আজ খবর ডেস্ক- শহরের রাস্তা হোক কিংবা ট্রেনের কামরা। একটি উৎপাত সাধারণত পোহাতেই হয় যাত্রীদের। তা হল, রূপান্তরকামীদের টাকা চাওয়া। আর অবশ্যই সেইটা কান্না পেলে অনাহুত ভাবে কটু মন্তব্য অথবা গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা।
যেমন শহর কলকাতার প্রায় প্রত্যেকটি ট্রাফিক সিগনালে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় যাত্রীদের। দরজা বন্ধ বাতানুকূল বাস হলে কোন ভাবে এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচা যায়।
কিন্তু হলুদ ট্যাক্সি অথবা এই সময়ে অ্যাপ ক্যাব, এসি না চলার কারণে যেখানে জানলা খুলে রাখতে বাধ্য হন যাত্রীরা! সেখানে কোনওভাবেই এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় না।

এবার ঘটনা ঘটল শিয়ালদহ লাইনের লোকাল ট্রেনে, সোমবার একটু রাতের দিকে। জিআরপি(GRP) সূত্রে খবর, বালিগঞ্জ এলাকার একই পরিবারের ৪ সদস্য লক্ষীকান্তপুর থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন। সুভাষগ্রাম এবং সোনারপুর স্টেশনের মাঝামাঝি একদল “বৃহন্নলা” (Trangender) ওঠেন ট্রেনের কামরায় এবং যথারীতি নাচ গান চলতে থাকে।
এর পরে তাঁরা ওই কামরার যাত্রীদের কাছে টাকা চাইতে শুরু করেন।
জানা গিয়েছে সেই সময় বালিগঞ্জের ওই পরিবারের এক সদস্য সুজন হালদার কিছু টাকা তাদের হাতে দেন। কিন্তু টাকার পরিমান কম হওয়ায় ওই ব্যক্তির দিকে তেড়ে যান “বৃহন্নলা”রা। ভাইকে আক্রান্ত হতে দেখে সুজন বাবুর দিদি এগিয়ে আসেন। ওই পরিবারের অভিযোগ তখন দু’জনকেই বেধড়ক পেটাতে শুরু করে “বৃহন্নলা”র দল।

এই পরিবারের অভিযোগ, ট্রেনের কামরায় অন্যান্য যাত্রী থাকলেও কেউ এগিয়ে এসে তাদের বাঁচাতে চেষ্টা করেননি। একটু সামলে নিয়ে নিজেরাই সোনারপুর জিআরপি তে অভিযোগ জানাতে যায় ওই পরিবার। রেল পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
নিত্যযাত্রীদের একটা অংশ বলছেন, লোকাল ট্রেনের কামরা হোক অথবা পাবলিক বাস। টাকা চাওয়া এবং টাকা দিতে রাজি না হলে কটু মন্তব্য দিয়ে আসা, কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। শুরু কলকাতা কেন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এরকম ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালেও মেলেনা কোন সুরাহা। এমনকি দূরপাল্লার ট্রেনে সংরক্ষণ করা আসনে ও এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় যাত্রীদের। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের ট্রান্স জেন্ডার বোর্ডের(TGB) প্রাক্তন সদস্য রঞ্জিতা সিনহা (Ranjita Sinha) aajkhobor.com কে জানালেন, ” যা ঘটেছে তার নিন্দা করছি। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রূপান্তরকামীদের জন্য বোর্ড তৈরি হলেও তেমন ভাবে এদের স্বনির্ভর করার চেষ্টা হচ্ছে না। ফলে “হিজড়ে” প্রথা চলছেই। এরকম চলতে থাকলে এই মানুষরা কখনোই সমাজের মূল ধারার সঙ্গে মিশতে পারবেন না”।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *