আজ খবর ডেস্ক- একদিকে বাগটুই(Bagtui) কান্ড ঝড় তুলেছে দেশ জুড়ে। অন্যদিকে, বসিরহাটের মাটিয়াতে ১১ বছরের কিশোরী ধর্ষিতা। রাজ্য বিধানসভার অন্দরে শাসক ও বিরোধী বিজেপি বিধায়কদের মারামারি নজর কেড়েছে গোটা দেশের।
এদিকে দেশজুড়ে শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকে ২ দিনের বনধ ঘিরেও উত্তেজনা কম হয়নি রাজ্যে। আমার বেআইনি কয়লা ও গরু পাচার কাণ্ড নিয়ে তৎপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

এইসব নিয়েই কি কিছুটা হলেও রাজনৈতিকভাবে সন্ত্রস্ত তৃণমূল? কারণ সোমবার দার্জিলিং থেকেই দেশের অবিজেপি বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে চিঠি দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সস্ত্রীক জেরা। এনফর্সমেন্ট দিরেক্টরেটের ( ED) ডাকে আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ও দিল্লিতে যাওয়ার কথা ছিল অভিষেক ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু জানা গিয়েছে, ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে ইডির ডাকে যেতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন অভিষেক। এমনকি ইতিমধ্যেই ইডির হাজির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ( Supreme Court) আবেদন করেছেন অভিষেক ও রুজিরা।

এই মুহূর্তে কলকাতায় নেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রশাসনিক একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে পাহাড়ে রয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে সোমবার, অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের এবং বেশ কয়েকটি বিজেপি বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠি পাঠিয়েছেন মমতা।

সূত্রের খবর, এই চিঠিতে তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, ইডি ও সিবিআইয়ের (CBI) মত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে দিয়ে বিরোধী দলগুলোর কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি ( BJP) শাসিত সরকার।
শুধু তাই নয় মমতার অভিযোগ, বিচারব্যবস্থার একাংশের ওপর নিজেদের প্রভাব খাটাচ্ছে কেন্দ্র। এইভাবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর ফলে কার্যত দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়ছে বলে দাবি করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আরও অভিযোগ, অবিজেপি সরকার ও দলগুলোর কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে যা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থী।

প্রসঙ্গত, এনডিএ(NDA) শিবির ছাড়ার পর শিব সেনা (Shiv Sena) প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকেও যথেষ্ট সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, সম্প্রতি উদ্ধবের শ্যালকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।

আবার এর আগে মহারাষ্ট্র জোট সরকারের মন্ত্রী তথা এনসিপি(NCP) নেতা নবাব মালিক কে বেআইনি লেনদেনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। এদিন নবাব ও তাঁর পরিবারের নামে নথিভূক্ত ৬টি ফ্ল্যাটের যাবতীয় নথি মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আবার পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও বারবার শাসক দলের বিভিন্ন নেতাকে বেআইনি ব্যবসা এবং লেনদেনে অভিযুক্ত করা হচ্ছে বলে অভিমত তৃণমূল নেতৃত্বের। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর পাশাপাশি গরু পাচার কাণ্ডে নাম যুক্ত করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের।

জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন নিতান্তই রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে কাজে লাগানো হচ্ছে। যাতে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ না খুলতে পারে অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলো।
মমতার বক্তব্য, বিজেপি শাসিত দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলোতে কখনোই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে এইরকম অতি সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় না। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্যে কিছু অন্যায় হলেও একটা “ফিল গুড” ছবি তুলে ধরা হয় যে সেখানে প্রশাসনিক কোনও খামতি নেই।

মোদি সরকারের জমানায় যেভাবে কেন্দ্রীয় ভিজিলেন্স এজেন্সির আইনে সংশোধন করে ইডি ও সিবিআই প্রধানের কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, আর প্রতিবাদ করা উচিত। এই মন্তব্য করে বিজেপি বিরোধী দলগুলোর কাছে মমতার আর্জি, কেন্দ্রের এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন। এজন্য সবার সুবিধামত একটি নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট স্থানে বৈঠক করলে ভাল হয়।
তৃণমূল নেত্রীর এই চিঠির পরে, দিল্লি বা কলকাতায় বিজেপি বিরোধী দলগুলোর আরেকটি বৈঠক কি হতে চলেছে? পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর কংগ্রেসকে পুরোপুরি এড়িয়ে অবিজেপি মঞ্চ তৈরি চেষ্টা করছেন মমতা?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *