আজ খবর ডেস্ক : লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে বিতর্ক এই সমাজে বহুদিনের। এখনও পর্যন্ত যেই সমাজে নারী, পুরুষের বৈষম্য ঘোচানো সম্ভব না হয়নি, তার মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের গ্রহণযোগ্যতা অনেক দূরের কথা। তবে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে সমাজের কটূক্তি টলাতে পারেনি অমিতের আত্মবিশ্বাস। একই শরীরে নারী ও পুরুষ সত্তার বাস অমিত বিট্টু দের। কথায় নয়, কাজের মাধ্যমেই তৃতীয় লিঙ্গ নিয়ে সমাজের রক্ষণশীলতার শৃঙ্খল ভাঙতে বদ্ধপরিকর অমিত।অ্যান্ড্রোজেনাস মডেল অমিত বিট্টু দে।
নিজের শহরে বিশেষ কদর না পেলেও আন্তর্জাতিক মহলে মডেলিংয়ে বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন অমিত। গালের দাড়ি না কামিয়েও শাড়ি, গয়না, মেক আপে তিনি হয়ে ওঠেন অনন্যা।কনের সাজে সাজিয়ে তাঁর রূপে মেক আর্টিস্টদের কাজও যেন স্বার্থকতা পায়।স্বল্পবাসে অমিতের শরীরের ভাঁজ দেখে ঈর্ষান্বিত হতে পারেন যে কোনও নামী দামি মডেল। পুরুষ হয়েও এমন আকর্ষণীয় শরীরের অধিকারী যে কেউ হতে পারে তা অমিতকে না দেখলে সত্যিই বিশ্বাস করা যায় না। ব্রিটিশ ফ্যাশন ম্যাগাজিন ‘ইকুয়্যাল’-এর প্রচ্ছদে ইতিমধ্যেই ছবি প্রকাশিত হয়েছে নারীর সাজে অমিতের ছবি৷ অবশ্য নিজের শহরে এখনও প্রথম সারিতে জায়গা পাননি অমিত৷ তাই একমাত্র উপায় ইন্টারনেট।
বিদেশে বেশ জনপ্রিয় হলেও অ্যান্ড্রোজেনাস মডেলিং নিয়ে আমাদের দেশে খুব কম মানুষই এই নিয়ে মাথা ঘামান। তবে আন্তর্জাতিক মহলে এই নিয়ে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট পরিচিতি গড়ে ফেলেছে অমিত।কিছুদিন আগেই তাঁর ফোটো সিরিজ ‘To His Coy Mistress’ চারিদিকে সাড়া ফেলে দিয়েছিল। সিরিজের মূল বিষয়টি ছিল আমাদের দেশের LGBTQ+ সম্প্রদায়ের দ্বৈত জীবন এবং সংগ্রাম। যথেষ্ট প্রশংসা পায় সেই কাজ। নারী পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই ছবির মধ্যমণি হয়েছিলেন উঠেছিলেন তৃতীয় লিঙ্গের অমিত বিট্টু দে।
এক সাক্ষাৎকারে অমিত জানান, ছোটোবেলা থেকেই নিজের দুই বোনের সাজগোজ, সৌন্দর্য্য তাঁকে মুগ্ধ করত। তাই ছোট থেকেই ওদের মতোই হতে চাইতেন তিনি। কিন্তু সাহস করে সেই কথা বলতে পারতেন না। “লোকে কী বলবে” এই ভয়ই ঘিরে থাকত তাঁকে। কিন্তু সময়ই তাঁকে বুঝিয়ে দেয় যে, “কুছ তো লোগ ক্যাহেঙ্গে, লোগো কা কাম হ্যায় ক্যাহেনা।” আর শেষমেশ লোকের কথা গা থেকে ঝেড়ে ফেলে, নারীর সাজকে গায়ে তুলে নেন এই অ্যান্ড্রোজেনাস মডেল।তবে শুধু নীল বা গোলাপী নয়। অমিতরা বিশ্বাসী রামধনুর সাত রঙে। তাই সময় বিশেষে বেশভূষায় সেই রঙের ছোঁয়া তাঁর শরীরে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। চেতনার রঙে যেন সাতটি রঙে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।