আজ খবর ডেস্ক- ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোট কে ২০২৪ লোকসভার সেমিফাইনাল ধরে নিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলো। বিজেপি( bjp), কংগ্রেস( congress) তো ছিলই, আপ (aap), তৃণমূলের মত(aitc) তুলনায় কয়েকটি রাজ্যে সীমাবদ্ধ থাকা দল ও প্রচার এবং লড়াই করেছিল এই নির্বাচনে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গণনা শুরু হতেই বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরে
হর্ষ-বিষাদের ছবি উঠে এল। দুপুর ১ টা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, ৫টির মধ্যে ৪ রাজ্যে সরকার গঠনের পথে বিজেপি। পাঞ্জাবে কংগ্রেসের থেকে ক্ষমতা এল আম আদমি পার্টির হাতে।

এদিন সকাল ৮ টা থেকে ৫ রাজ্যের মোট ৬৯০টি আসনের গণনা শুরু হয়।

এই মুহূর্তের খবর-

১) উত্তর প্রদেশ
মোট আসন ৪০৩
বিজেপি ২৬৭
সমাজবাদী পার্টি ১২৪
বিএসপি ৫
কংগ্রেস ৪
যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে কয়েক দফায় প্রচারে এসেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির হয়ে একাধিক প্রচার কর্মসূচী পালন করেছিলেন মমতা।

২) পাঞ্জাব
মোট আসন ১১৭
আম আদমি পার্টি ৯০
কংগ্রেস ১৭
বিজেপি ৩
শিরোমণি আকালি দল ৬
কংগ্রেসের হাত থেকে এই রাজ্য ছিনিয়ে নিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আপ। দিল্লির পর এবার পাঞ্জাবের চলবে আপের শাসন। যে রাজ্যগুলোতে ভোট হয়েছিল একমাত্র পাঞ্জাবের ক্ষেত্রেই দেখা গেল বিজেপির প্রতি অনাস্থা দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, একদিকে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের বিজেপিতে যোগদান, অন্যদিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিত চান্নি আর অন্যদিকে এই রাজ্যে কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজোৎ সিং সিধুর মধ্যে যে “রেষারেষি” ছিল তারই বহিঃপ্রকাশ এই ফলাফল।

৩)উত্তরাখণ্ড
মোট আসন ৭০
বিজেপি ৪৬
কংগ্রেস ২১
উত্তর ভারতের পাহাড় ঘেরা এই রাজ্য নিজেদের দখলে রাখল বিজেপি। চেষ্টা করেও খুব একটা দাঁত ফোটাতে পারল না কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, বিজেপির হয়ে উত্তরাখণ্ডে প্রচারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। গত প্রায় এক মাস উত্তরাখণ্ডে কাটিয়েছেন লকেট। যদিও পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের পথে এই সাংসদ অভিনেত্রী, তবে উত্তরাখণ্ডের বিজেপির এই জয়ের পরে নিঃসন্দেহে দলের আন্দোলনের গুরুত্ব বাড়বে। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে তিনি কী করবেন সে দিকেই নজর সকলের।

৪) মণিপুর
মোট আসন ৬০
বিজেপি ২৮
কংগ্রেস ৯
অন্যান্য ১৪
তৃণমূল কংগ্রেস ০
উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য ইরম শর্মিলা চানুর জায়গা। দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের আফস্পা বিরোধী লড়াই চালাচ্ছেন এখানকার মানুষ। কিন্তু তারপরেও এই রাজ্য দখলে রাখল বিজেপি। এবারেও খালি হাতে এই রাজ্য থেকে ফিরতে হল তৃণমূল কংগ্রেস কে।

৫) গোয়া
মোট আসন ৪০
বিজেপি ১৮
কংগ্রেস ১২
তৃণমূল কংগ্রেস ৪
আম আদমি পার্টি ৩
অন্যান্য ৩
সমুদ্রবেষ্টিত এই রাজ্যে একাধিক বার প্রচার করে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের তরফে এই রাজ্যের দায়িত্বে ছিলেন সংসদ মহুয়া মৈত্র। একাধিক সংস্থার করা বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল বলেছিল গোয়ায় “কিংমেকার” এর ভূমিকা পালন করতে পারে তৃণমূল।
টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেরিও কে দলে যোগদান করিয়ে গোয়াতে সংগঠন সাজিয়েছিল তৃণমূল। মমতা ছাড়াও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও একাধিকবার এসেছেন এই রাজ্যে। অতীতে বিধায়ক কেনাবেচা করে রাজ্যের ক্ষমতা নিজেদের দখলে নিয়েছিল বিজেপি। এবার কি হবে সেদিকে তাকিয়ে সবাই। কারণ গোয়ায় ম্যাজিক ফিগার ২১।

আগামী ২৪শে জুলাই শেষ হচ্ছে ভারতের বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মেয়াদ। ফলে রাষ্ট্রপতি ভোটের আগে সব দলই চেষ্টা করবে বিষয়টিকে ভোটাভুটি পর্যন্ত গড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার।
কিন্তু ৫ রাজ্যে এদিনের ভোটের ফল প্রকাশ পাওয়ার পরে নিঃসন্দেহে গেরুয়া শিবিরের হাসি আরও চওড়া হবে। অন্যদিকে কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী মঞ্চ তৈরি করার লক্ষ্যে একদিকে যেমন রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য দিকে দেশের দক্ষিণপ্রান্তে তৎপরতা বাড়িয়ে নিজেদের জায়গা পোক্ত করতে চাইছে কংগ্রেস। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনের একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানের মঞ্চে রীতিমতো সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল রাহুল গান্ধীকে।
স্বাভাবিকভাবেই এই পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলাফল অনেক রাজনৈতিক সমীকরণ ওলট-পালট করবে তাতে একপ্রকার নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *