আজ খবর ডেস্ক- কন্ডোম গলির নাম শুনেছেন? যদি না শুনে থাকেন তাহলে জেনে নিন। চাঁদনী চকে পুরসভার উল্টোদিকের গলি কন্ডোম গলি হিসেবেই পরিচিত। সেই গলিতে পাওয়া যায় হরেক রকমের কন্ডোম। তবে কন্ডোমের পাশাপাশি সেখানে রয়েছে আজব নামের বিভিন্ন যৌন বলবর্ধক ট্যাবলেট, ক্যাপসুল এবং তেল।
তবে প্রশ্নটা হল ‘কাজ হবে তো’? উত্তরে জনৈক দোকানির জবাব, ‘আপনি একঘণ্টা আগে খাবেন, যদি কাজ না হয়, পয়সা ফেরত’। শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরের এই কথোপকথন আমাদের বেশ চেনা । সবজি- ফল-ফলাদির সঙ্গে দেদার বিক্রি হচ্ছে বসিরহাটের ‘ভায়াগ্রা’। আবার প্রস্তুতকারকের ঠিকানাও রয়েছে প্যাকেটের পেছনে। এরই পাশাপাশি, রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে যৌন উত্তেজনা বর্ধক তেল, বড়ি, ক্যাপসুল।
ওষুধের কম্পোজিশনের সঙ্গেই প্যাকেটের পিছনে রয়েছে রেজিস্ট্রেশন নম্বরও। আর যদি ক্রেতা জানতে চায় যে সেগুলি বৈধ কি না, তার পরিপ্রেক্ষিতে বিক্রেতার উত্তর, ‘আপনার লাগবে? যদি না লাগে তাহলে যেতে পারেন’!
দমদম স্টেশন চত্বরের এক তরুণ বিক্রেতার কথায়, ‘ মহামারীর পর থেকে এসবের চাহিদা বেশ বেড়েছে। কয়েকজন আবার ফোন করেও খোঁজখবর নেন। তবে ছেলেদের জন্য অনেক অপশন থাকলেও মেয়েদের ক্ষেত্রে তা কম।’
ইঁদুর মারার বিষ এবং গায়ে ব্যথার ওষুধের সঙ্গে বিক্রি হয় এসব যৌন বলবর্ধক ওষুধ। বিক্রেতা তার ব্যাগটা একটু খানি খুলে দেখালেন সেই সব ওষুধের সম্ভার। বেশ রমরমিয়ে চলছে বিক্রি। ‘কাজ হবেই, গ্যারান্টি!’ দাবি বিক্রেতার।
প্রসঙ্গত, প্রকৃত ভায়াগ্রা (Viagra) তৈরি করে আমেরিকার ফাইজার (Pfizer) ওষুধ কোম্পানি। এই ওষুধে থাকে ‘সিলডেনাফিল সাইট্রেট’, যার অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। কিন্তু শহরের বিভিন্ন প্রজন্মের পুরুষ ওইসব ওষুধের নামে যে কী কিনছে, তা না জেনেই নির্দ্বিধায় কিনতে মরিয়া হয়ে ছুটছে।
‘অল ইন্ডিয়া অরগ্যানাইজেশন অব কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস’-এর (AIOCD) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যৌন বলবর্ধক ওষুধের বিক্রি ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এসবের চাহিদা আরও বেড়েছে করোনাকাল থেকে।
ডাক্তারদের মতে, এই সব ওষুধ শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় মাত্র, যা অনেকের পক্ষে ক্ষতিকারক। কিছু ক্ষেত্রে, এই ভুয়ো ওষুধগুলি আসক্তি এবং অকারণ নির্ভরতা তৈরি করে স্বাভাবিক যৌনজীবন ব্যাহত করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অবিলম্বে এইসব ভুয়ো ওষুধ বিক্রি বন্ধের জন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ জরুরী।