আজ খবর ডেস্ক: ইলিশ বনাম চিংড়ি ঘিরে এই বাংলায় উত্তাল তর্ক চিরকালীন। তবে, দুই বাংলা মিলিয়ে সংখ্যা গরিষ্ঠ অবশ্যই ইলিশ প্রেমীরা।
যতই হোক, সে হল জলের রূপোলী শস্য। বিশেষত, পদ্মার (Padma River) ইলিশ!
চকচকে গা বেয়ে যেন তেল চুঁইয়ে পড়ে।
স্বভাবে সুখী এই মাছ এখন নাকি ছেয়ে ফেলেছে বাংলাদেশের (Bangladesh) বাজার। পশ্চিমবঙ্গের মত, ওপার বাংলাতেও প্রায় ২ মাস জল থেকে ইলিশ তোলা বন্ধ থাকে আইন মেনে। যাতে ছোট ইলিশ বাঁচানো যায়।
সবে মাত্র গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে ইলিশ ধরার কাজ। পদ্মা-মেঘনার বুক চিরে একের পর এক ট্রলার (Trawler) বেড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) ও নাকি এসে পৌঁছেছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ।
কিন্তু এই খুশির খবরেও স্বস্তি নেই। কারণ, ঈদের ঠিক আগে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আসছে “ইলিশ প্রতারণা”র খবর।
তার আগে একবার দেখে নেওয়া যাক,বাংলাদেশের ইলিশ চিত্র।
ঢাকার (Dhaka) একাধিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে,
কক্সবাজার (Coxbazar) বাঁকখালী নদীর মোহনায় চলছে মহা-ব্যস্ততা। নদীর মাঝে নোঙর করা ট্রলার থেকে ছোট নৌকায় নামানো হচ্ছে ইলিশ।
দিন কয়েক আগেও নাকি ইলিশের আকার অনুযায়ী দাম ছিল ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা। ঈদের আগে ইলিশ প্রতি দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।
অতিরিক্ত দাম পাওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও।
তবে একই দেশের অন্য প্রান্তের ছবি কিন্তু বেশ আলাদা। অনেক জায়গাতেই দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে।
যেমন, চাঁদপুরের(Chandpur district) বাজারে নাকি এক কেজি ইলিশ কিনতে হচ্ছে দেড় হাজারেরও বেশি টাকায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ মে থেকে পদ্মা-মেঘনা নদীতে শুরু হয়েছে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা। তবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ছে না জেলেদের জালে।
বাংলাদেশে ইলিশের সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে পরিচিত চাঁদপুর বড় স্টেশন। কিন্তু চাঁদপুরের নদীতে ইলিশ এখনও পাওয়া যাচ্ছে না।
৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা এবং এক কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ১৫০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মার্কিন মুলুকে (USA) ইলিশ প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন প্রবাসী বাঙালিরা। সারাবছর পদ্মার ইলিশ খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন সেখানকার বাঙালি। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বাংলাদেশি গ্রসারিগুলোতেই ইলিশের নামে একই আদলের মাছ ‘সার্ডিন’ (Sardine) বিক্রি করা হচ্ছে। ইলিশের নামে ক্রেতাদের কাছ থেকে বেশি দাম নিয়ে একটি অসাধু চক্র ভিন্ন প্রজাতির মাছ বিক্রি করছে।
নিউইয়র্কের (New York) বাজার থেকে ইলিশ মাছ কিনে নিয়ে রান্না করার পরও মিলছে না ইলিশের সেই চেনা গন্ধ বা স্বাদ। এই মাছগুলো দেখতে ইলিশের মত হলেও এগুলোতে খুব বেশি কাটা। আর ভাজলে তাতে ইলিশের মত তেলও বের হয় না।
নিউইয়র্কের ৫টি এলাকা ব্রঙ্কস, কুইন্স, জামাইকা, ম্যানহাটন (Manhattan) ও ব্রুকলিনের (Brooklyn) অধিকাংশ গ্রোসারি থেকে ইলিশ মাছ কিনে নিয়মিত প্রতারিত হচ্ছেন প্রবাসী ক্রেতারা। এসব এলাকার অসাধু ব্যবসায়ীরা ইলিশের দামে দেদার বিক্রি করেছে সার্ডিন মাছ।
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের জনবহুল ও বাঙালি অধুষ্যিত নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, ম্যাসাচুসেটস, কানেকটিকাট, পেনসিলভানিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি, ভার্জিনিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, ওহাইও, ইলিনয়স, কলারাডো, ডেলাওয়ার, জর্জিয়া, কানসাস, ম্যারিল্যান্ড, মিশিগান, সাউথ ক্যারোলিনা, ওয়াশিংটন ডিসি ও কেন্টাকির দোকানে নকল ইলিশ বিক্রির প্রতারক চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।