আজ খবর ডেস্ক- আজ, বৃহস্পতিবার থেকে ফের চালু হল স্কুল।আপাতত অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারাই আসছে স্কুলে। তবে প্রায় ২ বছরে যেন অনেকটাই বদলে গেছে সেই চেনা স্কুল! ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ারা এখন অষ্টমে। আর যারা অষ্টমে ছিল, তারা এখন দশমে।
চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, বহু স্কুলে চোখে পড়েছে তৎপরতা। ঝাড়পোঁছ, জীবাণুনাশের ব্যস্ততা ছিল। শৌচাগারের অবস্থা, পানীয় জলের সরবরাহ ঠিক রয়েছে কি না, দেখা হয়েছে। সব থেকে বড় কথা, আপাদমস্তক স্যানিটাইজ করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয়। কারণ শুধুতো স্কুল নয়, আজ থেকে খুলেছে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও।
তবে স্কুলগুলোয় সরগরম ভাব যেন তুলনায় অনেক বেশি। সম্ভবত বয়স জনিত চাপল্যের কারণে এহেন ছবি উঠে আসছে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল থেকে।
অনেক প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা আবার স্কুলে আসা পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানোর জন্য নানা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে পড়ুয়াদের স্কুলে আসার বার্তা দিয়েছে কিছু স্কুল। স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার অধিকাংশ পড়ুয়াই স্কুলে এসেছে বাবা অথবা মায়ের সঙ্গে। কিছুটা জড়তা, মুখে মাস্ক, অনেকেরই স্কুলে ঢোকার সময় হাতে ছিল স্যানিটাইজারে শিশি। সব মিলিয়ে সত্যিই ছবিটা যেন বেশ কিছুটা অন্যরকম।
কোচবিহার থেকে মালদহ, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি থেকে দুই দিনাজপুর—উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় স্কুলগুলোতে রীতিমত তুঙ্গে ক্লাসঘর, বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল জীবাণুমুক্ত করার কাজ। একই ছবি দক্ষিণবঙ্গেও।দুই ২৪ পরগণা, হুগলি, নদিয়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ-সহ রাজ্যে বহু স্কুলে।
দায়িত্ব যেন প্রশাসনের ও কিছু কম না। বুধবার বীরভূমে স্কুল সাফাই, জীবাণুনাশের (sanitize) কাজ সরেজমিনে দেখেন জেলা শিক্ষা ও প্রশাসনের কর্তারা। জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানে জেলা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দফতর, পুলিশ-প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠক করেন শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত জেলাশাসক।
এদিন সকাল থেকে করোনা-বিধি মানার ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা দেখা গিয়েছে স্কুলে-স্কুলে।
যেমন শহর কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ বিভিন্ন স্কুলে করোনা-বিধি মানতে কী-কী করতে হবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের( what’s app Group) মাধ্যমে। অনেক স্কুলে আবার ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টি ইউটিউব ( you tube) এর ভিডিও বার্তা মারফত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে অভিভাবকদের কাছে।
সকালে স্কুলে ঢোকার সময় থার্মাল গান ( thermal gun) পড়ুয়াদের শরীরের তাপমাত্রা দেখে নেওয়া হয়েছে।
বহু স্কুল আবার ছাত্রছাত্রীদের হাতে মাস্ক, জীবাণুনাশক তুলে দিয়েছে।
অনলাইন ক্লাসের বেড়াজাল ডিঙিয়ে বহুদিন পরে স্কুলের মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প, খেলাধুলো। বহু পড়ুয়া তাই নিয়ে যথেষ্ট উত্তেজিত। তবে অনেকের আবার মন খারাপ। কারণ, দূরত্ববিধি( physical distance) বজায় রাখতেও নানা স্কুল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেমন সবার আগে কোপ পড়েছে সবাই মিলে ভাগ করে টিফিন খাওয়ার ওপর।
প্রতিটি বেঞ্চে দুই থেকে তিন জনকে বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদের ইউনিটে ভাগ করে, বিভিন্ন ক্লাসঘরে বসানো হচ্ছে। ‘
পড়ুয়াদের স্কুলে আনতেও উদ্যোগী হয়েছে অনেক স্কুল। উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের অথবা দক্ষিণ ২৪ পরগণার কাকদ্বীপ, গ্রামীণ এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্যদের মাধ্যমে অভিভাবকদের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তাঁরা যেন ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠান।
এ দিনের পর সরস্বতী পূজা এবং সপ্তাহ শেষের কারণে ফির ক্লাস শুরু হবে আগামী সপ্তাহের সোমবার থেকে।