আজ খবর ডেস্ক: রাজ্য জুড়ে পুরসভা ভোটের পর, সদ্য তৈরি হয়েছে সিপিএমের নতুন রাজ্য কমিটি। বলাই বাহুল্য, কলকাতা পুরসভা সহ অন্যান্য পুরনিগমের ভোটের ফল কিছুটা হলেও উৎসাহ যুগিয়েছে আলিমুদ্দিন কে। পাশাপাশি, দলের রাজ্য সম্পাদক যেমন বদল হয়েছে, ঠিক তেমনই বয়স্কদের সরিয়ে সামনের সারিতে নিয়ে আসা হয়েছে তুলনায় অপেক্ষাকৃত তরুণ মুখ।


২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই সিপিএম অন্দরে বিতর্ক শুরু হয়েছিল “রেড ভলান্টিয়ার”( Red Volunteers)দের নিয়ে। দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে ও এই প্রসঙ্গ উঠেছে একাধিক নেতার বক্তব্যে। মূল বক্তব্য ছিল, রেড ভলান্টিয়ারদের থেকে সাহায্য নেওয়ার পরেও আম জনতা ভোট দিচ্ছেন অন্য দলে। এমনকি বহু সিনিয়র নেতা এমনও প্রশ্ন তুলেছিলেন, একটি রাজনৈতিক দল কেন সমাজসেবার কাজ করবে?

বাস্তবে কিন্তু দেখা গেল, একটু অন্য চেহারায় সেই সমাজ সেবার পথেই এগোলো সিপিএম।
নয়া কর্মসূচী গ্রহণ করা হল দলের তরফে। “পাহারায় পাবলিক” (Paharay Public) নামের এই প্রকল্প বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন ধারণা, এ কথা বলা যেতেই পারে।


মঙ্গলবার সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন, পুরসভা ও পঞ্চায়েত স্তরের যেসব তৃণমূল নেতারা আচমকাই ধনী ও বিত্তশালী হয়ে উঠেছেন তাদের নিয়ে সংকলন প্রকাশ করবে সিপিএম ।

বস্তুত, এই ঘোষণার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে(Digital Platform) নেমে পড়লো আলিমুদ্দিন । বুধবার সিপিএম রাজ্য কমিটির ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সঙ্গে একটি ১১ কলামের ফর্ম ।  সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে , ” রাজ্যজুড়ে তৃণমূলী নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে প্রতিটি এলাকায় ভলান্টিয়াররা এগিয়ে আসুন। পশ্চিমবঙ্গের বুকে দ্বিতীয় রামপুরহাট হওয়ার আগে, আপনার অঞ্চলে ভাদু শেখের মত আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া তৃণমূল নেতাদের চিহ্নিত করতে এই ফর্মটি ফিলাপ করে জমা দিন। আপনার নাম ও অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সম্পূর্ণভাবে গোপন ও সুরক্ষিত থাকবে। রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের নেতাদের তোলাবাজি, বেলাগাম দুর্নীতি রুখে দিতে, বে-আইনি অস্ত্র কারবারে লাগাম টানতে সাহায্য করুন CPI(M) কে। ফর্ম ফিলাপ করে আপনার অভিযোগ নথিভুক্ত করুন।”

কোভিড (Covid) আবহে রাজ্য জুড়ে একদিকে কাজ করেছেন অসংখ্য রেড ভলান্টিয়ার, আর অন্যদিকে “শ্রমজীবী ক্যান্টিন” ভাত জুগিয়েছে বহু মানুষের মুখে।
অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং ওষুধের ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা এবং ঘর স্যানিটাইজ করা পর্যন্ত যাবতীয় পরিষেবা প্রদান করে সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতারা।
মনে করা হচ্ছে, বিধানসভা ভোটে না হলেও তারপরে পুরিভোটে ভোটারদের মন জয় করতে পেরেছে এই উদ্যোগ।
এবার তাই এই স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে সংগঠিত ভাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম।


কোভিড সংক্রমণ কিছুটা হলেও কমেছে চলতি মাসের শেষে আরও খানিকটা শিথিল হচ্ছে করোনা বিধি। তাই রেড ভলান্টিয়ারদের ফেলে না রেখে বাংলার মানুষের ‘পাহারাদার’ হিসেবে নামাতে চাইছে সিপিএম।

প্রসঙ্গত যখন অনিল বিশ্বাস সিপিএম এর রাজ্য সম্পাদক ছিলেন তখন দলের একাংশ বলতেন পাড়ায় কার বাড়িতে রান্নায় পাঁঠা মাংস কষানো বা কার বাড়িতে মুরগী হচ্ছে কিংবা কার বাড়িতে কোথা থেকে কোন পরিবার ভাড়া আসছে তার সব খবরাখবর সিপিএমের জানা থাকতো । কিন্তু এখন আর তিনি নেই । তার মারা যাওয়ার পর পাড়ার সংগঠনেও সিপিএমের সেই রাসও নেই । এরই জেরে হয়ত দলকে আবার আগের রুপে ফিরিয়ে আনতে এই উদ্যোগ নিচ্ছে সিপিএম ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *