আজ খবর ডেস্ক- বাঁচতে অপারগ হলে কি মৃত্যুই শ্রেয়? পৃথিবী জুড়ে এই প্রশ্ন বহুদিনের। “স্বেচ্ছামৃত্যু”কে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে উত্তর এখনও অধরা!
যিনি মৃত্যু চাইছেন অথচ নিজের হাতে নিজের প্রাণ নিতে পারছেন না, তাঁর কী হবে? কেউ যদি সাহায্য করেন সে ক্ষেত্রে মৃত্যুর পরবর্তী কালে তিনি কি শাস্তির আওতায় পড়বেন? যিনি মারা গেলে তাঁর পরিবারেরই বা কি হবে।
এমন নানা প্রশ্নের মধ্যেই সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানালেন মালদহ জেলার এক ব্যক্তি।
জেনা সূত্রে খবর, এই মানুষটি বহুদিন ধরেই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
এক সময় ইমরান আলি মাঠে দাপিয়ে বেড়াতেন। আর এখন শয্যাশায়ী । ইমরান রতুয়া দুই নম্বর ব্লকের আড়াইডাঙার পীরপুর এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি । এলাকার মানুষ বিপদে পড়লে তাঁদের পাশে দাঁড়াতেন ইমরান । আজ তাঁর নিজেরই সাহায্যের প্রয়োজন।
কার্যত চলৎশক্তিীন। কোনরকমে জল টুকু গড়িয়ে খেতে পারেন মাত্র। আজ তাঁর পাশে এসে দাড়ানোর মত কেউ নেই । আর্থিক সামর্থ নেই চিকিৎসা করানোর মত। এদিকে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড থাকলেও মিলছে না কোনও পরিষেবা ।
কে এই ইমরান?
জানা গেছে , ২০১২ সালে তিনি ফুটবল খেলতে গিয়ে কোমরে চোট পান। সেই থেকেই চলার ক্ষমতা হারিয়েছেন । সম্প্রতি তাকে করোনা(Corona) হওয়ার পর থেকে শারীরিকভাবে আরও কাহিল তিনি।
চিকিৎসার খরচ চালাতে চালাতে এখন প্রায় কপর্দকহীন। একসময় মালদহের রতুয়ায় তৃণমূলের বুথ সভাপতি ছিলেন।
সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর অভিযোগ, বাঁচার আকুতি জানিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসন, এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু একটি হুইল চেয়ার ছাড়া আর কিছুই জোটেনি ।
তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের রেশনকার্ড আছে। কিন্তু তাতে কিছু পাওয়া যায় না। ওষুধ কেনার মত পয়সা নেই। এই ভাবে বেঁচে থাকা যায় না।’’
ইমরান জানিয়েছেন চিকিৎসকদের মত , তাঁর কোমরের আঘাতের জেরে পায়ের মাংসপেশি শুকিয়ে গিয়েছে। তাই হাঁটাচলার ক্ষমতাও হারিয়েছেন। বিছানা এবং হুইল চেয়ার তাঁর সব সময়ের সঙ্গী ।
অভিযোগ , প্রথমে এ ব্যাপারে তিনি ‘দুয়ারে সরকার’(Duare Sarkar) শিবিরে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও সুরাহা মেলেনি । এর পর এ বিষয়ে নবান্নেও জানান। লাভ হয় নি কিছু।
তাই এ বার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন ইমরান আলি।
যদিও, ইমরানের সম্পর্কে জানার পর চাঁচোলের মহকুমাশাসক কল্লোল রায় একাধিক সংবাদ মাধ্যমে জানান, ‘বিষয়টি স্থানীয় বিডিওকে(BDO) খোঁজ করতে বলা হয়েছে। ওই ব্যক্তি যাতে তাঁর প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা পান তার ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।