আজ খবর ডেস্ক: সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লির বুকে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ট্যাবলো বাতিল ঘিরে ক্রমশ চড়ছে রাজনীতির পারদ। প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে চিঠি লেখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। এবার পাল্টা তার উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্যকেই কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
জানালেন, দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয় না নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। নির্মলার এই বক্তব্য ঘিরে ফের তোলপাড় রাজনৈতিক মহলে।

ট্যাবলো বিতর্কে ঠিক কী মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন?
তিনি বললেন, “এর পেছনে খারাপ রাজনীতি দেখা বন্ধ করুন”।
বস্তুত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যখন এই মন্তব্য করলেন, যখন অবিজেপি তিন রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, কেরল এবং তামিলনাড়ুর প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আর এর পরেই এই
৩টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন।

১৬ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ট্যাবলো বাতিল করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তন জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এবারের ট্যাবলোটি করা হয়েছিল। অন্যদিকে কেরল সরকার শুক্রবার সমাজ সংস্কারক নারায়ণ গুরুর ওপরে করা ট্যাবলো বাতিল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। একইভাবে সোমবার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন।

এদিকে এই বিষয়টি নিয়ে পরপর একাধিক টুইট করেছেন নির্মলা সীতারামন।
সেখানে তিনি লিখেছেন শিল্প, সংস্কৃতি, ভাস্কর্য, সঙ্গীত, স্থাপত্য-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ট্যাবলোগুলিকে তালিকা ভুক্ত করেন। তিনি আরও লিখেছেন, সময় সংক্ষিপ্ত হওয়ার কারণে কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। কিছু প্রস্তাব গ্রহণ করা যায়নি।
প্রসঙ্গত এবার ৫৬ টির মধ্যে ২১ টিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

প্রত্যেক বছর বিভিন্ন রাজ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো নিয়ে প্রস্তাব পাঠায়। এছাড়া প্যারেডের সময়ও নির্দিষ্ট। বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এর মধ্যে থেকে বেছে নেন। এবার ৫৬টির মধ্যে থেকে ২১ টিকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে টুইটে জানিয়েছেন নির্মলা।

রীতিমত খতিয়ান তুলে ধরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দাবি করেছেন, নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এই সংক্রান্ত মানদণ্ড কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়। তিনি বলেছেন এবার যে তিন রাজ্যের কথা বলা হচ্ছে, তাদের মধ্যে বাংলার ট্যাবলো ২০১৬, ২০১৭, ২০১৯ এবং ২০২১-এ গৃহীত হয়েছিল। অন্যদিকে ২০১৮ ও ২০২১-এ কেরল এবং ২০১৬, ২০১৭, ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১ সালে তামিলনাড়ুর ট্যাবলো গ্রহণ করা হয়েছিল।

এ বছর পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো ছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ওপরে। যে ট্যাবলো বাজ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নির্মলা সীতারমন বলেছেন, এবারে সিপিডব্লুডি’র ট্যাবলোতেও নেতাজি রয়েছেন। ফলে নেতাজিকে ট্যাবলো থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, এমন খারাপ রাজনীতি দেখা বন্ধ করুন, বিরোধীদের কাছে আবেদনে বলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
তবে দেশজুড়ে বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে নেতাজির ট্যাবলো বাতিল করা নিয়ে শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোই যে প্রতিবাদে সরব হয়েছে এমনটা নয়। বহু সামাজিক সংগঠন ও গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *