আজ খবর ডেস্ক- পুরভোট breaking
রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, ১০৮ পুরসভার ভোট হল রবিবার। সকাল থেকে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ দিয়ে ভোটের খাতা খুলল, আর দিনভর তান্ডব চলল রাজ্যজুড়ে। অন্তত পুরভোট ঘিরে এমনটাই অভিযোগ বিরোধী শিবিরের।
বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সকাল থেকে ছড়িয়ে পড়ল বুথ জ্যাম, ছাপ্পা ভোট, গুলি, বোমা, গন্ডগোলের নানান ফুটেজ।
কোথাও দেখা গেল শাসক দলের প্রার্থী সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। কোথাও আবার ক্যামেরার সামনে হাউ হাউ কাঁদলেন নির্দল মহিলা প্রার্থী। জেলায় জেলায় আক্রান্ত হলেন বিরোধীদলের বিধায়ক সাংসদরা। অভিযোগ জানালেন সংবাদমাধ্যমের সামনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।
সংক্ষেপে দেখে নেওয়া যাক এদিন সকাল থেকে জেলায় জেলায় পুরভোটের খন্ড চিত্র।
১)উত্তর দমদম ওয়ার্ড নং ৩১। ২০২১ বিধানসভাতে সিপিএমের জেতা ছিল। সেখানে সকাল ৭ টায় প্রার্থী সহ ২৫০ জন পার্টি কর্মীকে মেরে তাড়িয়ে পুরো বুথ দখল করে নিয়েছে টিএমসি।
অভিযোগ সিপিআইএমের।
২) পার্ট ১১০, উর্দু স্কুল
ওয়ার্ড নং ৩৩, দক্ষিণদাঁড়ি
লেকভিউ স্কুল, বুথ নম্বর ১০৮, ওয়ার্ড ৩৩, দক্ষিণ দমদম পৌরসভা। এই দুই জায়গাতেই শাসক দলের বিরুদ্ধে রিগিংয়ের অভিযোগ আনল লাল ও গেরুয়া শিবির।
৩) মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির ১৮৩ নম্বর বুথে ছাপ্পা ভোট। বৃদ্ধার হয়ে ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে।
৪) রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ৩/১৪/১৫/১৬/১৭/২২/২৬/২৮/৩১/৩৫ সহ বিভিন্ন ওয়ার্ড বাইরের লোক এবং বাইক বাহিনীর দখলে। অভিযোগ জানালেন সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
৫) আবার কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায়ের অভিযোগ, জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও ১১নং ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী সুজিত সরখেল ও তার নির্বাচনী এজেন্টকে “পুলিশি মদতে” বুথ থেকে বের করে দিয়েছে তৃণমূলের সাদা গেঞ্জি পরা গুন্ডাবাহিনী।
৬) বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, বালুরঘাট পৌরসভার 22 নং ওযার্ডে বিজেপি প্রার্থী কে বাড়ির সামনে তৃণমূলের “গুণ্ডাবাহিনী” আক্রমণ করে। ঘটনাস্থল থেকে বিজেপি প্রার্থী শান্তনু চৌধুরীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। প্রায় এক ঘন্টা ধরে এই তাণ্ডব চললেও পুলিশের দেখা মেলেনি।
৭) এদিকে উলটপুরাণ হল নদীয়ার শান্তিপুরে। শান্তিপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী স্নিগ্ধ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রাস্তায় ফেলে তাঁকে জুতোপেটা করেছে সিপিএম কর্মীরা।
৮) হাউমাউ করে কাঁদলেন রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ালটন নির্দল প্রার্থী মহুয়া দাস। সংবাদ মাধ্যমের সামনে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করলেন “তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমার শাড়ি ধরে টেনে এলাকার ৩৮৯ নম্বর বুথ থেকে বের করে দিয়েছে।
৯) মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান এসডি পিওর গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ধুলিয়ান পুরসভার ১৪নম্বর ওয়ার্ডের ৫১ নম্বর বুথে কার্যত পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি শুরু করেন সাধারণ মানুষ।
১০) এই পুরভোটে রাজনৈতিক মহলের নজর ছিল শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক কাঁথি পুরসভা নির্বাচনের দিকে। নিজের নির্দিষ্ট বুথে ভোট দিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর বাবা সাংসদ শিশির অধিকারী। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের পক্ষ থেকে তাঁকে বলা হয় গাড়ি থেকে নেমে বুথ পর্যন্ত হেঁটে যেতে। এতেই মেজাজ হারিয়ে ওই পুলিশকর্মীদের “অভব্য” ভাষায় আক্রমণ করেন শিশির অধিকারী। যা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে পড়ে সমাজ মাধ্যমে।
দিনের শেষে দেখা গেল বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরের বিভিন্ন রকমের ছবি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখাল প্রদেশ কংগ্রেস।
নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ভোটের নামে প্রহসনের অভিযোগ তুলল বঙ্গ বিজেপি।
আর সিপিআইএমের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হল, “রাজ্যজুড়ে দিনভর তাণ্ডব চালিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সংঘ দিয়েছে পুলিশ এবং প্রশাসন”।