আজ খবর ডেস্ক- রামপুরহাট (Rampurhat) গণহত্যার ২৪ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। একদিকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার সব মিলিয়ে ২০ জন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ( Kolkata High Court) একাধিক জনস্বার্থ মামলা ( PIL) গৃহীত হয়েছে। আজই কেন্দ্রের তরফে বিশেষ তদন্তকারী দলের আসার কথা বীরভূমে।
এদিকে গতকাল রাতেই সিপিআইএমের নয়া রাজ্য সম্পাদক মহ. সেলিম এবং বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বীরভূমে পৌঁছে যান। কথা ছিল এদিন সকাল ১০টা নাগাদ বাগটুই গ্রামে পৌঁছবেন তাঁরা। সঙ্গে থাকার কথা ছিল বাম প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যদের। কিন্তু এলাকায় ঢুকতে হলে পুলিশের থেকে বাধা পেতে পারেন, এই আশঙ্কায় নয়া কৌশল নেন মোহম্মদ সেলিম ( Md. Selim)।
সকাল সকাল নির্দিষ্ট পথের পরিবর্তে ঘুরে অন্য রাস্তা দিয়ে বাইকে চেপে অকুস্থলে পৌঁছন তিনি।

গ্রামীণ অধিকাংশ এলাকার জনশূন্য। পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া ঘরগুলো ঘুরে দেখেন সেলিম। বস্তুত, যে ভিডিও গুলো পাওয়া যাচ্ছে তার প্রত্যেকটিতেই শোনা যাচ্ছে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক কে গ্রামের ভেতরে ঢুকতে বারণ করা হচ্ছে পুলিশের তরফে।
ইতিমধ্যেই আরও একটি বিতর্ক গতকাল রাতেই তৈরি হয়েছে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ইসলাম ধর্মের রীতি ভেঙে প্রশাসনিক চাপে রাতের অন্ধকারেই ৮ মৃত দেহের সমাধি দেওয়া হয় বাগটুই গ্রামে।
কারণ হিসেবে এলাকার মানুষ বলছেন, সূর্যাস্তের পর মুসলিম ধর্মে সমাধি দেওয়ার রীতি নেই। কিন্তু এদিন পুলিশ প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তায় রাতের অন্ধকারেই সমাধিস্থ করার কাজ হয়।
এদিন দিল্লি থেকে কলকাতায় আসতে পারেন দিল্লীর জামা মসজিদের শাহী ইমাম সহ ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল। জানা যাচ্ছে হুগলী, রামপুরহাট হয়ে আসানসোল যাওয়ার কথা তাঁদের।

সিপিএম রাজ্য সম্পাদক এদিন বলেন, “বাগটুইয়ের প্রতিটি অগ্নিদগ্ধ লাশের গায়ে লেগে রয়েছে নবান্নের হাওয়াই চপ্পলের দাগ। যা হয়েছে সব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই হয়েছে।”
যদিও গতকাল পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ প্রত্যেকেই দাবি করেছেন, “এই ঘটনা আসলে একটি রাজনৈতিক চক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে”।
আমার আজই বিজেপির দুই পৃথক প্রতিনিধিদল পৌঁছচ্ছে এই গ্রামে। একটি দল যাবে ভারতী ঘোষের নেতৃত্বে। এই প্রতিবেদন লেখার সময় তাঁরা রওনা হয়ে গিয়েছেন বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে আরেকটি দল পৌঁছচ্ছে বাগটুই গ্রামে। যদিও প্রশাসনের তরফে আদৌ বিজেপি প্রতিনিধিদলকে এই গ্রামের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে।

একদিকে এলাকাবাসীদের অভিযোগ ঘটনা যখন ঘটে ছিল সেই সময় গ্রামের চৌমাথায় দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশ। গ্রামবাসীদের সাহায্য করার জন্য তাঁদের এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক অতীতে এহেন নৃশংস, নাটকীয় ঘটনা ঘটেনি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাঁরা বলছেন, গ্রামের চারদিক ঘিরে ঘুমিয়ে থাকা মানুষদের আগুনে পোড়ানোর মত ঘটনা ভয়াবহ। একইসঙ্গে সমালোচিত হচ্ছে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া। ঘাসফুল শিবির সূত্রে খবর, তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশে আপাতত তাকে মুখ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ববি হাকিম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *