আজ খবর ডেস্ক- কেন্দ্রীয় সরকার আগেই বাড়িয়েছিল। সম্প্রতি নয়া আইন লাগু করে রাজ্য জুড়ে একলাফে কয়েকগুণ বাড়ান হয়েছে পরিবহন আইন ভাঙার জরিমানার পরিমাণ।
আর এই ট্রাফিক আইন ভঙ্গের জরিমানার পরিমাণ কার্যত আতঙ্কগ্রস্ত করেছে বাস মালিক অভ্যাস সংগঠনের কর্তাদের।
পরিণামে, ফেব্রুয়ারির অলস দুপুর হোক অথবা ব্যস্ত অফিস টাইম, শহরের রাস্তায় দেখা নেই বাস মিনিবাসের। সন্ধে নামলে ধর্মতলা চত্বর অথবা বাইপাস রুবির মোড়ে বিভিন্ন সরকারি বাসে বাদুড়ঝোলা অফিস যাত্রীদের দেখা মিলছে।

জানা গিয়েছে, পুলিশি ধরপাকড়ের আশঙ্কায় বিভিন্ন রুটের থেকে বাস তুলে নিচ্ছেন বাস মালিকরা। অগত্যা ভরসা সরকারি বাস।
এই আবহে শুধু বুধবার হাওড়া ও কলকাতায় রাস্তায় নামল না সাড়ে সাতশো বেসরকারি বাস। রাস্তায় বাস কম নামায় স্বাভাবিক ভাবেই দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
নয়া আইন অনুযায়ী, যদি একটি বাস অপর বাসকে ওভারটেক করে, সেক্ষেত্রে দরিমানা গুণতে হবে ৫ হাজার টাকা। আবার পুলিশ আটকালে বৈধ কাগজ না দেখাতে পারলেই ১০ হাজার টাকা দিতে হবে পুলিশকে। এই পরিমাণ জরিমানা দিতে কোনও ভাবেই রাজি নন বেসরকারি বাস মালিকরা।

প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কালো ব্যাজ পরে পরিষেবা দিচ্ছেন বেসরকারি বাসের চালক, কন্ডাক্টার এবং হলুদ ট্যাক্সি, অ্যাপ-ক্যাব চালকরা।
এদিন সকাল থেকে রাসবিহারী মরে অ্যাপ ক্যাব চালকদের নিয়ে বিক্ষোভে নেমেছে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু(CITU)। তাদের মূল দাবি, এই পরিবহন আইন বদলাতে হবে। কমাতে হবে জরিমানার পরিমাণ।
এদিকে বেসরকারি বাস মালিকদের দাবি, বিপুল পরিমাণ জরিমানা নিয়ে তাঁরা আতঙ্কিত। এই পরিমান জরিমানা তাঁদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। আর তাই ভয়ে তাঁরা রাস্তায় বাস নামাচ্ছেন না।

এমনিতেই কোভিড আবহে লকডাউনের কারণে বাস শিল্প ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
দীর্ঘদিন বাস না চলায় ধুঁকছেন বেসরকারি বাস মালিকরা। তার ওপর পেট্রোল ও ডিজেলের চড়া দাম।
অথচ বিমার প্রিমিয়াম ভরে যেতে হয়েছে বাস মালিকদের। এই আবহে ভাড়া বাড়ানোর দাবি জানানো হলেও সরকারি ভাবে সেই দাবি মানা হয়নি।
চোরাগোপ্তা নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী একেকরকম রুটে একেকভাবে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, গত রবিবার ধর্মতলা চত্বরে একটি মিনি বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। আহত হন ২৭ জন যাত্রী। পরে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত
মিনিবাসটির কোনও বৈধ কাগজপত্র ছিল না। ফলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে এর পরেই শুরু হয় পুলিশি অভিযান। গতকাল অর্থাৎ বুধবার পুলিশের তরফে আটক করা হয় মোট ৪৫ টি বাস। এরমধ্যে মিনিবাসের সংখ্যা ১০।
রাজ্যে সব মিলিয়ে কমবেশি ৫ হাজার বাস চলে। প্রশাসনের তরফে অভিযোগ, এরমধ্যে অধিকাংশেরই সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হয়না। পুরনো টায়ারে তাপ্পি মেরে তা চালানো হচ্ছে। ফলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
জানা গিয়েছে এই ধরপাকড়ের ফলে প্রায় ৭৫০ টি বাস পথে নামায়নি বিভিন্ন বাস সংগঠন।
ফলে করোনা আবহে একদিকে যেমন ভিড় বাসে গুঁতোগুঁতি করতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের অন্যদিকে গুনতে হচ্ছে বেশি ভাড়া।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *