক্ষে লক্ষ লক্ষ মানুষ জয়দেবে ভিড় করেন। এত মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলেই, এই বছরের মত মেলা বন্ধ করা হল।
প্রসঙ্গত, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার মাঝ বরাবর বয়ে চলা অজয় নদীর ধারে অবস্থিত কেঁদুলি গ্রাম। সেখানের এই ঐতিহ্যবাহী মেলা সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক মূল্যবান ইতিহাস। বলা হয়, রাজা লক্ষণ সেনের সভাকবি জয়দেবের বাড়ি ছিল এই গ্রামে। যদিও এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে অনেকেই বলেন জয়দেবের আদি নিবাস ওড়িশায়। শোনা যায়, কবি জয়দেব প্রতিবছরই মকর স্নান এর জন্য মকর সংক্রান্তির দিন কাটোয়ার গঙ্গায় যেতেন। এমনই এক মকর সংক্রান্তির পূন্য তিথিতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন হঠাৎ।
একসময় অসুস্থতা এতটাই বেড়ে যায় যে, তাঁর পক্ষে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কাটোয়ার গঙ্গায় যাওয়া সম্ভব হয় না। সেই রাতেই তিনি স্বপ্ন দেখেন, মা গঙ্গা উজান বেয়ে অজয় নদে এসে মিলিত হবেন। তাই অজয় নদী স্নান করলেই গঙ্গাস্নানের ফল পেতে পারবেন কবি জয়দেব। তারপর থেকে এই কাহিনীর উপর ভিত্তি করেই প্রতিবছর মকরসংক্রান্তির দিনে কেঁদুলির মেলাকে বাঙালিরা কবি জয়দেবের স্মৃতি তর্পণ-এর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন।