আজ খবর ডেস্ক- ফেসবুকে( facebook) বিজেপি নেতৃত্বকে কড়া আক্রমণ করে দল ছাড়লেন আসানসোলের এক মহিলা। বঙ্গ বিজেপি অনেকেই ছেড়েছেন ইদানিং কালে।
কিন্তু দল ছাড়ার আগে এহেন বিস্ফোরক বক্তব্য কেউ রাখেন নি। এমনকি, আসানসোল থেকে আগে দল ছেড়েছিলেন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়( Babul Supriyo)।
সম্প্রতি বিজেপি থেকে বহিষ্কৃত জয় প্রকাশ মজুমদার ( Jay Prakash Mazumdar) ও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তবে, আসানসোলের এই যুব বিজেপি মহিলা নেত্রীর মত তীব্র ভাষায় দলকে আক্রমণ করেন নি কেউই।
আসানসোল, চিত্তরঞ্জনের বিজেপি কর্মী ছিলেন সুস্মিতা দাশগুপ্ত(chowkidar Sushmita Dasgupta)। তাঁর দাবি, ২০১৪ সাল থেকে সক্রিয় ভাবে বিজেপি করছেন তিনি। নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে সমাজ মাধ্যমে বিজেপির একাধিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ছবি দিয়েছেন সুস্মিতা। সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবার যখন ৫ রাজ্যের ভোটের ফল বেরোনোর পর দেশ জুড়ে উত্তরপ্রদেশ জয়ের সাফল্য পালন করছে
মোদি-শাহের দল, ঠিক তখনই নিজের ফেসবুক পেজ থেকে দল ত্যাগের ঘোষণা করলেন এই মহিলা।
বিজেপি ত্যাগের কারণ হিসেবে ঠিক কী লিখেছেন তিনি?
সুস্মিতা লিখেছেন,
” বিজেপি রাজনীতি থেকে অব্যাহতি নিলাম…7yrs বিজেপি রাজনীতির ইতি টানলাম….আমাকে দিয়ে সেটিং-এ রাজনীতি চলে না….শাড়ি খুলতে পারবো না… না পাত পেরে খাওয়াতে পারব…বিজেপি এখন চোর, কয়লা মাফিয়া, জেলখাটাদের পাটি….
বিজেপির জামা পড়ে সব এখন সাধু…..তবে আমি মানুষের পাশে থেকে কাজ করব,,,,মানুষের কাছ থেকে সরে যাব না….”।
আর এর পরেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বঙ্গ বিজেপিতে। আসানসোল দক্ষিণ সংগঠনে ছিলেন সুস্মিতা। দলের জেলা সভাপতি দিলীপ দে জানিয়েছেন, সমাজ মাধ্যমে এরকম “কটু” মন্তব্য করার জন্য আপাতত বহিষ্কার করা না হলেও চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে ওই নেত্রীকে। আবার মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মিনতি হাজরা পাল্টা কটাক্ষ করেছেন বিজেপিকে। বলেছেন, “ওই মহিলার কথা থেকেই পরিষ্কার যে বিজেপিতে দলীয় নেত্রীদের ঠিক কী চোখে দেখা হয়”।
তবে সব থেকে বেশি বিতর্ক তৈরি হয়েছে সুস্মিতার “শাড়ি খুলতে পারব না” বক্তব্যকে কেন্দ্র করে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই প্রার্থিপদে টিকিট বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছিল গেরুয়া অন্দরে। একাধিক নেতা-কর্মী সেসময় সরব হয়েছিলেন এই নিয়ে। অভিযোগের মূল লক্ষ্যে ছিলেন দলের তরফে রাজ্যের দায়িত্বে থাকা নেতা কৈলাশ বিজয় বর্গী ও অরবিন্দ মেনন।
এমনকি, সিনিয়র বিজেপি নেতা তথা মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়(Tathagata Roy) একাধিকবার টুইট করেছিলেন এই দুই নেতাকে নিয়ে।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের তরফে সাংবাদিক সম্মেলনে উল্লেখ করেছিলেন, বিজেপির কয়েকজন নেতার সম্পর্কে একাধিক “মহিলা ঘটিত অভিযোগ” জমা পড়েছে।
সুস্মিতা অবশ্য নিজের ফেসবুক পেজে জানিয়েছেন আপাতত মুম্বাইয়ে (Mumbai) থাকলেও মানুষের জন্য কাজ করা তিনি ছাড়বেন না। মুম্বাই টাটা মেমোরিয়াল ক্যান্সার হসপিটালে চিকিৎসার জন্য যদি কারোর কোনও প্রয়োজন হয়, তাহলে যেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এমনটাও আবেদন জানিয়ে রেখেছেন এই তরুণী।
তবে জেলার এই ডাকাবুকো নেত্রী মানুষের জন্য কাজ করতে চাইলেও আদৌ রাজনীতিতে থাকবেন কিনা, অথবা অন্য রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন কিনা তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও মন্তব্য করেননি।
প্রসঙ্গত, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল যিনি বর্তমানে দলের তরফে মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী। জেলা থেকে জানানো হচ্ছে, ভোটের সময় অগ্নিমিত্রা হয়ে জড়ানো লড়াই করেছিলেন সুস্মিতা দাশগুপ্ত।
অথচ মহিলা মোর্চার সভানেত্রীর ক্যাডার হওয়া সত্বেও সুস্মিতার এহেন অভিযোগ কে ঘিরে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? আপাতত তাই নিয়ে তোলপাড় আসানসোল বিজেপি।