আজ খবর ডেস্ক- সবে মাত্র প্রায় ১৮মাস প‍র খুলেছিল স্কুল ৷ গত ১৬ই নভেম্বর থেকে করোনা বিধিনিষেধ মেনে ফের শুরু হয়েছিল স্কুলে পঠন পাঠন । আপাতত নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন চলছিল ৷
আজ থেকে আবার প্রশ্নচিহ্নের মুখে এই পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ। অর্থাৎ ভরসা সেই অনলাইন ক্লাস। একদিকে স্মার্টফোন কেনার অক্ষমতা, অন্যদিকে দিন দিন নেট প্যাকের দাম বৃদ্ধি।
নভেম্বরে স্কুল খুলতেই নজরে এসেছে পড়ুয়াদের নিয়মিত অনুপস্থিতি । এতদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা শুধু বিদ্যালয়ে যাওয়ার অভ্যাসই হারায়নি, স্কুল খুললেও ওই মুখো হতে চাইছে না পড়ুয়ারা ৷

এবার সেই সমস্ত স্কুলছুট পড়ুয়াদের ফের স্কুলের আঙিনায় ফিরিয়ে আনতে বিশেষভাবে উদ্যোগী হল সিপিআইএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই।
রাজ্যের প্রতিটি জেলায় স্কুলছুট পড়ুয়াদের তালিকা তৈরির উদ্দেশ্যে সার্ভে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । জেলায় জেলায় এসএফআইয়ের
নেতা-কর্মীরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। ঠিক কী কারণে পড়ুয়ারা স্কুল বিমুখ হয়েছে ।
এই প্রকল্পের নাম, অ্যান্টি স্কুল ড্রপ আউট স্কোয়াড। খাতায় কলমে স্কুল ড্রপ আউটের পরিসংখ্যান তুলে এনে সরকারের সামনে তা তুলে ধরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাবে এসএফআই ৷ এতেও কাজ না হলে আন্দোলনে নামবে এই ছাত্র সংগঠন।

এই প্রসঙ্গে বাম ছাত্র সংগঠনের অভিযোগ, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
এসএফআই এর বক্তব্য, রাজ্য প্রশাসনস লকডাউনের ছুতো দেখিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছিল প্রায় একাটানা দেড় বছর। সরকারের শিক্ষাবিরোধী মনোভাব স্পষ্ট।
সংগঠনের দাবি,
১)কোন তথ্যের বা রিপোর্টের ভিত্তিতে এরকম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হল তা সামনে আনা হোক।
২)বিগত দু’বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একটা বড়ো অংশের ছাত্রছাত্রী ড্রপ আউটের শিকার হয়েছে। সেই ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ফেরানোর পরিকল্পনা নেওয়ার বদলে আবার একটা অংশের ছাত্রছাত্রীকে নতুন করে ড্রপ আউট করাবে এই সিদ্ধান্ত।
৩) প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সমগ্র পাঠ্যসূচী এমনই একটা সময়ে অনলাইন ব্যবস্থায় পাঠিয়ে দেওয়া হল, যে সময়ে কর্পোরেট টেলিকম সংস্থাগুলি ডেটা প্যাকের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে অনিয়ন্ত্রিতভাবে।
৪)এতদিন স্কুল বন্ধ থাকায় মিড ডে মিল পরিষেবা বন্ধ রেখেছিল রাজ্য সরকার। মিড-ডে মিলের খাবার বিকল্প উপায়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছে বিশেষ করে অভাবী ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিকল্প ব্যবস্থাও নেয়নি।

এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি রাজ্য সরকারের এমন ছাত্র স্বার্থবিরোধী, কর্পোরেট বান্ধব আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। বললেন, সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য।
সৃজনের আরও বক্তব্য,
“শিক্ষা বাঁচাতে, ক্যাম্পাস বাঁচাতে, প্রজন্ম বাঁচাতে এই লড়াই গোটা সমাজের। সমস্ত অংশের মানুষ সামিল হোন এই লড়াইয়ে। ক্যাম্পাসভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করার ঘৃণ্য চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।”

করোনা আবহে দাপিয়ে কাজ করেছে রেড ভলান্টিয়াররা। সেই কাজের সুফল একটু হলেও পাওয়া গেছে কলকাতা পুর ভোটে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এবার “ড্রপ আউট” বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে সংগঠনকে আরও চাঙ্গা করতে চাইছে এসএফআই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *