আজ খবর ডেস্ক- এক সপ্তাহের মধ্যে ২ বার। ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইএএস (IAS) আইন সংশোধনের পথে কেন্দ্র। দিন কয়েক আগেই, গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে চিঠি লিখেছিলেন মমতা। অনুরোধ জানিয়েছিলেন, আমলাদের সমস্যা বুঝতে। এদিন আবার চিঠি লিখলেন তিনি।
এদিনের চিঠিতে সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন নিয়ে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন মমতা।

সম্প্রতি আই এ এস ক্যাডার আইন সংশোধন নিয়ে রাজ্য কে চিঠি দিয়েছিল কেন্দ্র। গত ১৩ই জানুয়ারি সেই বিষয় প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথম চিঠিতে মমতা লিখেছিলেন, আমলাদের ডেপুটেশনের ক্ষেত্রে এককভাবে কেন্দ্রের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার খতিয়ে দেখা উচিত। এতে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক তথা ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিপন্ন হতে পারে।
এমনকি মমতা সেই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মনে করিয়েছিলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একসময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ফলে আমলাদের বিষয়ে তাঁর থেকে আরেকটু সংবেদনশীলতা কাম্য।

ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, প্রথম চিঠির পরেও প্রত্যাশিত ইতিবাচক ভূমিকা না পাওয়ায় সাত দিনের মাথায় ফের বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বিতীয় চিঠি পৌঁছলো প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে (PMO)।
এই চিঠিতে মমতা লিখেছেন, কেন্দ্র আইএএস ক্যাডার আইন সংশোধন নিয়ে আবার চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্যকে। এই প্রস্তাবটি আগের থেকেও খারাপ। কেন্দ্রের এই উদ্যোগ ভারতের “সংবিধান বিরোধী” বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মমতা।
এমনিতেই ২০২১ বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই আইএএস ও আইপিএস’দের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চলছে। কলাইকুন্ডায় ইয়াস ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী বৈঠকে উপস্থিত না থাকা নিয়ে তৎকালীন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কে ডেপুটেশনে দিল্লিতে কে নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে রাজ্যে মুখ্য সচিবের পদে থাকার সময় শেষ হওয়ার আগেই ইস্তফা দিয়েছিলেন আলাপন। কেন্দ্র-রাজ্য সেই বিবাদের রেশ এখনও রয়েছে।

১৯৫৪ সালে তৈরি হওয়া আইন বলছে, একজন আমলা যখন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাজ করছেন তখন তাঁর নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের হাতেই থাকে। আবার রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা আমলাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে রাজ্যের হাতে। নয়া সংশোধনীতে এই নিয়মের বদল চাইছে মোদি সরকার।এদিনের চিঠিতে কেন্দ্রের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, নয়া সংশোধনীর ফলে দেশের যেকোনও প্রান্ত থেকে ইচ্ছেমতো আমলাদের দিল্লিতে ডেকে নিতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার। পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকবে কেন্দ্রের হাতে। রাজ্য সরকার অথবা সেই আমলার ব্যক্তিগত মতামতের কোনও গুরুত্ব থাকবে না। রাজ্য সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে নিযুক্ত থাকেন এইসব আমলারা। নতুন আইন বলবৎ হলে, উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাতিল করে তৎক্ষণাৎ সেই আমলাকে কেন্দ্রের ডাকে সাড়া দিতে হবে। এতে রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষতি হবে।
অবিলম্বে এই আইন সংশোধনের পথ থেকে সরে আসার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন মমতা। তৃণমূল বিজেপি রাজনৈতিক উত্তাপের মাঝে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে কি আদৌ সাড়া দেবেন প্রধানমন্ত্রী? সেটাই এখন দেখার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *