আজ খবর ডেস্ক: শনিবার সকালে মারা গেলেন সুভাষ ভৌমিক। প্রাক্তন ফুটবলার ও কোচ দক্ষিণ কলকাতার একবালপুরের একটি নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ৭২ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরেই সুগার এবং কিডনির অসুখে ভুগছিলেন সুভাষ ভৌমিক। গত প্রায় তিন মাস ধরেই নিয়মিত ডায়ালিসিস নিতে হয়েছে তাঁকে। করণাতে আক্রান্ত হয়ে তিনি ভর্তি ছিলেন ওই হাসপাতালে। ৯ এর দশকের শেষ দিকে তাঁর বাইপাস সার্জারিও হয়েছিল।

কলকাতা ময়দানে সুভাষের অভিষেক হয়েছিল মাত্র ১৯ বছর বয়সে। প্রথম বড় ক্লাব ইস্টবেঙ্গল। মাত্র ১বছর সেখানে খেলার পরেই যোগ দেন প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব মোহনবাগানে। সেখানে ৩বছর খেলে ফের ফিরে আসেন লাল-হলুদে। ৩ বছর পরে ফের সবুজ-মেরুনে। আরও ৩ বছর সেখানে খেলার পরে তাঁকে ফের সই করায় ইস্টবেঙ্গল। ১বছর সেখানে খেলে ১৯৭৯ সালে অবসর নেন সুভাষ।
তিনি ইস্টবেঙ্গলে খেলেছেন সব মিলিয়ে ৫ বছর (১৯৬৯, ১৯৭৩-৭৫, ১৯৭৯)। মোহনবাগানে খেলেছেন ৬বছর (১৯৭০-৭২, ১৯৭৬-৭৮)।

শুক্রবার বিকেলে সুভাষ ভৌমিকের ভবিষ্যৎ চিকিৎসার পরিকল্পনা নিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হয়।
সেখানে ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার ভাস্কর গাঙ্গুলী, বিকাশ পাঁজি, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু, মানস ভট্টাচার্যরা। এ ছাড়াও ছিলেন আইএফএ-র সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, মোহনবাগান ক্লাবের অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত, মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কার্যকরী সভাপতি কামারউদ্দিন, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকে দেবব্রত সরকার।
সুভাষ পুত্র অর্জুনও ছিলেন সেই সভায়। সেখানেই ঠিক হয়েছিল, অন্য কোনও হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা করা হবে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমেই তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিডনি প্রতিস্থাপনের পরিকল্পনাও ছিল চিকিৎসকদের। কিন্তু আর সময় দিলেন না ময়দানের ‘বুলডোজার’।

খেলোয়াড় হিসেবে অবসর নেওয়ার পর কোচ হিসেবে তিন দফায় ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। প্রথমে ১৯৯৯ থেকে ২০০০, তারপর ২০০২ থেকে ২০০৫ এবং ২০০৮ থেকে ২০০৯।
মোহনবাগানের কোচ ছিলেন ২০১০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। এ ছাড়াও ২০০৬ সালে মহমেডানে, ২০০৭-০৮ সালে সালগাঁওকারে এবং ২০১২-১৩ সালে চার্চিল ব্রাদার্সে কোচিং করিয়েছেন।
১৯৮৬ সালে জর্জ টেলিগ্রাফের কোচ হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেন তিনি।

সুভাষ ভৌমিকের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই শোকবার্তা পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবারই ছিল সুভাষের ছেলের বিয়ে, মেয়েও কোভিডে আক্রান্ত হয়ে দিল্লিতে আইসোলেশনে রয়েছেন। সকালে এই খবর আসার পর থেকেই ময়দানে বিষণ্ণতার আবহ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *