আজ খবর ডেস্ক- অভূতপূর্ব বলা যাবে না। বঙ্গ রাজনীতিতে এহেন নজির নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যুব অথবা তুলনায় প্রবীণ নেতাদের মহিলা সঙ্গ নিয়ে এর আগেও প্রকাশ্য অভিযোগ উঠেছে। কল রেকর্ড, ভিডিও চ্যাট, এমনকি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পর্যন্ত ভাইরাল হয়েছে।
শুধু সমাজ মাধ্যমেই নয়, বছরখানেক আগেও ভোটের প্রচারে সরাসরি গেরুয়া শিবিরের এক নেতার বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছিলেন জনৈক মহিলা। গেরুয়া শিবিরের আরেক সর্বভারতীয় শীর্ষনেতার বিরুদ্ধে দলেরই এক মহিলা মোর্চার নেত্রী অভিযোগ এনেছিলেন।
পিছিয়ে নেই রাজ্যের শাসক শিবিরও। দলের এক হেভিওয়েট নেতার বিরুদ্ধে একাধিকবার মহিলা ঘটিত অভিযোগ উঠেছে। সেই নেতা বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগণার বিধায়ক।
বাম শিবিরেও একাধিক নেতার নাম জড়িয়েছে এমন কান্ডে। সর্বভারতীয় স্তরের এক প্রাক্তন সিপিএম ছাত্র নেতার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল সোশাল মিডিয়ায়। দল থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। আরেক ছাত্রনেতার “আপত্তিকর” ভিডিও চ্যাট ও ঝড় তুলেছিল আলিমুদ্দিনে।

এবার বিতর্কের কেন্দ্রে হুগলি(Hooghly) জেলার এক যুব নেতা। চন্দননগরের সিপিএম নেতা গোপাল শুক্লা(Gopal Shukla)।
হোয়াটসঅ্যাপ(WhatsApp) বা মেসেঞ্জারে(Messenger) অচেনা নম্বর থেকে আসা ভিডিও কল। কয়েক সেকেন্ডের নগ্ন ভিডিও দেখানোর পরেই শুরু হয় ব্ল্যাকমেল(Blackmail)।
জানা যাচ্ছে, রবিবার দলেরই একটি বৈঠকে ছিলেন গোপাল শুক্লা। সেখানে তাঁর ফেসবুক মেসেঞ্জারে একটি অচেনা নম্বর থেকে কল আসে। ধরতেই এক মহিলার নগ্ন ছবি ভেসে ওঠে। মোবাইল স্ক্রিনের এক প্রান্তে গোপাল বাবুর ছবি, অপর প্রান্তে এক নগ্ন(Naked) মহিলার ছবি।

সাইবারক্রাইম শাখায় এরকম অভিযোগ এর আগেও বহুবার হয়েছে। রাজ্যের নানান প্রান্ত থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে যে, এই ধরনের ছবি দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা চাওয়া হচ্ছে। তিনি টাকা দিতে রাজি না হলে নির্দিষ্ট ছবি বা ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
সামাজিক বদনামের ভয়ে অনেকে টাকা দিতে রাজি হন। এ ক্ষেত্রে ভয় না পেয়ে গোপাল সোজা পুলিশে অভিযোগ জানান। প্রথমে চন্দননগর থানায় যান। সেখান থেকে চুঁচুড়ায় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম থানায় সোমবার রাতে অভিযোগ দায়ের করেন। 

সাইবার ক্রাইম শাখায় গিয়ে এই যুব নেতা জানান, অচেনা নম্বর থেকে একটি ভিডিও কল আসে। সেটি ধরতেই পায়েল রেড্ডি নামে এক জনের অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালকে ব্ল্যাকমেলের হুমকি দেওয়া হয়।
সাইবার অপরাধের বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকায় তিনি টাকা দেননি। সংবাদ মাধ্যমে গোপাল বলেন, ‘‘তড়িঘড়ি ঘটনাটি ফেসবুকে জানিয়ে বন্ধুদের সতর্ক করি। সাইবার থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’’
নিজের ফেসবুক পেজে গোপাল শুক্লা লিখেছেন, “সতর্ক থাকুন , ভয় পাবেন না , কোন অপরাধের কাছে মাথা নত নয় ,আপসহীন লড়াই চালাতে হবে ,এদের শেষ দেখে ছাড়তে হবে ।
সকলে যে ভাবে পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করছেন তার জন্য ধন্যবাদ ।”

সাইবার ক্রাইম শাখা থেকে প্রতিনিয়ত সতর্ক করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ব্যাঙ্কে প্রতারণা, এটিএম ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে প্রতারণা, মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে প্রতারণা, পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে প্রতারণা এবং ‘সেক্সটরশন’-এর মতো বিষয়ের শিকার যাতে না হন সাধারণ মানুষ, তার জন্য সচেতন করা হচ্ছে।
তবে, সামনেই আসানসোল ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচন। তার আগেই এই ঘটনায় কিঞ্চিৎ বিব্রত আলিমুদ্দিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *