আজ খবর ডেস্ক: এ যেন সেই সুকুমার রায়ের “গোঁফ চুরি”র গল্প। ঘুমের ঘোরে হেড অফিসের শান্ত বড়বাবু ক্ষেপে উঠেছিলেন তাঁর গোঁফ চুরি গিয়েছে বলে। আর পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিএম ছাত্র সংগঠনের অভিযোগ, তাঁদের পোস্টার নকল করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
করোনা মোকাবিলায় বেশ কিছু পোস্টার বানিয়েছিল এসএফআই। রেড ভলেন্টিয়ার দের নাম দাম সহ যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর দেওয়া ছিল এইসব পোস্টারে। অভিযোগ, এসএফআই নেতাদের নাম-ধাম মুছে নিজেদের ছবি, নাম সাঁটিয়ে প্রচারও চালাচ্ছে এলাকার তৃণমূল নেতারা।

নানা প্রকল্পের নাম পরিবর্তন নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সঙ্ঘাত নতুন কিছু নয়। আবার এই রাজ্যের ফ্লাইওভারসহ নানান ছবি ব্যবহার করে ভিন রাজ্যের রাজনৈতিক প্রচার হয়েছে। বিশেষ করে উত্তর প্রদেশে একাধিকবার ঘটেছে এমন ঘটনা। যা নিয়ে একেক সময় তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
এ বার পোস্টার চুরি নিয়ে বিরোধীদের এমন অভিযোগে শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলেও।
প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে এসএফআই।

পশ্চিম মেদিনীপুরের এসএফআই নেতাদের অভিযোগ, তাঁদের তৈরি পোস্টার নাকি তৃণমূল নেতারা নিজেদের নামে চালাচ্ছেন। পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূলও।
পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব বলছে, এসএফআইয়ের পোস্টার ধার করতে হবে, এমন দুর্দিন তৃণমূলের এখনও আসেনি। করোনা মোকাবিলায় তৃণমূলই কাজ করছে। অন্য কোনও দলকে দেখা যাচ্ছে না!

করোনা মোকাবিলায় ‘টেলিমেডিসিন’ পরিষেবা দিচ্ছে এসএফআই। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের কয়েকজন চিকিৎসককে নিয়ে একটি টিম তৈরি করেছে তাঁরা। সেই প্রচারের জন্য একটি পোস্টারও বানানো হয়েছিল। সেখানে ওই চিকিৎসকদের নাম এবং ফোন নম্বর দিয়ে, প্রয়োজনে কবে কার সঙ্গে কখন যোগাযোগ করা যাবে স সব জানান হয়েছিল। ‘ডক্টরস্ হেল্পলাইন’ নামে এই পোস্টার সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছে জেলা এসএফআই। সিপিএমের ছাত্র সংগঠনটির অভিযোগ, ওই পোস্টারই তৃণমূলের একাধিক নেতার নাম, ছবি দিয়ে সমাজ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। পোস্টারে বাকি সব হুবহু একই। শুধু যেখানে এসএফআই লেখা ছিল, সেখানে তা মুছে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতাদের নাম এবং ছবি। দেখলে মনে হবে ওই পরিষেবার বন্দোবস্ত তৃণমূলই করেছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের এসএফআই বনাম তৃণমূল এই তরজা, আপাতত নেট দুনিয়ায় ঝড় তুলেছে। প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভা ভোটে রেড ভলেন্টিয়ার দের কাজের জন্যই তুলনামূলকভাবে ভালো ফলাফল হয়েছে সিপিএমের, দলের অন্দরে ও এই মতামত উঠে এসেছে। ফলে, পোস্টার বিতর্ক আগামী দিনে আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে, এমনটা মনে করছেন সিপিএমের একাধিক নেতা।


ঘুরেফিরে সেই যেন “গোঁফ চুরি”র গল্প। ” গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, গোঁফ দিয়ে যায় চেনা”।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *