আজ খবর ডেস্ক: চিকিৎসকরা বলছেন, শরীর টিকিয়ে রাখতে হাঁটার বিকল্প নেই। তবে ব্যস্ত শিডিউলে কখন হাঁটবেন, কেমন ভাবে হাঁটবেন– এসব নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চলছে। বিশেষত এই করোনা আবহে কমবেশি আমরা প্রত্যেকেই ঘরবন্দি। চলছে “ওয়ার্ক ফ্রম হোম” অর্থাৎ বাড়ি থেকে কাজ। ফলে একদিকে মুটিয়ে যাওয়া আর অন্যদিকে চার দেওয়ালের চৌহদ্দিতে আটকে থেকে বাড়ছে বিষন্নতা। অহরহ মনে প্রশ্ন জাগছে, মুক্তির উপায় কী?

প্রতিদিন হাঁটাহাঁটির অভ্যাস যাঁদের, তাঁদের অনেকেরই দিনের নির্দিষ্ট একটা সময়ে হাঁটা সম্ভব হয় না। আবার হাঁটার ধরণ ও অনেক সময় পাল্টে যায়। কখনও হাতে অঢেল সময়, ফলে আয়েসি ভঙ্গিতে অনেকটা পথ হাঁটা হয়। কোনওদিন হাতে সময় থাকে না, ফলে দ্রুত হেঁটে “কোটা” পূরণ করতে হয়। কেউ কেউ আবার হাঁটার মধ্যেই শরীরচর্চা ও সেরে নেন।

গবেষকরা বলছেন, যতক্ষণ বা যতদূরই হাঁটুন না কেন, তাতে উপকার আছে।
তবে দ্রুত হাঁটা আর অনেকটা পথ হাঁটার মধ্যে কোনটা বেশি উপকারী সেটা জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন’– এ অবস্থিত ‘ইউটি হেল্থ সাইন্স সেন্টার অ্যাট হিউস্টন’এর অন্তর্ভুক্ত ম্যাকগভার্ন মেডিকাল স্কুল’য়ের ‘স্পোর্টস কার্ডিওলজিস্ট’ জন হিগিন্স যেমন সম্প্রতি এক সাইন্স জার্নালে বলেন, ‘দ্রুত হাঁটা আর আরাম করে হাঁটা দুটোই নিজস্ব কিছু উপকারিতা আছে।”

‘ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’ এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন হিগিন্স বলেন, “ধরে নেওয়া যাক, আপনার কাঁধে নানান দায়িত্ব। সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যেতে হবে, বাজার করতে হবে, অফিসের কাজ শেষ করতে হবে ইত্যাদি। এরই মাঝে একফাঁকে একটু হাঁটাহাঁটির সময় বের করে নিতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত গতিতে হেঁটে অল্প সময়ে অনেকটা পথ হাঁটলে সময়ের সদ্ব্যবহার হবে।”
১৫ মিনিট দ্রুত গতিতে হাঁটার মাধ্যমে ৩০ মিনিট আরাম করে হাঁটার সমান ব্যায়াম হবে। আবার এই হাঁটা ‘অ্যারোবিক এক্সারসাইজ’ হিসেবেও কাজ করবে।
ফলে
১)হৃদযন্ত্র শক্তিশালী হবে
২) হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে
৩) শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা বাড়বে ৪)রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হবে
৫)মেজাজ ভাল থাকবে

যদি হাতে সময় থাকে তবে ধীর গতিতে লম্বা সময় হাঁটা বেশি উপকারী হবে।
ডা. হিগিন্স বলেন, “ধীরে হাঁটলে সময় বেশি লাগলেও জোরে হাঁটার সম-পরিমাণ উপকারই মিলবে। সঙ্গে কমবে আঘাত পাওয়া ও দুর্ঘটনার সম্ভাবনা।”
আবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে
১)হাঁটার ক্ষমতা বাড়বে ফলে ভবিষ্যতে আরও লম্বা সময় হাঁটার জোর পাবেন
২)কতদূর হাঁটা হল সেই পরিমাণটা দেখলে মানসিক তৃপ্তি পাবেন, যা আরও হাঁটার অনুপ্রেরণা যোগাবে
৩)মনে রাখতে হবে, শারীরিক উপকারের পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তিও জরুরি।

ডা. হিগিন্স বলেন, “সবচাইতে ভালো হবে গতি আর সময়- দুটোর স্বাস্থ্যকর মিশ্রণ। সপ্তাহের একদিন শরীরের ওপর চাপ প্রয়োগ করুন, ভারী ব্যায়াম করুন। বাকি দিনগুলো হালকা ব্যায়াম।”
তবে সিনেমায় যেমন ব্যায়াম মানে ট্রেডমিলে হাঁটা দেখান হয়, তার চাইতে প্রাকৃতিক পরিবেশে পার্কে বা রাস্তায় হাটা অনেক বেশি উপকারী। ভারতের একাধিক চিকিৎসক অন্তত এমনটাই পরামর্শ দিচ্ছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *